Monday 30 September 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

ইন্টারনেট ব্যবহার, দাড়ি রাখা, বোরকা পড়া উইঘুরদের জন্য বড় অপরাধ


১৯ ফেব্রুয়ারি ২০২০ ০৬:০৯

উইঘুরদের ওপর চীন সরকারের নির্যাতন নতুন ঘটনা নয়। গেল বছর চীনের সংখ্যালঘু উইঘুরদের ওপর চালানো নির্যাতনের একটি নথি ফাঁস হওয়ায় বেশ দোলচাল পরে গিয়েছিল আন্তর্জাতিক অঙ্গনে। সম্প্রতি এমনই আরও একটি নথি ফাঁস করা হয়েছে যা কিনা হাতে পরেছে বিবিসি, এপি’র মতো বেশ কিছু স্বনামধন্য গণমাধ্যমের।

চাঞ্চল্যকর সেই নথিতে প্রকাশিত হয়েছে কিভাবে চীন সরকার শিনজিয়াং প্রদেশের উইঘুর সম্প্রদায়ের প্রায় তিন হাজার সদস্যের দৈনন্দিন জীবনের যাবতীয় খুঁটিনাটি তথ্য সংরক্ষণ করে থাকে। সেই সাথে উঠে এসেছে কি কি অপরাধের কারণে তাদের বন্দিশালায় আটকে রাখা হয় তাদের সেই চিত্রও।

বিজ্ঞাপন

‘কারাকাস লিস্ট’ নামক ১৩৭ পৃষ্ঠার দলিলটিতে দেখা গেছে, প্রত্যেক পৃষ্ঠায় কলাম ও সারি করে উইঘুরদের তথ্য লিপিবদ্ধ করা। এসব তথ্যের মধ্যে রয়েছে- কে কয় ওয়াক্ত নামাজ পড়ে, কেমন ধরনের পোশাক পরে,  কাদের সঙ্গে মেলামেশা করে, ইন্টারনেটে কোন ধরনের বিষয়বস্তু দেখে, পরিবারের সদস্যদের আচার-আচরণ কেমন ইত্যাদি।

নতুন দলিলে উইঘুর সম্প্রদায়ের ৩০০ এর বেশি সদস্যের যাবতীয় তথ্য লিপিবদ্ধ করা হয়েছে। তাদের অতীত কর্মকাণ্ড, ধর্মীয় আচার-আচরণ এবং প্রতিবেশী, বন্ধু ও স্বজনদের সঙ্গে সম্পর্ক এসব তথ্য লিপিবদ্ধ রয়েছে সেখানে। আর এদের প্রত্যেকেই কারাকাস কাউন্টি অঞ্চলের বাসিন্দা।

প্রতি কলামের একেবারে শেষ সারিতে গিয়ে এই ৩০০ জনের বিষয়ে নানা ধরনের সুপারিশ করা হয়েছে। সুপারিশগুলো এরকম- বন্দিশালায় বন্দী ব্যক্তিকে আরো আটকে রাখতে হবে না ছেড়ে দেওয়া যাবে, নাকি ছেড়ে দেওয়া কাউকে আবার বন্দিশালায় আনতে হবে।

জিনজিয়াংয়ে অনেক বন্দিশালা রয়েছে যেগুলোকে চীন সরকার এতদিন দাবি করে আসছিল এক ধরনের স্কুল হিসেবে। কিন্তু নতুন দলিল ফাঁস হওয়ার তাদের সেই দাবি অনেকটাই ভিত্তিহীন হয়ে পড়েছে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।

বিজ্ঞাপন

সদ্য প্রকাশিত এই দলিল দেখানো হয়েছে কিভাবে বিনা কারণে বন্দী করে রাখা হয় উইঘুরদের। দলিলটির ৫৯৮ নম্বর সারি হেলচেম (৩৮) নামের এক নারীকে নিয়ে লেখা। দলিলে সেই নারীকে আটকে রাখার কারণ হিসেবে লেখা হয়েছে ‘তিনি কয়েক বছর আগে বোরকা পরতেন বলে তাঁকে বন্দী করা হয়েছে।’

এখানেই শেষ নয়। অনেক বন্দীর ক্ষেত্রে আবার কারণ হিসেবে বলা হয়েছে যে তারা দেশের বাইরে যেতে ভিসার আবেদন করেছিল। ভিসার আবেদন করায় তাদের বন্দিশালায় পাঠানো হয়। এমনকি দাড়ি রাখার অপরাধেও কোনো কোনো মানুষকে কাটাতে হচ্ছে বন্দিশালার জীবন।

কারণ ছাড়াও আটকে রাখার উদাহরণ মিলেছে নতুন এই দলিলে। দলিলটির ২৩৯ নম্বর সারিতে নুরমেমেত নামের এক যুবক সম্পর্কে বলা হয়েছে, ইন্টারনেট ব্যবহারের সময় ভুল করে একটি বিদেশি ওয়েবসাইটে ঢুকে পড়েছিলেন নুরমেমেত। আর এই কারণে তাঁকে বন্দিশালায় বন্দী করে রাখা হয়। এ ছাড়া তাঁর আচরণে সন্দেহজনক কিছু নেই বলে দলিলে উল্লেখ করা হয়েছে।

নতুন দলিল সম্পর্কে বক্তব্য নিতে জিনজিয়াংয়ের আঞ্চলিক সরকারকে ফ্যাক্সের মাধ্যমে বার্তা পাঠিয়েছিল আলজাজিরা। কিন্তু কোনো সাড়া মেলেনি তাদের পক্ষ থেকে।

উইঘুর সম্প্রদায় গোপন নথি ফাঁস টপ নিউজ

বিজ্ঞাপন
সর্বশেষ
সম্পর্কিত খবর