গৃহবধূকে পুলিশ হেফাজতে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ
২০ ফেব্রুয়ারি ২০২০ ০৪:১০
গাজীপুর: গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনের ভাওয়াল গাজীপুর এলাকায় পুলিশ হেফাজতে এক গৃহবধূকে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ করেছেন স্বজনরা। পুলিশ বলছে, গ্রেপ্তারের পর অসুস্থ্যজনিত কারণে ওই গৃহবধূ মারা গেছেন। মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গে রাখা হয়েছে।
ঘটনাস্থলে ভিড় করেছেন নিহতের স্বজন ও এলাকাবাসী। নিহত ইয়াসমিন আক্তার ভাওয়াল গাজীপুর গ্রামের আব্দুল হাইয়ের স্ত্রী। নিহতের দুই ছেলে ও এক মেয়ে রয়েছে।
নিহতের ছেলে আরাফাত রহমান জিসান বলেন, ‘তার বাবা আব্দুল হাইকে মাদক মামলা গ্রেপ্তার করতে গতকাল (মঙ্গলবার) সন্ধ্যায় ডিবি পুলিশের সহকারি উপ-পরিদর্শক নুরে আলমের নেতৃত্বে একদল পুলিশ বাড়িতে আসে। এ সময় পুলিশ সদস্যরা বাবা আব্দুল হাইকে না পেয়ে কলাপসিবল গেইট ভেঙ্গে ঘরে প্রবেশ করে। পরে ডিবির সদস্যরা আমার মা ইয়াসমিনকে মারধর করে এবং গ্রেপ্তার করে নিয়ে যায়।’
‘পরে বাজার থেকে এসে আমি মার মোবাইলে ফোন দিলে ডিবির সদস্যরা আমাকের ডিবি অফিসে যেতে বলে। কিছুক্ষণ পর তারা আমাকে ডিবি অফিসে না গিয়ে হাসপাতালে যেতে বলেন। হাসপাতালে গেলে পুলিশ আমাকে ভেতরে যেতে বাধা দেয়। এক পর্যায়ে তারা জানায়, আমার মা মারা গেছেন।’ যোগ করেন জিসান।
মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের উপ কমিশনার মঞ্জুরুল হক পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, মাদক বেঁচা-কেনার খবরে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে ভাওয়াল গাজীপুর এলাকায় অভিযান পরিচালনা করা হয়। সেখানে মাদক মামলার আসামি ইয়াসমিনকে একশ’ পিস ইয়াবা ট্যাবলেটসহ গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তারের পর ওই গৃহবধূ অসুস্থ হয়ে পড়েন। পরে তাকে শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর চিকিৎসকরা ইয়াসমিনকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তরের পরামর্শ দেন। এসময় তাকে ঢাকায় পাঠানোর প্রস্তুতি নেয়াকালে ইয়াসমিন মারা যান।’
ইয়াসমিন ও তার স্বামী আব্দুল হাইয়ের বিরুদ্ধে একাধিক মাদক আইনে মামলা রয়েছে বলে দাবি করে পুলিশ।।
হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসক ডা.রফিকুল ইসলাম বলেন, রাত সাড়ে ৯টায় ইয়াসমিনকে শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে ইসিজি ও এনজিওগ্রাম করা হয়। পরে তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় পাঠানোর পরামর্শ দেয়া হয়। এক পর্যায়ে রাত ১১টা ২০ মিনিটে তিনি মারা যান। হার্ট অ্যাটাকে তিনি মারা গেছেন বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হয়েছে। নিহতের শরীরে বাহ্যিকভাবে কোনো আঘাতের চিহ্ন পাওয়া যায়নি।