উত্তর প্রজন্মের একুশ: ৩০০ টাকায় ৭ শিশুর শহিদ মিনার
২১ ফেব্রুয়ারি ২০২০ ১৭:৫০
জয়পুরহাট: মাটি আর পরিত্যক্ত ইট-টাইলসে শহিদ মিনার বানিয়েছে জয়পুরহাটের সাত শিশু। সাতদিনে বানানো এই শহিদ মিনারেই ভাষা শহিদদের শ্রদ্ধা জানিয়ে ২১শে ফেব্রুয়ারি পালন করেছে তারা। মাটির শহিদ মিনার বানানোর উদ্যোগ নেওয়া এই শিশুদের কেউ স্কুল পড়ুয়া, কেউবা শিশু শ্রমিক। শহিদ মিনার বানাতে তাদের খরচ হয়েছে তিন শ টাকা।
পঞ্চম শ্রেণিতে পড়ুয়া নিরব, তৃতীয় শ্রেণির রিফাত ও হিয়া, ৭ম শ্রেণির সিবা ও হৃদয়ের সঙ্গে শহিদ মিনার গড়তে যোগ দিয়েছে শিশু-শ্রমিক আপন ও আকাশ। সদর উপজেলার খঞ্জনপুর বাজারের ক্লাব ঘরের জায়গায় নির্মিত হয়েছে শহিদ মিনারটি।
২১শে ফেব্রুয়ারির দিন শহিদ মিনার প্রাঙ্গণে গিয়ে দেখা যায়, পাড়ার কোমলমতি শিশুরা শহিদ মিনারে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করছে। ইটের ওপর মাটির প্রলেপ দিয়ে মিনারটি তৈরি করা হয়েছে। স্থাপত্যে দেওয়া হয়েছে কারুকাজ। বসানো হয়েছে স্থানীয় মসজিদের পরিত্যক্ত টাইলস। ছোটোরাই এটি তৈরি করেছে তা বিশ্বাস করতে যেকারও অসুবিধে হবে।
নিরব জানায়, তাদের মহল্লার ভূমি অফিসের শহিদ মিনারটি কয়েক বছর থেকে ভেঙে পড়ে আছে। এটি কেউ মেরামত করে না।
সে বলে, আমাদের শহিদ মিনার ভাঙা থাকায় আমরা শহিদদের শ্রদ্ধা জানাতে পারি না। তাই আমরা কয়েকজন মিলে শহিদ মিনার বানানোর সিদ্ধান্ত নিই। গত ৭দিন পরিশ্রম করে ইট, মাটি, টাইলস এবং সামান্য সিমেন্ট কিনে এই শহিদ মিনার তৈরি করেছি। এতে আমাদের খরচ হয়েছে তিন শ টাকা। যা আমরা সবাই মিলে দিয়েছি।
শিশু-শ্রমিক আকাশ জানায়, মহল্লায় ভেঙে পড়া শহিদ মিনার দেখেই তারা এটির নকশা করেছে।
আর্থিক অনটনের কারণে আকাশ স্কুলে যেতে পারেনি। সে এখন মেকানিক্সের কাজ শিখছে। সব শিশুরা মিলে শহিদ মিনারে ফুল দিয়েছে বলে জানিয়েছে শিক্ষার্থী রিফাত।
স্থানীয় বাসিন্দা আব্দুল মজিদ বলেন, আমাদের মহল্লায় যে শহিদ মিনার ছিল সেটি পুরনো হওয়ায় কয়েক বছর আগে ভেঙে গেছে। কিন্তু শহিদ মিনারটি নির্মাণের ব্যাপারে কেউ এগিয়ে আসেনি। তাই কোমলমতি শিশুরা এভাবে কষ্ট করে শহিদ মিনার বানিয়েছে ভাষা শহিদদের শ্রদ্ধা জানাতে।