বাবা-মায়ের হাত ধরে নিসা’র প্রথম শহীদ মিনারে আসা
২১ ফেব্রুয়ারি ২০২০ ১৫:০২
ঢাকা: জন্মের পর প্রথমবার কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে এসেছে নিসা। মুখে ২১’র চিত্রাংকন। পরণে শোকাবহ থ্রীপিছ। চুড়ি পরা হাতে এক গুচ্ছ ফুল। যে ফুলের পাপড়ীগুলো তার আনন্দ-উচ্ছ্বসতায় পরিণত হয়েছে আপন স্বকীয়তায়। পরণের পোশাক আর হাতের ফুল স্পষ্টই বলে দিচ্ছে সেও এসেছে ভাষা শহিদদের প্রতি বিনম্র শ্রদ্ধা জানাতে।
বলছিলাম ১৪ মাস বয়সি শিশু জান্নাতুল নিসার কথা। বাবা-মায়ের কোলে চড়ে ভোরেই ঢাকার অদূরে কেরানীগঞ্জের মডেল টাউন থেকে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে এসেছে শিশু নিসা ও তার বড় বোন। তবে নিসার মিনারে আনন্দ-উচ্ছ্বলতা মুগ্ধ করেছে ভাষা প্রেমি বাঙালিদের।
শহীদ মিনারের একেবারে সামনের দেয়ালে বসে নিসা কখনও ফুলগুলো হাত নিয়ে নাড়াচ্ছে আবার কখনও মাটিতে ফেলছে। আর ভাঙা ভাঙা স্বরে মায়ের শেখানো বুলি হাসিমাখা মুখে গুণগুণ করে উচ্চারণ করার চেষ্টা করছে। এতেই যেন তার সব আনন্দ। তার এমন আনন্দ মুগ্ধ হয়ে উপভোগ করছিলেন সেখানকার দর্শনার্থী থেকে শুরু করে গণমাধ্যমকর্মীরাও।
এ সময় কেউ তার সঙ্গে সেল্ফি তুলছে আবার কেউবা তার ছবি তুলছে নানা ভঙ্গিমায়। তার এমন দৃশ্য দেখে নিসার বাবা মাও আনন্দিত।
নিসার মা সুরাইয়া হাসান বাবলীর কাছে জানতে চেয়েছিলাম এতো ছোট্ট খুকিকেও কেন শহীদ মিনারে এনেছেন। তিনি এ প্রতিবেদককে বলেন, মা হিসেবে মনে করি এখনই সময় তাকে এ দেশের ভাষা, স্বাধীনতা এবং সার্বভৌমত্ব সম্পর্কে শেখানো। তাই তাকে প্রথমবার সরাসরি কেন্দ্রীয় শহিদ মিনারে নিয়ে এসেছি। এর আগে কখনও আর কোনো শহিদ মিনারে নেওয়া হয়নি তাকে। মাত্র ১২ মাস বয়সে সে আম্মু, আব্বু, নানু ডাকতে শুরু করেছে। তাই তাকে নিয়ে এলাম মায়ের ভাষা সম্পর্কে জানাতে। হয়তো সে এখন অনেক কিছুই জানে না। কিন্তু সে যখন ধীরে ধীরে বড় হবে তখন নিশ্চয়ই তার অভিজ্ঞতাগুলো তাকে অনেক বেশি সমৃদ্ধ করবে দেশের প্রতি ভালোবাসায়।
এ সময় তার বাবা সাউথ ইস্ট ব্যাংক কর্মকর্তা নাজমুল হাসানের কাছে চানতে চেয়েছিলাম, ছোট্ট মেয়ে নিয়ে আসতে নিশ্চয় অনেক কষ্ট হয়েছে? তিনি বলেন, কষ্ট তো হয়েছে, প্রায় ২ ঘন্টা লাইনে দাঁড়িয়ে মূল স্থানে এসেছি। কিন্তু এখানে আসার পর সব কষ্ট চলে গেছে। ভালো লাগছে অনেক অনেক। যা বলে বোঝানো যাবে না। মেয়েরাও অনেক খুশি।