অগ্রযাত্রা অব্যাহত রাখতে সবার সহযোগিতা চাইলেন প্রধানমন্ত্রী
২০ ফেব্রুয়ারি ২০২০ ১৩:২০
ঢাকা: গত এক দশকে বাংলাদেশ যেভাবে এগিয়েছে, অগ্রযাত্রার সেই অপ্রতিরোধ্য গতি যেন অব্যাহত থাকে সেটাই তার চাওয়া বলে উল্লেখ করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, ‘বিশ্বের কোথাও গিয়ে যেন বাংলাদেশ শুনলে আর আমাদের কেউ অবহেলা করতে না পারে, সেইভাবেই বাংলাদেশকে আত্মমর্যাদাশীল দেশ হিসেবে গড়ে তুলে জাতির পিতার স্বপ্ন পূরণ করতে চাই।’
বৃহস্পতিবার (২০ ফেব্রুয়ারি) সকালে রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে একুশে পদক প্রদান অনুষ্ঠানে তিনি প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন। অনুষ্ঠানের শুরুতে জাতীয় সংগীত পরিবেশন করা হয়। এরপর প্রধানমন্ত্রী পদকপ্রাপ্তদের হাতে পদক তুলে দেন।
স্বাধীনতার পর ১৯৭৪ সালে জাতিসংঘে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবের বাংলা ভাষায় ভাষণ দেওয়ার কথা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘তিনি জাতিসংঘে বাংলা ভাষায় ভাষণ দিয়েছিলেন। আমিও যতবার প্রধানমন্ত্রী হিসাবে জাতিসংঘে ভাষণ দিয়েছি জাতির পিতার পদাঙ্ক অনুসরণ করে বাংলা ভাষাই সেখানে ভাষণ দিয়ে থাকি।’
ভাষার উপর যারা গবেষণা করছে, বিভিন্ন সাহিত্য চর্চা ও গবেষণা করছে তাদের সকলের প্রতি ধন্যবাদ জানানোর পাশাপাশি একুশে পদক-২০২০ প্রাপ্ত গুণীজনদের প্রতিও অভিনন্দন জানান প্রধানমন্ত্রী।
একুশে পদক তুলে দিলেন প্রধানমন্ত্রী
শেখ হাসিনা বলেন, ‘এর মধ্য দিয়ে আমাদের ভাষার প্রতি, কৃষ্টি, সংস্কৃতি, জাতিসত্ত্বা; এর মর্যাদা যেমন বৃদ্ধি পাচ্ছে পাশাপাশি বাঙালি জাতি হিসাবে বিশ্ব দরবারে মর্যাদার আসনে নিয়ে এগিয়ে যাব, সেটাই আমাদের আকাঙ্খা। আজকের বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে। অর্থনৈতিকভাবে আমরা যথেষ্ট উন্নতি করেছি কিন্তু আরও উন্নতি করতে চাই।’
এর কারণ তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের সব সময় এটা মনে রাখতে হবে, লাখো শহীদের রক্তের বিনিময়ে স্বাধীনতা পেয়েছি। কাজেই এই স্বাধীনতাকে অর্থবহ করা, স্বাধীনতার সুফল বাংলার মানুষের ঘরে ঘরে পৌঁছে দেওয়া এবং বাংলাদেশকে একটা ক্ষুধামুক্ত, দারিদ্র্যমুক্ত উন্নত সমৃদ্ধ সোনার বাংলা হিসাবে গড়ে তোলা; যে স্বপ্নটা জাতির পিতা দেখেছিলেন, সেটাই পূরণ করা, সেটাই আমাদের লক্ষ্য। সেই লক্ষ্য নিয়েই আমরা কাজ করে যাচ্ছি। গত এক দশকে আজকে বাংলাদেশ যেভাবে দ্রুত এগিয়েছে, এই অগ্রযাত্রা যেন অপ্রতিরোধ্য গতিতে অব্যাহত থাকে, সেটাই আমরা চাই।’
বাংলাদেশ দক্ষিণ এশিয়ায় একটা উন্নত সমৃদ্ধ দেশ হিসাবে গড়ে উঠবে এই আশাবাদ ব্যক্ত করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘সেজন্য কিছু সূদুরপ্রসারী পরিকল্পনাও নিয়ে রেখেছি। প্রজন্মের পর প্রজন্ম যারা আসবে তারাও যেন এই বাংলাদেশের স্বাধীনতার সুফল ভোগ করতে পারে, নিজের জীবনকে সুন্দরভাবে গড়তে পারে।’
বাঙালির সাহিত্য-সংস্কৃতি যেন আন্তর্জাতিক পর্যায়ে বিস্তার লাভ করে, সেদিকেও বিশেষভাবে দৃষ্টি দেওয়ার কথা বলেন তিনি।
বাংলাদেশকে আত্মমর্যাদাশীল দেশ হিসাবে গড়ে তুলে জাতির পিতার স্বপ্ন পূরণ করার বিষয়ে সকলের সহযোগিতা কামনা করেন শেখ হাসিনা। এসময় টানা মেয়াদে সরকার গঠনের সুযোগ দেওয়ার জন্য জনগনের প্রতিও কৃতজ্ঞতা জানান তিনি।
বক্তব্য শেষে পদকপ্রাপ্ত সুধীজনের সাথে ফটোসেশনে অংশ নেন।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন সংস্কৃতি বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ। পদক প্রদান অনুষ্ঠানটি পরিচালনা করেন মন্ত্রীপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম। স্বাগত বক্তব্য রাখেন সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. মো: আবু হেনা মোস্তফা কামাল।