কক্সবাজারে পরিবেশবান্ধব গ্যাস সরবরাহের উদ্যোগ জাতিসংঘের
১৬ ফেব্রুয়ারি ২০২০ ১৮:৪৫
ঢাকা: কক্সবাজারে বৃক্ষনিধন প্রতিরোধ ও জীবিকার সুযোগ বাড়াতে সরকারের সঙ্গে জাতিসংঘের তিনটি সংস্থার যৌথ উদ্যোগে যাত্রা শুরু হয়েছে ‘সেইফ একসেস্ টু ফুয়েল অ্যান্ড এনার্জি প্লাস লাইভলিহুডস্’ (সেইফ প্লাস) প্রকল্প। তরল পেট্রোলিয়াম গ্যাস (এলপিজি) ও স্টোভ বিতরণ, পুনঃবনায়ন এবং লাইভলিহুডস্ কার্যক্রমের মাধ্যমে বেশি খাদ্য উৎপাদনের মাধ্যমে পরিবেশ বিপর্যয় রোধ করা এই প্রকল্পের উদ্দেশ্য।
‘সেইফ প্লাস’ জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থা (এফএও), আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থা (আইওএম) ও বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচির (ডব্লিউএফপি) যৌথ উদ্যোগে এই প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়েছে। রোববার (১৬ ফেব্রুয়ারি) ঢাকায় এ সংক্রান্ত এক চুক্তি সই হয়েছে। গণমাধ্যমে পাঠানো এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
প্রকল্প সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, এলপিজি স্টোভ ও গ্যাস বিতরণের ফলে মানুষের জ্বালানি কাঠের প্রয়োজনীয়তা কমে আসবে। ফলে, জ্বালানি কাঠ ব্যবহারের মাধ্যমে সৃষ্ট পরিবেশের ক্ষতি রোধ করা যাবে। এই পুনঃবনায়ন কার্যক্রম বনসম্পদ পুনরুদ্ধার এবং সেইসাথে প্রাকৃতিক সম্পদ রক্ষায় কাজ করবে।
লাইভলিহুড ও সেল্ফ রিলায়েন্স কার্যক্রমের মাধ্যমে কক্সবাজারের স্থানীয় জনগোষ্ঠীর খাদ্য উৎপাদন ও ব্যবসার সুযোগ বৃদ্ধি করা হয়, যার মাধ্যমে তারা আর্থিকভাবে লাভবান হতে পারে। বিভিন্ন খাতে সহযোগিতা বৃদ্ধির জন্য সরকারি সংস্থাগুলোর সঙ্গে অংশীদারিত্বের মাধ্যমে তিন বছর মেয়াদী এই প্রকল্পটির রূপরেখা তৈরি করা হয়।
এর আগে, মানবিক প্রকল্পের মাধ্যমে এই কার্যক্রমগুলো সম্পন্ন করা হতো। এই চুক্তি সই অনুষ্ঠানের মাধ্যমে সেইফ প্লাস প্রকল্পটি এখন একটি উন্নয়নমূলক কার্যক্রমে রূপ নিলো, যার মাধ্যমে বাংলাদেশের সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ এই অঞ্চলের মানুষের জীবন ও জীবিকার উন্নয়ন সাধন করা হবে।
দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব শাহ্ কামাল বলেন, ‘কক্সবাজারের পরিবেশবিষয়ক ব্যাপারগুলো চিহ্নিত করতে ও এ নিয়ে কাজ করতে জাতিসংঘকে সঙ্গে পেয়ে আমরা অত্যন্ত খুশি। আমরা উন্নয়ন সহযোগীদের এ ব্যাপারে আরও সহযোগিতা করার ব্যাপারে গুরুত্বারোপ করছি।’
অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের অতিরিক্ত সচিব এবং জাতিসংঘ উইংয়ের প্রধান জাতিসংঘের তিন সংস্থাকে রোহিঙ্গা ও স্থানীয় জনগোষ্ঠিকে সহযোগিতায় এগিয়ে আসার জন্য ধন্যবাদ জানান। বলেন, ‘আমাদের নিজেদের অনেক সমস্যা থাকা সত্ত্বেও বাংলাদেশ সরকার ও এদেশের জনগণ যে উদারতার পরিচয় দিয়েছে তা দৃষ্টান্তমূলক। এখন এটি আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের দায়িত্ব বাংলাদেশ যেন এ বোঝা একাই বহন না করে এবং মিয়ানমারে রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবর্তনের মধ্যদিয়ে এই সংকটের টেকসই সমাধান আসে।’
এসময় অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন- অতিরিক্ত শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার মোহাম্মদ মিজানুর রহমান, জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থা-এফএও বাংলাদেশ-এর প্রতিনিধি রবার্ট সিম্পসন, আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থা-আইওএম বাংলাদেশ-এর চিফ অফ মিশন গিয়োর্গি গিগাওরি বলেন, বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচি-ডব্লিউএফপি বাংলাদেশ এর কান্ট্রি রিপ্রেজেন্টেটিভ মি. রিচার্ড রেগান।
বছরজুড়ে ‘সেইফ প্লাসে’র মাধ্যমে কক্সবাজারের স্থানীয় জনগোষ্ঠীর পরিবারগুলোকে লাইভলিহুডস্ কার্যক্রমের সঙ্গে যুক্ত করা হবে। কৃষকদের অধিক চাহিদাসম্পন্ন সবজিগুলোর উৎপাদন বৃদ্ধি করার জন্য কারিগরি সহায়তা দেওয়া হবে এবং এর পাশাপাশি চলতে থাকবে পুনঃবনায়ন কার্যক্রম।