Friday 22 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

চার্জশিট দিতে লাগবে আরও এক বছর!


২০ ফেব্রুয়ারি ২০২০ ১৪:২৮

ঢাকা: চুড়িহাট্টার আগুনের এক বছর। কিন্তু আগুনে পুড়ে যাওয়া ৬৭ জনের মৃত্যুর ঘটনায় করা মামলার তদন্ত প্রতিবেদন এখনও জমা হয়নি। সবশেষ আগামী ২৬ ফেব্রুয়ারি প্রতিবেদন জমা দেওয়ার নতুন তারিখ দিয়েছেন আদালত। শুনানি শুরুর পর থেকে প্রতিবেদন জমা দেওয়ার জন্য এখন পর্যন্ত ৯ বার সময় আবেদন করছেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা। তিনি আশা করছেন, বাকি কাজগুলো শেষ করে এ বছরের মধ্যে চার্জশিট দিতে পারবেন।

২০১৯ সালের ২০ ফেব্রুয়ারি রাতে রাজধানীর চকবাজারে চুড়িহাট্টার ওয়াহেদ ম্যানসনের অবৈধ কেমিক্যাল গোডাউন থেকে আগুনের সূত্রপাত হয়। এই ঘটনায় ওয়াহেদ ম্যানসনের মালিক মো. হাসান ও সোহেলকে গ্রেফতার করে পুলিশ। তাদের বিরুদ্ধে বেপরোয়া বা তাচ্ছিল্যপূর্ণ কাজ করে মৃত্যু ঘটানো, ঘরবাড়ি ধ্বংসের জন্য আগুন বা বিস্ফোরক দ্রব্য ব্যবহার, উপাসনালয়, মানুষের বসতি বা সম্পত্তি রাখা হয়, এমন দালান ধ্বংস ও লোকসানের অভিযোগ এনে একটি মামলা দায়ের করা হয়।

বিজ্ঞাপন

মামলা দায়েরের পর ১১ মার্চ বিচারপতি জাহাঙ্গীর হোসেন ও বিচারপতি মো. রিয়াজ উদ্দিন খানের হাইকোর্ট বেঞ্চ হাসান ও সোহেলের তিন সপ্তাহের আগাম জামিন মঞ্জুর করেন। জামিনের মেয়াদ শেষে তাদের নিম্ন আদালতে আত্মসমর্পণেরও নির্দেশ দেন আদালত।

হাইকোর্টের দেওয়া ওই জামিনের মেয়াদ শেষ হওয়ায় আসামিরা আত্মসমর্পণ করে আদালতে জামিনের আবেদন করেন। রাষ্ট্রপক্ষ আসামিদের জামিনের বিরোধিতা করে। উভয় পক্ষের শুনানি শেষে বিচারক জামিনের আবেদন নামঞ্জুর করে তাদের কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।

ওই বছর ৮ এপ্রিল দুই আসামির সাতদিন করে রিমান্ডও মঞ্জুর করেন আদালত। এরপর ১৬ এপ্রিল রিমান্ড শেষে হাসান ও সোহেল আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিও দেন।

বিজ্ঞাপন

পরে আবারও জামিনের আবেদন করলে ২০১৯ সালের ২৩ আগস্ট জামিন পান তারা।

মামলার মূল দুই আসামি জামিনে ঘুরে বেড়াচ্ছেন, অথচ তদন্ত প্রতিবেদনই দাখিল করতে পারছে না পুলিশ। এ নিয়ে ক্ষতিগ্রস্তদের পরিবারে তৈরি হয়েছে হতাশা, ক্ষোভ। বিভিন্ন সময় গণমাধ্যমের কাছে সেই ক্ষোভও জানিয়েছেন তারা।

কেন দেওয়া হচ্ছে না তদন্ত প্রতিবেদন? জানতে চাইলে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা চকবাজার থানার পরিদর্শক কবীর হোসেন সারাবাংলাকে বলেন, ৬৭ জনের ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন এতদিন তার হাতে আসেনি। বুধবার (১৯ ফেব্রুয়ারি) রাত ১২ টার পর তারা প্রতিবেদন পেয়েছেন। ফলে আশা করছেন দ্রুত মামলার তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিতে পারবেন।

কবে নাগাদ জমা দিতে পারবেন সে প্রশ্নের জবাবে এই কর্মকর্তা বলেন, ‘মামলার অন্যান্য কার্যক্রম প্রায় শেষের দিকে। আশা করছি এ বছরের মধ্যে চার্জশিট আদালতে জমা দিতে পারবো।’

তবে আসামিপক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট মোস্তফা পাঠান ফারুক সারাবাংলাকে বলেন, ‘এ মামলায় যারা এজাহারভুক্ত আসামি তারা নিজেরাই ক্ষতিগ্রস্ত। অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় আসামিরা নিঃস্ব হয়ে গেছেন। কিন্তু ভাগ্যক্রমে উনারাই আসামি হয়ে গেছেন। জামিন নেওয়া, কারাগারের ভেতরে যাওয়া এসবের চক্করের মধ্যে পড়েছেন।’

আসামিদের বিরুদ্ধে সুস্পষ্ট অভিযোগ প্রমাণিত হয়নি দাবি করে এই আইনজীবী বলেন, তারা নির্দোষ। এমনকি মামলা থেকে অব্যাহতি পাবেন বলেও প্রত্যাশা তার।

মামলার অভিযোগে বলা হয়, আর্থিকভাবে লাভবানের আশায় ভবনের চতুর্থ তলার বিভিন্ন ফ্লোরে দাহ্য পদার্থ বেচাকেনার জন্য ভাড়া দেন ওয়াহেদ ম্যানসনের মালিকের দুই ছেলে মো. হাসান ও সোহেল ওরফে শহীদ। ২০১৯ সালের ২০ ফেব্রুয়ারি রাত সাড়ে ১০টার দিকে চকবাজার মডেল থানাধীন চুড়িহাট্টা শাহী জামে মসজিদের সামনে রাস্তায় চলাচলরত একটি প্রাইভেটকারের গ্যাস সিলিন্ডার বিস্ফোরিত হয়ে পাশের বিদ্যুতের ট্রান্সমিটারে আগুন লাগে। ট্রান্সমিটারের আগুন থেকে একটি প্রাইভেটকার ও একটি পিকআপের গ্যাস সিলিন্ডার বিস্ফোরিত হয়ে ওয়াহেদ ম্যানসনের নিচতলা ও পাশের রাজমহল হোটেল অ্যান্ড রেস্টুরেন্টে আগুন লাগে। সেই ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে ৬৭ জন মারা যান।

ওই ঘটনায় স্থানীয় বাসিন্দা মো. আসিফ বাদী হয়ে চকবাজার থানায় মামলা দায়ের করেন। মামলার এজাহারে দুই আসামির নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত ১০ থেকে ১২ জনকে আসামি করা হয়।

এক বছরে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেওয়া হয়নি চকবাজারের চুড়িহাট্টায় আগুন চুড়িহাট্টায় আগুন তদন্ত প্রতিবেদন

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর