Sunday 08 September 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

প্রেমিককে বিয়ের চাপ দিতে ‘স্বেচ্ছায় ধর্ষণের শিকার’ পোশাককর্মী


২০ ফেব্রুয়ারি ২০২০ ২০:১৮

চট্টগ্রাম ব্যুরো: চট্টগ্রাম নগরীতে প্রেমিকের ওপর বিয়ের জন্য ‘চাপ’ তৈরি করতে পোশাক কারখানায় কর্মরত এক তরুণীর তার সহকর্মীর কাছে ‘স্বেচ্ছায় ধর্ষণের শিকার’ হওয়ার তথ্য পেয়েছে পুলিশ। পরে তিনি প্রেমিকের বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগে মামলা করেন। কিন্তু তদন্তে নেমে ‍পুলিশ আসল ঘটনা জানতে পেরে তরুণীর সহকর্মীকে গ্রেফতার করে। পরে তরুণী ও তার সহকর্মী আদালতে ঘটনার দায় স্বীকার করে জবানবন্দি দেন।

গত ১৪ ফেব্রুয়ারি বিকেলে নগরীর কোতোয়ালি থানার স্টেশন রোডে একটি আবাসিক হোটেলে ওই তরুণীর ইচ্ছায় তাকে তার সহকর্মী ‘ধর্ষণ’ করে বলে জানিয়েছেন ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ মহসীন।

গ্রেফতার হওয়ার সজীব দাশ রুবেল (২৬), তরুণীর প্রেমিকা কামরুল হাসান (২৬) ও তরুণী— তিন জনই সিইপিজেডের একটি পোশাক কারখানার কর্মী।

তদন্তে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে ওসি মহসীন সারাবাংলাকে জানান, ২০১৯ সালে একই কারখানায় চাকরির সুবাদে সজীবের মাধ্যমে কামরুলের সঙ্গে তরুণীর পরিচয় হয় এবং প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। গত ডিসেম্বরে তরুণীর সঙ্গে ঝগড়া করে কামরুল চাকরি ছেড়ে দিয়ে সন্দ্বীপে তাদের বাড়িতে চলে যান। তরুণী তাকে বিয়ের জন্য চাপ দেয়। এমনকি তার পরিবারের কাছেও বিয়ের প্রস্তাব দেয়। কিন্তু কামরুল ও তার পরিবারকে বিয়ের জন্য রাজি করতে ব্যর্থ হয়। তখন সজীবের সঙ্গে পরামর্শ করলে সে তরুণীকে কামরুলের বিরুদ্ধে ধর্ষণের মামলা করার প্রস্তাব দেয়। এতে সে বিয়েতে রাজি হবে বলে ধারণার কথা জানায় সজীব।

ওই তরুণী আদালতে জবানবন্দিতে জানিয়েছেন, গত ১৪ ফেব্রুয়ারি বিকেলে তিনি সজীবকে ডেকে নগরীর আগ্রাবাদে নিয়ে যান। তার কথামতো সজীব স্টেশন রোডে এসে একটি হোটেলে কামরুলের নাম-ঠিকানা ব্যবহার করে কক্ষ ভাড়া নেয়। সেখানে দু’জন শারীরিক সম্পর্ক স্থাপনের পর রাতে তরুণী বেরিয়ে কোতোয়ালি থানায় যান। ধর্ষণের অভিযোগে কামরুলের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন।

কোতোয়ালি থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মো. কামরুজ্জামান সারাবাংলাকে বলেন, ‘তদন্ত শুরুর পর ঘটনাস্থলে পরিদর্শন ও ভিকটিমকে জিজ্ঞাসাবাদে আমরা ভিন্ন তথ্য পাই। সজীবের তথ্য পেয়ে আমরা গত মঙ্গলবার ইপিজেডে কারখানায় গিয়ে তাকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করি। একপর্যায়ে সজীব ও তরুণী— দু’জনই আমাদের কাছে পুরো ঘটনা খুলে বলেন।’

বুধবার (১৯ ফেব্রুয়ারি) উভয়ই কামরুলকে ফাঁসাতে স্বেচ্ছায় শারীরিক সম্পর্ক গড়ে মিথ্যা মামলা দায়েরের কথা স্বীকার করে আদালতে জবানবন্দি দিয়েছেন।

জানতে চাইলে ওই তরুণী সারাবাংলাকে বলেন, ‘সজীবের পরামর্শে আমি একটা ভুল করে ফেলেছি। কামরুলের কোনো দোষ নেই। আসলে কামরুল আমাকে বিয়ে করবে না বলে জানালে আমি অসহায় বোধ করি। সজীব তখন আমাকে এই পরামর্শ দেয়। মানুষের কথায় কান দিয়ে আমি নিজের সর্বনাশ করেছি।’

ওসি মোহাম্মদ মহসীন জানিয়েছেন, তদন্তের মাধ্যমে স্বেচ্ছায় ‘ধর্ষণের শিকার’ হওয়া সংক্রান্ত আরও তথ্যউপাত্ত সংগ্রহ করে এর সত্যতা সাপেক্ষে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের সংশ্লিষ্ট ধারায় মিথ্যা মামলা করার অপরাধে তরুণীর বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

ধর্ষণের শিকার পোশাককর্মী বিয়ের জন্য চাপ স্বেচ্ছায় ধর্ষণের শিকার


বিজ্ঞাপন
সর্বশেষ
সম্পর্কিত খবর