Tuesday 08 Jul 2025
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

মহিউদ্দিনের পথ ধরে চলব: রেজাউল


১৯ ফেব্রুয়ারি ২০২০ ১৭:৫৭ | আপডেট: ১৯ ফেব্রুয়ারি ২০২০ ২০:৩৫
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

চট্টগ্রাম ব্যুরো: চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের নির্বাচনে মেয়র পদে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন নিয়ে ঢাকা থেকে ফেরার পর রেজাউল করিম চৌধুরীকে তুমুল উচ্ছ্বাসে বরণ করে নিয়েছেন নেতাকর্মীরা। এ সময় সমবেত কয়েক হাজার নেতাকর্মীর উদ্দেশে রেজাউল বলেছেন, প্রয়াত রাজনীতিক এম এ আজিজ, জহুর আহমদ চৌধুরী ও এবিএম মহিউদ্দিন চৌধুরীর পথ ধরে চলব।

বুধবার (১৯ ফেব্রুয়ারি) বিকেল তিনটায় ট্রেনযোগে ঢাকা থেকে চট্টগ্রামে ফেরেন রেজাউল করিম চৌধুরী। পুরাতন রেলস্টেশন চত্বরে একটি ট্রাকে লাল-সবুজ কাপড়ে মুড়িয়ে বানানো অস্থায়ী মঞ্চে সংবর্ধনা অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। চট্টগ্রাম উত্তর, দক্ষিণ ও মহানগর আওয়ামী লীগের নেতারা মঞ্চে ছিলেন।

বিজ্ঞাপন

ট্রেন থেকে নামার পর বাজনা বাজিয়ে এবং ফুল ছিটিয়ে বরণ করে নিয়ে রেজাউলকে আনা হয় সংবর্ধনা মঞ্চে। এ সময় উপস্থিত বিপুল সংখ্যক নেতাকর্মী স্লোগানে-স্লোগানে পুরো এলাকা মুখর করে তোলেন। রেজাউলও ফুল নিয়ে নেতাকর্মীদের উদ্দেশে ছিটিয়ে দেন।

সংবর্ধনার জবাবে রেজাউল করিম চৌধুরী নেতাকর্মীদের উদ্দেশে বলেন, ‘চট্টলবাসী আমার প্রতি যে আন্তরিকতা দেখিয়েছেন সেজন্য আপনাদের কাছে কৃতজ্ঞ। আমি কৃতজ্ঞ আমার নেত্রী শেখ হাসিনার কাছে, যিনি আমাকে মূল্যায়ন করেছেন, আমার ওপর আস্থা রেখে চট্টলবাসীর খেদমত করার জন্য মেয়রপ্রার্থী হিসেবে আমাকে মনোনয়ন দিয়েছেন। কৃতজ্ঞচিত্তে স্মরণ করছি যারা আমাকে রাজনৈতিক শিক্ষা দিয়েছেন- এই চট্টলার শেখ মোজাজফর আহমদ, এম এ আজিজ, জহুর আহমদ চৌধুরী, এম এ হান্নান, এম এ মান্নান, কাজেম আলী মাস্টার, মনিরুজ্জামান ইসলামাবাদী, আতাউর রহমান খান কায়সার, আখতারুজ্জামান চৌধুরী বাবু এবং সদ্যপ্রয়াত চট্টলবীর এবিএম মহিউদ্দিন চৌধুরীকে।’

‘এই সমাবেশে দাঁড়িয়ে বলতে চাই, নেত্রী শেখ হাসিনা আমার ওপর যে আস্থা রেখেছেন, সেই আস্থার প্রতিদান প্রয়াত নেতাদের পদাঙ্ক অনুসরণ করে আমার শেষরক্ত বিন্দু দিয়ে হলেও পালন করে যাব। একটা কথা দিতে পারি, অর্থবিত্তের প্রতি আমার কোনো মোহ নেই। এম এ আজিজ, জহুর আহমদ চৌধুরী ও এবিএম মহিউদ্দিন চৌধুরীরা যে পথে গিয়েছেন, আমিও সেই পথে যাব’- বলেন রেজাউল করিম চৌধুরী।

