ব্রেক্সিটের পর স্বল্প দক্ষ কর্মীদের ভিসা দেবে না ব্রিটেন
১৯ ফেব্রুয়ারি ২০২০ ১৭:৪০
ব্রেক্সিটের পর স্বল্প দক্ষ কর্মীদের ভিসা দেবে না ব্রিটিশ সরকার। চাকরিদাতা প্রতিষ্ঠানগুলোকে ইউরোপের দেশগুলো থেকে ‘সস্তা শ্রমে’র ওপর নির্ভরশীলতা কমিয়ে স্বয়ংক্রিয় প্রযুক্তি উন্নয়ন এবং বিদ্যমান জনশক্তিতে ধরে রাখার পেছনে বিনিয়োগের পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। খবর বিবিসি।
ব্রিটেনের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলেছে, ৩১ ডিসেম্বর যুক্তরাজ্য ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) মধ্যে ‘ফ্রি মুভমেন্ট’ বা অবাধ যাতায়াত বন্ধ হওয়ার পর থেকে ইইউ এবং নন-ইইউ নাগরিকদের সমানভাবে দেখা হবে।
ব্রিটিশ সরকারের এমন পরিকল্পনার জবাবে লেবার দল বলেছে, ‘বৈরী পরিবেশে’ শ্রমিকদের আকর্ষণ করা কঠিন হয়ে পড়বে।
বিবিসি ব্রেকফাস্ট অনুষ্ঠানে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী প্রীতি প্যাটেল এমন সিদ্ধান্তের পক্ষে যুক্তি দেখিয়ে বলেন, সরকার চায় সঠিক দক্ষতাসম্পন্ন লোকদের উৎসাহিত করতে এবং ব্রিটেনে স্বল্প-দক্ষ শ্রমিকদের সংখ্যা কমিয়ে আনতে।
এ পরিকল্পনার অধীনে, দক্ষ শ্রমিক হিসেবে স্বীকৃতি পেতে শিক্ষাগত দক্ষতা স্নাতক থেকে এ-লেভেল/সমমানের স্কটিশ ডিগ্রি পর্যন্ত করা হবে।
নতুন ব্যবস্থায় কৃষিখাতের নির্দিষ্ট কিছু কাজ ‘নিউ স্কিলড’ ক্যাটাগরি থেকে সরানো হবে। আর যোগ করা হবে, ছুতোরের কাজ, প্লাস্টারিং ও চাইল্ডমাইন্ডিং।
পয়েন্টভিত্তিক ব্যবস্থা
ব্রিটিশ সরকার বলছে, তারা একটি পয়েন্টভিত্তিক অভিবাসন ব্যবস্থা চায়, যেমনটা কনজারভেটিভ দলের নির্বাচন ম্যানিফেস্টোতে প্রতিশ্রুতি ছিল।
এ পদ্ধতিতে, বিদেশি নাগরিকদের ইউকে’তে কাজ করার জন্য ৭০ পয়েন্ট পেতে হবে। ইংরেজিতে কথা বলার দক্ষতা এবং দক্ষতার কোনো কাজে চাকরির প্রস্তাব (জব অফার) থাকলে মিলবে ৫০ পয়েন্ট।
যোগ্যতা, চাকরির প্রস্তাবে বেতনের অঙ্ক এবং দক্ষ শ্রমিকের ঘাটতি আছে— এমন কোনো খাতের কাজ হলে আরও পয়েন্ট পাওয়ার সুযোগ থাকবে। তবে, ব্রিটিশ সরকার বলেছে, অল্প দক্ষ শ্রমিকদের জন্য অভিবাসনের কোনো সুযোগ চালু করবে না। ইইউ ও ইউকের মধ্যে ফ্রি মুভমেন্ট বন্ধ হওয়ার আগ দিয়ে বিষয়টি মানিয়ে নিতে প্রতিষ্ঠানগুলোকে আহ্বান জানিয়েছে সরকার।
এরই মধ্যে যে ৩২ লাখ ইইউ নাগরিক যুক্তরাজ্যে থাকার জন্য আবেদন করেছেন, তারা বিদ্যমান শ্রমিক চাহিদা মেটাতে সহায়ক হবে বলে মনে করছে সরকার।
ইউরোপিয়ান ইকোনোমিক এরিয়ার (ইইএ) অন্তর্ভুক্ত দেশগুলোর নাগরিকরা বর্তমানে যুক্তরাজ্যে সুবিধা ভোগ করেন, তাদের মজুরি বা দক্ষতার পর্যায় যেমনই হোক না কেন, এ সুবিধা ৩১ ডিসেম্বরের পর অর্থাৎ ব্রেক্সিট পরবর্তী ১১ মাসের ট্রানজিশন পিরিয়ড শেষ হওয়ার পর থেকে আর থাকবে না।
এদিকে, স্বল্প-মজুরির খাতগুলো যেমন কৃষিখাত, ক্যাটারিং ও নার্সিং সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা উদ্বেগ জানিয়ে বলেছেন, নতুন পদ্ধতির অধীনে তাদের কর্মী নিয়োগ করা কঠিন হয়ে পড়বে।
দ্য রয়াল কলেজ অব নার্সিং বলছে, দেশের জনসংখ্যার স্বাস্থ্যসেবা প্রয়োজন মেটানো সম্ভব হবে না। ন্যাশনাল ফারমার্স ইউনিয়নের প্রেসিডেন্ট মিনেটে ব্যাটার্স ব্রিটিশ খাদ্য এবং কৃষি খাতের প্রয়োজন উপলব্ধি করতে সরকারের ব্যর্থতা নিয়ে ‘গভীর উদ্বেগ’ প্রকাশ করেছে।
এমন উদ্বেগ নিয়ে সরকার বলছে, কৃষিখাতে মৌসুমি কর্মী নেওয়ার সংখ্যা চার গুণ করে ১০ হাজারে উন্নীত করা হবে এবং ‘ইয়ুথ মোবিলিটি অ্যারেঞ্জমেন্টে’র অধীনে প্রতি বছর ২০ হাজার নবীন ইউকে আসার সুযোগ পাবে।