Wednesday 09 Jul 2025
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

শাহাবুদ্দিনের পরিবারকে পথে নামিয়েছে চুড়িহাট্টার আগুন


২০ ফেব্রুয়ারি ২০২০ ২৩:২৫ | আপডেট: ২০ ফেব্রুয়ারি ২০২০ ২৩:৩৯
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

ঢাকা: কথা ছিল ভ্যানের মালগুলো নামিয়েই ভোলায় স্ত্রী ছকিনা বেগমকে টাকা পাঠাবেন রিকশাচালক স্বামী শাহাবুদ্দিন। কিন্তু সেই টাকা আর পাঠানো হয়নি শাহাবুদ্দিনের। তার আগেই আগুনের কাছে তাকে অসহায় আত্মসমর্পণে বাধ্য হতে হয়।

ঘটনা একবছর আগে রাজধানীর চকবাজারের চুড়িহাট্টায় ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের রাতের। রিকশাচালক শাহাবুদ্দিন আগুনের ঘটনার আগে স্ত্রী ছকিনা বেগমকে সর্বশেষ জানিয়েছিলেন, ভ্যানের মালামাল নামিয়ে বাড়িতে টাকা পাঠাবেন। এরপরের ঘটনা, সেই রাতের আগুনে দগ্ধ হয়ে মারা যান শাহাবুদ্দিন। আর তার মৃত্যু তার পরিবারকে নামিয়ে আনে ভিক্ষাবৃত্তিতে।

আরও পড়ুন- চার্জশিট দিতে লাগবে আরও এক বছর!

বিজ্ঞাপন

কথা হলো শাহাবুদ্দিনের খালা শাশুড়ি জেনা বেগমের সঙ্গে। জানান, ভোলা থেকে এসে ঢাকায় অদূরে কামরাঙ্গির চরে কখনও রিকশা আবার কখনও ভ্যান চালাতেন শাহাবুদ্দিন। বেশি টাকা পাওয়া যায় বলে রাতেই বেশি খাটতেন। ঘটনার দিন রাতে শাহাবুদ্দিন কামরাঙ্গির চর থেকে মাল বোঝাই ভ্যানে মালামাল নামাতে যান চকবাজার এলাকায়। এরপর আর শাহাবুদ্দিনের কোনো খবর পাওয়া যায়নি। টিভিতে আগুনের খবর দেখে পরিবারের সদস্যরা পরদিন ঢাকায় আসেন। ঢাকা মেডিকেল কলেজের (ঢামেক) মর্গে গিয়ে জানতে পারেন শাহাবুদ্দিনের মৃত্যুর খবর।

জেনা বেগম জানান, শাহাবুদ্দিন ছিলেন পরিবারের একমাত্র আয়ের উৎস। স্বামীর মৃত্যুর পর তার তিন ছেলের খাবার জোগাতে বাধ্য হয়ে ভিক্ষায় নেমেছে তার স্ত্রী ছকিনা বেগম। গত ২০/২৫ দিন ধরে বিছানা নিয়েছেন তিনি। শাহাবুদ্দিনের বড় ছেলের বয়স মাত্র ১২ বছর পার হয়েছে। জেনা বেগমের প্রশ্ন, ‘সে এই বয়সে স্কুলে যাবে, নাকি পরিবারের হাল ধরবে?’

আরও পড়ুন- কেমিক্যাল গোডাউনের জায়গা নিয়েছে প্লাস্টিক কারখানা

জেনা বেগমস বলেন, ‘অগ্নিকাণ্ডে ক্ষতিগ্রস্তদের সরকার থেকে ২০ হাজার টাকা দিয়েছিল। সেই টাকা আমি নিয়ে দিয়েছি। এর কিছুদিন পর কবর থেকে শাহাবুদ্দিনের মরদেহ তোলা হলে তাতেও আমি সাক্ষী হয়েছি। শুধু ওই ২০ হাজার টাকা ছাড়া আর কোনো সহযোগিতা সরকার থেকে পাওয়া যায়নি।’

জেনা বেগমের কাছ থেকে জানা গেল, শাহাবুদ্দিনের স্ত্রী ও তিন ছেলে ভাঙা ঘরে বসবাস করছে। সামান্য বৃষ্টি হলেও সেই ঘরের মধ্যে পানি ঢুকে যায়। কারও কাছ থেকে কোনো সহাযোগিতাও পাচ্ছে না তারা। জেনা বেগম মনে করেন, সরকারের পক্ষ থেকে শাহাবুদ্দিনের পরিবারের জন্য বিধবা ভাতা ও একটি ঘরের ব্যবস্থা করে দিলে ভালো হতো।

অগ্নিদগ্ধ হয়ে মৃত শাহাবুদ্দিন ওয়াহেদ ম্যানসন চুড়িহাট্টায় শাহাবুদ্দিন

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর