যৌন হয়রানি প্রতিরোধে প্রয়োজন পৃথক আইনের তাগিদ
১৮ ফেব্রুয়ারি ২০২০ ২৩:৪৪
ঢাকা: কর্মক্ষেত্রে নারীর প্রতি সহিংসতা প্রতিরোধে আরও বেশি প্রচার-প্রচারণা চালাতে হবে। সোচ্চার হতে হবে নারীদের। ঐক্যবদ্ধভাবে প্রতিরোধ করতে হবে সহিংসতা। প্রয়োজনে যৌন হয়রানি প্রতিরোধে পৃথক আইন প্রণয়ন করতে হবে।
মঙ্গলবার (১৮ ফেব্রুয়ারি) রাজধানীর জাতীয় প্রেস ক্লাবে ‘কর্মক্ষেত্রে সব ধরনের সহিংসতা ও যৌন হয়রানি বন্ধে হাইকোর্ট নির্দেশনা-২০০৯ বাস্তবায়ন এবং আইএলও কনভেনশন ১৯০ এর ভূমিকা’ শীর্ষক সেমিনারে বক্তারা এসব কথা বলেন। কর্মজীবী নারী ও মানুষের জন্য ফাউন্ডেশন যৌথভাবে এই সেমিনারের আয়োজন করে।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (জাসদ) সাধারণ সম্পাদক ও সংসদ সদস্য শিরীন আক্তার বলেন, যৌন হয়রানি প্রতিরোধে প্রচারাভিযান পরিচালনা সবচেয়ে বেশি জরুরি। এর মাধ্যমে একটি বার্তা মানুষের মাঝে পৌঁছে দিতে হবে।
তিনি বলেন, সব ক্ষেত্রে পুরুষতান্ত্রিকতা দেখা যায়। পুরুষতান্ত্রিকতা মানে অগণতান্ত্রিকতা, যা ইচ্ছা তা করতে পারার মানসিকতা। পুরুষ বলে যা ইচ্ছা তা করতে পারব, এমন মানসিকতা। একক চিন্তা। অন্যের প্রতি অবজ্ঞা করা, অন্যের মতকে অগ্রাহ্য করা। এই অবস্থা যতক্ষণ পর্যন্ত না ভাঙতে পারা যাবে, ততক্ষণ নারীর প্রতি হয়রানি-নির্যাতন চলতে থাকবে। এজন্য নারীদের সোচ্চার হতে হবে। সকল পেশা-শ্রেণির নারীকে ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনে নামতে হবে। পাশাপাশি পুরুষদেরকেও সচেতন করতে হবে।
মানুষের জন্য ফাউন্ডেশনের জেন্ডার অ্যাডভাইজার বনশ্রী মিত্র নিয়োগী বলেন, নারী নির্যাতন ও হয়রানি বন্ধে সবার আগে ব্যক্তি আমির পরিবর্তন দরকার। সেই পরিবর্তনটা হলে এ সংক্রান্ত সমস্যার কার্যকর সমাধান সম্ভব। এ জন্য প্রধান দায়িত্বটা সরকারকে নিতে হবে।
মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করতে গিয়ে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের নৃবিজ্ঞানের সহযোগী অধ্যাপক সায়েমা খাতুন বলেন, যৌন হয়রানির বিরুদ্ধে বিভিন্ন আইন ও বিধানে বিচারের সুযোগ থাকলেও এ বিষয়ে একটি পূর্ণাঙ্গ আইন থাকা দরকার। আলাদা আইন থাকলে ভুক্তভোগী নারী তার সঙ্গে ঘটে যাওয়া যৌন হয়রানি সম্পর্কে অভিযোগ জানাতে সাহস পাবে। তখন ন্যায় বিচারের পথ আরও সুগম হবে।
কর্মজীবী নারী সংগঠনের সভাপতি প্রতিমা পাল মজুমদারের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের উপসচিব দিল আফরোজা বেগম, ওয়্যার ফাউন্ডেশনের লিড ট্রেইনার ও লিগ্যাল কনসালট্যান্ট নাহিদা আনজুম কনা, জাতীয় গার্মেন্ট শ্রমিক কর্মচারী লীগের সভাপতি সিরাজুল ইসলাম রনিসহ আরও অনেকে।