অপহরণ-নির্যাতনের মাধ্যমে মুক্তিপণ আদায়, আটক ৪
২২ ফেব্রুয়ারি ২০২০ ১৮:৫০
নারায়ণগঞ্জ: নরসিংদীতে রাসেল হাসান নামে এক ব্যক্তিকে অপহরণের পর দশ লাখ টাকা মুক্তিপণের দাবিতে নির্যাতনের ঘটনায় অপহরণ চক্রের চারজনকে আটক করেছে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব)।
শুক্রবার (২১ ফেব্রুয়ারি) রাত থেকে শনিবার (২২ ফেব্রুয়ারি) সকাল পর্যন্ত অভিযান চালিয়ে নরসিংদী সদর এলাকা থেকে তাদের আটক করা করা হয়। এরা হলেন-রাসেল হাসানের স্ত্রী মারিয়া আক্তার মন্টি, মন্টির সাবেক স্বামী অভিত মিয়া, মন্টির বাবা বাদল মিয়া ও বড় ভাই পাপ্পু মিয়া।
শনিবার দুপুরে নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জে র্যাব-১১ সদর দফতরে সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানানো হয়।
র্যাব-১১ এর সিনিয়র সহকারি পরিচালক মো. আলেপ উদ্দিন জানান, আটক চারজন সংঘবদ্ধভাবে অপহরণ করেন। এরা বিভিন্ন এলাকার বিত্তবান ব্যক্তিদের কৌশলে অপহরণের পর শারীরিক নির্যাতন করে পরিবারের কাছ থেকে মুক্তিপণ বাবদ মোটা অংকের অর্থ হাতিয়ে নেয়।
রাসেলের স্ত্রী মন্টি আগেও চার পাঁচটি বিয়ে করেছেন জানিয়ে র্যাবের এই কর্মকর্তা বলেন, সেই স্বামীদেরও তিনি একইভাবে নির্যাতন ও জিম্মি করে অর্থ হাতিয়ে নিয়েছেন বলে র্যাবের অনুসন্ধানে বেরিয়ে এসেছে। রাসলের সঙ্গে পারিরারিক বিরোধের জের ধরেই মন্টি, তার বাবা ও বড় ভাইয়ের পরিকল্পনা অনুযায়ী অর্থ আদায় করতে তাকে অপহরণ করা হয়। মূলত সৌদি প্রবাসী রাসেলের অর্থ হাতিয়ে নিতেই মন্টি তাকে বিয়ে করেছিলেন।
ঘটনা প্রসঙ্গে র্যাব জানায়, গত ২৮ ডিসেম্বর ভুয়া ডিবি পুলিশ পরিচয়ে অপহরণকারি চক্রের৭/৮ জন রাসেলকে নরসিংদি আদালতের সামনে থেকে মাইক্রোবাসে তুলে নিয়ে যায়। পরে তাকে অচেতন করে একটি ফ্ল্যাট বাসায় আটকে ১০ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে শারীরিক নির্যাতন করে। এক পর্যায়ে রাসেলের পরিবারের সঙ্গে দুই লাখ টাকায় রফা হয়। বিকাশের মাধ্যমে ষাট হাজার টাকা আদায় করে অপহরণকারিরা। অবশিষ্ট টাকা আদায় করতে পরদিন ২৯ ডিসেম্বর তারা রাসেলকে মাইক্রোবাসে তুলে নিয়ে বের হয়। মাঝপথে রাসেল প্রকৃতির ডাকে সাড়া দেওয়ার কথা বললে তাকে গাড়ি থেকে নামানো হয়। এসময় রাসেল ডাকাত বলে চিৎকার দিলে আশপাশের লোকজন এগিয়ে এলে অপহরণকারিরা তাকে রাস্তায় ফেলে রেখে পালিয়ে যায়। পরে অপহরণকারিরা রাসেলকে নির্যাতনের ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে ভাইরাল করে ও মামলা না করতে নানাভাবে হুমকি দিতে থাকে।
কিছুদিন চিকিৎসার পর সুস্থ হয়ে রাসেল নারায়ণগঞ্জে র্যাব-১১ কার্যালয়ে হাজির হয়ে অপহরনের ঘটনা বর্ণনা দিয়ে লিখিত অভিযোগ করেন। সেই অভিযোগের ভিত্তিতে এই চারজনকে আটক করা হলো।