শহিদ দিবসের ব্যানারে ৭ বীরশ্রেষ্ঠের ছবি, বিব্রত পুলিশ
২২ ফেব্রুয়ারি ২০২০ ০০:২৫
ঢাকা: আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস (২১শে ফেব্রুয়ারি) উপলক্ষে ভাষা শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি) রমনা এলাকায় ব্যানার টাঙিয়েছিল। ব্যানারটিতে বায়ান্নর ভাষা আন্দোলনের শহিদদের পরিবর্তে একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধে শহিদ সাত বীরশ্রেষ্ঠের ছবি ব্যবহার করা হয়েছে। এতে সৃষ্টি হয়েছে ব্যাপক সমালোচনা। ওই ব্যানারের ছবি এরই মধ্যে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে।
ভাইরাল হওয়া ওই ব্যানার নিয়ে সাধারণ মানুষ পুলিশের দায়িত্বশীলতা এবং দেশের ইতিহাস ও ঐতিহ্য সম্পর্কে সম্মক জ্ঞান নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। আর এমন পরিস্থিতিতে রীতিমত বিব্রত বোধ করেছেন পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা। যদিও সমালোচনার মুখে ডিএমপি ইতোমধ্যে ব্যানারটি সরিয়ে নিয়েছে। সেইসঙ্গে কীভাবে এমনটি হল সেটিও খতিয়ে দেখা হচ্ছে বলে ডিএমপির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে।
এ বিষয়ে ডিএমপির মুখপাত্র মাসুদুর রহমান জানান, ব্যানারটি সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। তবে এটি কীভাবে ঘটেছে তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
ফেসবুকে ভাইরাল হওয়া ওই ব্যানারটির ওপরে লেখা ‘আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস ২০২০।’ তার নিচে স্বাধীনতা যুদ্ধে শহিদ ৭ বীরশ্রেষ্ঠের ছবি। আর ছবির নিচে লেখা, ‘আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসে ভাষা শহীদদের প্রতি আমাদের বিনম্র শ্রদ্ধা।’ তার নিচে ব্লক অক্ষরে লেখা ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ। ব্যানারের ওপরের ডান কোণে মুজিববর্ষের লোগো এবং বাম পাশে ওপরে ও নিচে ডিএমপির দুটি লোগো।
ব্যানারের ছবিটি ফেইসবুকে পোস্ট দিয়ে কায়সার হামিদ নামের একজন লিখেছেন, ‘কারা ভাষা সৈনিক আর কারা বীরশ্রেষ্ঠ- সেটিই যদি রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ একটা সংস্থা বুঝতে না পেরে তাহলে এ জাতির কী হবে?’ তাতে রিফাত হাসান নামের একজন কমেন্টে লিখেছেন, ‘ঘুষ আর স্বজনপ্রীতির মাধ্যমে চাকরি নিলে তো এমনই হবে!’ এছাড়া অনেকেই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছবিটি শেয়ার করেছে। এবং ছবির নিচে যথারীতি নেতিবাচক মন্তব্য লিখে যাচ্ছেন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহারকারীরা।
এদিকে ডিএমপি সূত্র জানিয়েছে, ডিএমপির ব্যানারটি প্রস্তুত এবং বিতরণের দায়িত্বে ছিলেন যুগ্ম-কমিশনার মো. ইমাম হোসাইন। তবে এ বিষয়ে জানতে তাকে একাধিকবার কল করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।
বিষয়টি নিয়ে পুলিশের ভাবমুর্তি ক্ষুন্ন হচ্ছে কি-না? এমন প্রশ্ন নিয়ে ডিএমপির একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা ও পুলিশ সদর দফতরের দুজন উচ্চপদস্থ কর্মকর্তার সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়। তাদের কেউ এ বিষয়ে পরিচয় প্রকাশ করে কিছু বলতে চাননি। এমন ঘটনার খবর শোনার পর থেকে তারা চরম বিব্রত বোধ করছেন বলে জানিয়েছেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ওই কর্মকর্তারা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, এটা নিঃসন্দেহে ডিপার্টমেন্টের ভাবমুর্তি নষ্ট করার অপচেষ্টা। ভুল করেও এতবড় ভুল হয় না। যারা এ কাজটি করেছেন তাদের জ্ঞান নিয়ে যথেষ্ট সন্দেহে রয়েছে। তাদের কারণে এখন পুরো সংস্থাটি সাধারণ মানুষের কাছে প্রশ্নবিদ্ধ। তাই যারা এ কাজের সঙ্গে জড়িত তাদের বিরুদ্ধে অবশ্যই তদন্ত করে ব্যবস্থা নিতে দাবি জানিয়েছেন তারা।