উত্যক্তকরণ আইন লিঙ্গনিরপেক্ষ করার দাবি ঢাবি শিক্ষার্থীদের
১৭ ফেব্রুয়ারি ২০২০ ২২:১৬
ঢাবি: উত্যক্তকরণ আইন (দণ্ডবিধি ৫০৯ ধারা) লিঙ্গনিরপেক্ষ নয় দাবি করে সেটি সংস্কারের দাবি জানিয়েছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা।
সোমবার (১৭ ফেব্রুয়ারি) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সন্ত্রাসবিরোধী রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে এক মানবন্ধন থেকে এ দাবি জানানো হয়। মানববন্ধনে সভাপতিত্ব করেন চাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা ও গবেষণা বিজ্ঞানের শিক্ষার্থী মাহিন মুর্তজা অনিক।
মাহিন মুর্তজা অনিক বলেন, ‘গত ৬ ফেব্রুয়ারি জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ে কম্পিউটার অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের এক ছাত্রকে এবং নাট্যকলা বিভাগের ছাত্রীকে উত্যক্ত করেছে উক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থীরা। এ জন্য বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ তোয়াবা নুসরাত মিম (সমাজবিজ্ঞান বিভাগ), সায়েরা তাসনিম আনিকা (সমাজবিজ্ঞান বিভাগ) ও মৌমিতা পারভিনকে (চারুকলা বিভাগ) সাময়িক বহিষ্কার করেছে।’
তিনি বলেন, ‘উত্যক্তের ফলে অসুস্থ হয়ে ছাত্রটি বর্তমানে ময়মনসিংহের একটি মানসিক হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। অথচ কোনো নারী দ্বারা পুরুষ উত্যক্তকরণের শিকার হলে রাষ্ট্রীয় আইনে তাদের বিচার চাওয়ার সুযোগ নেই। সুতরাং উত্যক্তকরণ আইন (দণ্ডবিধি ৫০৯ ধারা) লিঙ্গ নিরপেক্ষ নয়।’
এ সময় মানববন্ধন থেকে সরকারের কাছে তিন দফা দাবি উপস্থাপন করা হয়। দাবিগুলো হলো- উত্যক্তকারী ছাত্রীদের শুধু বহিষ্কার নয়, রাষ্ট্রীয় আইনে বিচারের ব্যবস্থা করা, লিঙ্গবৈষম্য দূরীকরণে উত্যক্তকরণ আইন (দণ্ডবিধি ৫০৯ ধারা) সংস্কার করে লিঙ্গনিরপেক্ষ করা, সংবিধানের ২৭ নং অনুচ্ছেদের বাস্তবায়ন তথা নারী-পুরুষ নির্বিশেষে সকলকেই সমান আশ্রয় লাভের অধিকার নিশ্চিত করা।
সভায় সংহতি জানিয়ে বক্তব্য দেন মানবাধিকার সংগঠন এইজ ফর মেন ফাউন্ডেশনের সাধারণ সম্পাদক সাইফুল ইসলাম নাদিম।
তিনি বলেন, ‘আমরা দেখছি সাম্প্রতিক সময়ে বিভিন্ন কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ে উত্যক্তকরণের ঘটনা বেড়েই চলেছে। কিন্তু এ সম্পর্কিত আইনটি লিঙ্গনিরপেক্ষ নয়। ফলে নারী কর্তৃক পুরুষ উত্যক্তকরণের ঘটনাগুলোকে গুরুত্বহীন হিসেবে বিবেচনা করায় পুরুষরা সামাজিক ও আইনি কোনো প্রতিকার পায় না। যা পুরুষের প্রতি এক ধরনের লিঙ্গবৈষম্য। তাই সামাজিক দৃষ্টিভঙ্গি ও আইন সংস্কার এখন সময়ের দাবি।’