মামলা নিষ্পত্তিতে নজির দেখালো কুড়িগ্রাম বিচারিক হাকিম আদালত
১৯ ফেব্রুয়ারি ২০২০ ০৮:১৬
কুড়িগ্রাম: মামলা নিষ্পত্তিতে নজির দেখালো কুড়িগ্রামের মুখ্য বিচারিক হাকিম বা চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেসি আদালত। এর অধীনস্ত সব আদালতে মামলা নিষ্পত্তির হার বেড়েছে। ২০১৯ সালে মামলা নিষ্পত্তির হার ২০১৮ সালের তুলনায় প্রায় দ্বিগুন। অন্যদিকে, ২০১৭ সালের মামলা নিষ্পত্তির হারের তুলনায় আড়াই গুনেরও বেশি। মামলা নিষ্পত্তিতে এমন অগ্রগতি হওয়ায় সাধারণ মানুষ এবং আইনজীবীদের মধ্যে নতুন করে আশা তৈরি হয়েছে।
২০১৯ সালে মোট ১১ হাজার ৩৮২ টি মামলা নিষ্পত্তি হয়। বিচারিক আদালতে দুই দফা ২ হাজার ৭৯৭টি মামলা নিস্পত্তিসহ মোট ৫ হাজার ৭৮৭টি মামলা নিষ্পত্তি হয়। যা মোট মামলার ১৪৯ দশমিক ৭৩ শতাংশ। এসব মামলায় ৮৪৬৭ জন সাক্ষীর সাক্ষ্য নেওয়া হয়। বিচারিক আদালতে বর্তমানে ৩ হাজার ৫২২টি মামলা বিচারাধীন রয়েছে।
২০১৯ সালের কুড়িগ্রামের আদালগুলোয় সর্বমোট ১১ হাজার ৩৮২টি মামলা নিষ্পত্তি হয়। যার মধ্যে সি আর বা পিটিশন মামলা ৩ হাজার ৩৭৯টি, জি.আর মামলা ৬ হাজার ৭২৪টি, নন.জি.আর মামলা ২ হাজার ৫৩টি, মিস কেস- ৪৬৫ টি, ক্রিমিনাল আপীল ৩৩টি ও এস.এল ২৩৮ টি।
সূত্র জানায়, ২০১৯ সালের ৩১ ডিসেম্বর আদালতে বিচারাধীন মামলার সংখ্যা ৮ হাজার ২৯৬টি। যার মধ্যে সি.আর মামলা ২ হাজার ৭০৫টি, জি.আর- মামলা ৫ হাজার ৭৭ টি, নন.জি.আর মামলা ৩১৫ টি, মিস কেস- ০৭ টি, ক্রিমিনাল আপীল ১৭ টি, এস.এল ৬৫ টি।
২০১৯ সালের ১ জানুয়ারি থেকে ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত আদালতে মোট ৫ হাজার ৬৪৮টি মামলা দায়ের হয়। যার মধ্যে সি.আর/পিটিশন মামলা ২ হাজার ৮৮টি, জি.আর মামলা ২ হাজার ৬৮৪টি, ননজিআর মামলা ১৪১ টি, মিস কেস ৪৬৬টি, ক্রিমিনাল আপীল ৪৯ টি, এস এল ২২০টি।
জেলার আইনজীবি ও সাবেক পিপি এডভোকেট রেহেনা খানম বলেন, কুড়িগ্রাম জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেসির মামলা নিষ্পত্তির হার এবং সাক্ষ্য নেওয়ার হার সারাদেশের ম্যাজিস্ট্রেসির জন্য একটি মডেল। কুড়িগ্রামের চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট হাসান মাহমুদুল ইসলামের যোগ্য নেতৃত্বে আগের তুলনায় বার-বেঞ্চ ও পুলিশ-ম্যাজিস্ট্রেসির সমন্বিত উদ্যোগে বিচারিক কাজে গতিশীলতা বেড়েছে। এতে মামলার নিষ্পত্তির হারও ব্যাপক হারে বেড়েছে। এভাবে মামলা নিষ্পত্তি হলে মামলা জট কমে যাবে এবং বিচারপ্রার্থী মানুষের দুর্ভোগ কমে যাবে।
চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের ভারপ্রাপ্ত প্রশাসনিক কর্মকর্তা মোঃ শাহ আলম বলেন, বর্তমান চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট হাসান মাহমুদুল ইসলাম যোগ দেওয়ার পর থেকে তার অধীনস্ত আদালতে মামলা নিষ্পত্তির হার ও সাক্ষ্য নেওয়ার হার দুটোই বেড়েছে।
বর্তমানে কুড়িগ্রাম জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেসিতে ৯ জন বিচারক কর্মরত আছেন। কুড়িগ্রাম জেলায় আমলী আদালত ১১টি ও বিচারিক আদালত ৯টি। বর্তমানে বিচারিক কাজে গতিশীলতা বাড়ায় মামলা দ্রুত বিচারের জন্য প্রস্তুত হচ্ছে। এ কারণে মামলা নিষ্পত্তির হারও বাড়ছে বলে মনে করেন সংশ্লিষ্টরা।
এছাড়া, চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট তার ম্যাজিস্ট্রেসিতে কর্মরত বিচারকদের মামলা দ্রুত নিষ্পত্তিকরণে পুরস্কার হিসেবে প্রতি মাসে পুরস্কৃত করে থাকেন। এ সফলতার জন্য চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট হাসান মাহমুদুল ইসলাম জেলার আইনজীবী ও পুলিশ বিভাগের সকলকে সহযোগিতার জন্য ধন্যবাদ জানিয়েছেন।