মেয়র নির্বাচনে যারা মনোনয়ন চেয়েছিলেন সবাই যোগ্যপ্রার্থী মন্তব্য করে রেজাউল বলেন, ‘সবাই যোগ্যপ্রার্থী। কিন্তু নেত্রী আমার হাতে নৌকা প্রতীক তুলে দিয়েছেন। আমি শেখ হাসিনার প্রতিনিধি, এছাড়া আর কিছু নই। কথা দিতে পারি, এবিএম মহিউদ্দিন চৌধুরী ১৭ বছর এই চট্টলবাসীর সেবা করেছেন। এই চট্টগ্রামকে সমগ্র বাংলাদেশে একটা মডেল সিটি হিসেবে উপহার দিয়েছেন। তার পরে পাঁচ বছর সিটি করপোরেশন আমাদের হাতে ছিল না। আবার ২০১৫ সালে এই সিটি করপোরেশন আমাদের হাতে এসেছিল। মহিউদ্দিন চৌধুরী যে উন্নয়ন করেছেন সেই উন্নয়নের ধারা বর্তমান মেয়র আ জ ম নাছির অব্যাহত রেখেছেন। আমি যদি আপনাদের ভোটে মেয়র নির্বাচিত হতে পারি, সেই ধারা বহমান রাখব।’

চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (সিডিএ) সাবেক চেয়ারম্যান আবদুচ ছালামকে পাশে নিয়ে রেজাউল জানিয়েছেন, সিডিএ চট্টগ্রাম নগরীর যে উন্নয়নের ধারা শুরু করেছেন, নির্বাচিত হলে সেই ধারা তিনি বহমান রাখবেন।

তিনি আরও বলেন, ‘যদি আমাকে নির্বাচিত করেন তাহলে চট্টগ্রামকে একটি পরিকল্পিত নগরী হিসেবে গড়ে তুলব। যদিও একজনের পক্ষে নগরী গড়ে তোলা সম্ভব নয়। এর জন্য দরকার সমন্বিত উদ্যোগ। আমি চট্টগ্রামের সুশীল সমাজ, সাংবাদিক, পেশাজীবী, প্রকৌশলী, কৃষিবিদ, নগর পরিকল্পনাবিদ, মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের সকল রাজনৈতিক দল এবং প্রগতির পক্ষে, যারা মুক্তিযুদ্ধের চেতনার পক্ষে ও বঙ্গবন্ধুর আর্দশের পক্ষে, সেই সর্বস্তরের জনগণকে নিয়ে পরামর্শ করে এই চট্টগ্রামের হৃত গৌরব ফিরিয়ে দিতে চাই। এই চট্টলা একসময় সৌন্দর্যের রাণী ছিল। পাহাড় কাটার ফলে চট্টলা ধ্বংসের মুখে, নদী দূষণে কর্ণফুলী আজ মরে যেতে বসেছে। আপনাদের ভোটে যদি নির্বাচিত হতে পারি এই চট্টগ্রামকে মাদক ও সন্ত্রাসমুক্ত, পরিষ্কার ও পরিচ্ছন্ন, দুনূীতিমুক্ত, র্নিমল, পরিবেশবান্ধব করব।’

জলাবদ্ধতা নিরসন নিয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা এই লালদিঘীর মাঠে বলেছিলেন, চট্টগ্রামের উন্নয়নের দায়িত্ব আমি নিজ হাতে নিয়েছি। এই জলাবদ্ধতা নিরসনের জন্য তিনি আট হাজার কোটি টাকার প্রকল্প সিডিএকে দিয়েছেন। এটা যদি সফল হয় তাহলে অনেকাংশে আমরা জলাবদ্ধতা থেকে মুক্তি লাভ করব। আমি নির্বাচিত হলে এই কাজ সম্পন্ন করার জন্য যা যা করা দরকার সবই করব।’

নগর আওয়ামী লীগের আইন বিষয়ক সম্পাদক শেখ ইফতেখার সাইমুল চৌধুরীর সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে নগর আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মাহতাব উদ্দিন চৌধুরী, উত্তরের সভাপতি জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান এম এ সালাম, দক্ষিণের সভাপতি সাংসদ মোছলেম উদ্দিন আহমেদ বক্তৃতা করেন।

এ সময় দক্ষিণের সাধারণ সম্পাদক মফিজুর রহমান এবং উত্তরের সাধারণ সম্পাদক শেখ আতাউর রহমানও উপস্থিত ছিলেন। তবে মনোনয়ন বঞ্চিত নগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বর্তমান মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীন অনুষ্ঠানে যাননি। তার অনুসারীদের ব্যানারও দেখা যায়নি।

অনুষ্ঠানের শেষে উত্তর, দক্ষিণ, মহানগর আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগ, শ্রমিক লীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগ, বিভিন্ন থানা ও ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে রেজাউল করিম চৌধুরীকে ফুল দিয়ে অভিনন্দন জানানো হয়।

চসিক মেয়রপ্রার্থী রেজাউল করিম চৌধুরী

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর