Wednesday 11 September 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

সুইডেনে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস পালন


২২ ফেব্রুয়ারি ২০২০ ১৫:২৩

ঢাকা: সম্মিলিতভাবে সোনার বাংলা গড়ার প্রত্যয়ে সুইডেনের বাংলাদেশ দূতাবাস প্রাঙ্গণে শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস পালন করা হয়েছে। স্টকহোমে অবস্থিত বাংলাদেশ দূতাবাস প্রাঙ্গণে জাতীয় পতাকা উত্তোলন ও অর্ধনমিতকরণের মধ্য দিয়ে শুক্রবার (২১ ফেব্রুয়ারি) সকালে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের কার্যক্রম শুরু হয়।

স্টকহোমের বাংলাদেশ মিশন থেকে প্রথম সচিব সায়মা রাজ্জাকী শনিবার (২২ ফেব্রুয়ারি) এক বার্তায় এ তথ্য জানিয়েছেন।

বার্তায় জানানো হয়, শুক্রবার বিকেলে একুশে ফেব্রুয়ারির তাৎপর্য নিয়ে এক মুক্ত আলোচনা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান আয়োজন করা হয়। দূতাবাসের কর্মকর্তা-কর্মচারীসহ বিপুলসংখ্যক প্রবাসী বাংলাদেশি অনুষ্ঠানে অংশ নিয়ে বিনম্র শ্রদ্ধায় ভাষা শহীদদের স্মরণ করেন। পবিত্র কোরআন থেকে তিলাওয়াত ও অন্যান্য ধর্মগ্রন্থ থেকে পাঠের মাধ্যমে বিকেলে অনুষ্ঠানের সূচনা হয়। এরপর সমবেত কণ্ঠে জাতীয় সঙ্গীত পরিবেশনের পর এক মিনিট নীরবতা পালনের মাধ্যমে মহান ভাষা আন্দোলনের শহীদদের আত্মত্যাগের প্রতি শ্রদ্ধা জানানো হয়।

নীরবতা পালন শেষে আগত সকল অতিথি সুইডেনে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মো. নাজমুল ইসলামের নেতৃত্বে দূতাবাস প্রাঙ্গণে স্থাপিত অস্থায়ী শহীদ মিনারে ফুল দিয়ে ভাষা শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানান। এ সময় নেপথ্যে বাজছিল একুশের কালজয়ী গান ‘আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো একুশে ফেব্রুয়ারি।’ এরপর দিবসটি উপলক্ষে দেওয়া রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী, পররাষ্ট্রমন্ত্রী এবং পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীর বাণী পাঠ করা হয়।

দ্বিতীয় পর্যায়ে মুক্ত আলোচনাপর্বে স্থানীয় বাংলাদেশি কমিউনিটির সদস্যগণ আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের প্রেক্ষাপট, বায়ান্নর ভাষা আন্দোলনের ইতিহাস এবং বাংলাদেশের স্বাধিকার আন্দোলন ও স্বাধীনতা অর্জনে অমর একুশের সুদূরপ্রসারী প্রভাবের নানাদিক নিয়ে আলোচনা করেন।

বক্তারা বলেন, ১৯৫২ সালের ২১শে ফেব্রুয়ারি বাঙালি যে ইতিহাস রচনা করেছিল, সে ইতিহাস এখন বিশ্বময় ছড়িয়ে পড়েছে।

দূতাবাসের এ আয়োজনকে ধন্যবাদ জানিয়ে বক্তারা বলেন, একুশে ফেব্রুয়ারিতে দূতাবাসে আয়োজন বহির্বিশ্বের সামনে ভাষা ও সাংস্কৃতির বৈচিত্র প্রসারের পাশাপাশি বিদেশে বেড়ে ওঠা বাংলাদেশের নতুন প্রজন্মের সামনে বাঙালির সমৃদ্ধ সংস্কৃতি ও ভাষার জন্য আত্মত্যাগের ইতিহাস তুলে ধরতে ভূমিকা রেখেছে।

রাষ্ট্রদূত মো. নাজমুল ইসলাম তার বক্তব্যে গভীর শ্রদ্ধার সঙ্গে মাতৃভাষার মর্যাদা রক্ষায় ভাষা শহীদদের অবদান, ভাষা আন্দোলন ও তৎপরবর্তী সকল আন্দোলনে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের অবদান কৃতজ্ঞচিত্তে স্মরণ করেন।

তিনি বলেন, ‘মাতৃভাষার অধিকার প্রতিষ্ঠার সংগ্রামে ১৯৫২-এর একুশে ফেব্রুয়ারি ছিল ঔপনিবেশিক শাসকগোষ্ঠীর প্রভূসুলভ মনোভাবের বিরুদ্ধে বাঙালির প্রথম প্রতিরোধ এবং ভাষার ভিত্তিতে বাঙালির জাতীয় চেতনার প্রথম উন্মেষ। এরই পথ বেয়ে শুরু হয় বাঙালির স্বাধিকার আন্দোলন এবং একাত্তরের মহান মুক্তিযুদ্ধ। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্ব ও প্রচেষ্টায় ১৯৯৯ সালে ইউনেসকো কর্তৃক একুশে ফেব্রুয়ারি আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের স্বীকৃতি লাভ করায় তার প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে এ গৌরবময় সাফল্য অর্জনের সঙ্গে সম্পৃক্ত অন্যান্যদেরও তিনি শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করেন। একইসঙ্গে রাষ্ট্রদূত বাংলাদেশের আর্থ-সামাজিক অগ্রগতিসমূহের কথা উল্লেখ করে দেশের সামগ্রিক উন্নয়নে সরকার ও বিশ্বের বিভিন্ন দেশে অবস্থিত বাংলাদেশ দূতাবাসসমূহের নিরলস ভূমিকার প্রতি আলোকপাত করেন।

আলোচনার পর বিভিন্ন ভাষায় গাওয়া ‘আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো’ গানটি নিয়ে একটি সংক্ষিপ্ত প্রামাণ্যচিত্র ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ‘মুজিববর্ষ’ উদযাপন ও ২১ শে বইমেলা নিয়ে তৈরি তথ্যচিত্র প্রদর্শন করা হয়। এ ছাড়া, দূতাবাসের মিলনায়তন কক্ষে ১৯৫২ সালের একুশে ফেব্রুয়ারির বিরল ছবি নিয়ে প্রদর্শনীর আয়োজন করা হয়।

সবশেষে স্থানীয় প্রবাসী বাংলাদেশি এবং দূতাবাসের কর্মকর্তাগণ ও তাদের পরিবারের সদস্যগণের অংশগ্রহণে মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান পরিবেশন করা হয় যেখানে দেশাত্মবোধক গান ও কবিতা পরিবেশিত হয়।

আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস মাতৃভাষা সুইডেন স্টকহোম


বিজ্ঞাপন
সর্বশেষ
সম্পর্কিত খবর