একুশের শপথে সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়ার অঙ্গীকার আ.লীগের
২২ ফেব্রুয়ারি ২০২০ ২২:২৯
ঢাকা: বাঙালি জাতি আজ আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার নেতৃত্বে অসাধ্য সাধন করে অভীষ্ট লক্ষ্যে পৌঁছেছে। তাই একুশের চেতনার শপথে বঙ্গবন্ধু কন্যার নেতৃত্বে উন্নত সমৃদ্ধ আধুনিক বাংলাদেশ গড়ার অঙ্গীকার করেছে আওয়ামী লীগ। শনিবার (২২ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে ২১ফেব্রুয়ারি আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের আলোচনা সভায় এই অঙ্গীকার ব্যক্ত করেন দলের নেতারা।
আওয়ামী লীগের উপদেষ্টাপরিষদ সদস্য সাবেক শিল্পমন্ত্রী আমির হোসেন আমু বলেন, ‘২১ ফেব্রুয়ারি আজ আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসাবে সারা দুনিয়ায় পালিত হচ্ছে। এই গৌরবের অধিকারী বঙ্গবন্ধু কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি আজকে সারা বাঙালি জাতিকে গৌরবান্বিত করেছেন। আজকে সারা দুনিয়া অবাক হয়ে চিন্তা করে যে একটি দেশের একটি জাতি ভাষার জন্য জীবন দিতে পারে। এইটাই একটি নতুন ইতিহাস পৃথিবীর বুকে। সেই ইতিহাসের ধারক এবং বাহক হলেন বঙ্গবন্ধু এবং তার দল।’
দলের উপদেষ্টাপরিষদের আরেক সদস্য সাবেক বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ বলেন, ‘আজকের এই বাংলাদেশ উন্নয়নের পথে এগিয়ে চলেছে। বঙ্গবন্ধু নেই, তিনি দুইটি স্বপ্ন নিয়ে তার রাজনীতি করেছিলেন। একটি স্বাধীনতা, আরেকটি অর্থনৈতিক মুক্তি। বঙ্গবন্ধু স্বাধীনতা দিয়ে গেছেন, আর অর্থনৈতিক মুক্তির পথে বঙ্গবন্ধু কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনা তা বাস্তবায়নের পথে এগিয়ে চলেছেন। বঙ্গবন্ধু গর্ব করে বলতেন, একদিন আমার বাংলা হবে সুজলা সুফলা শস্য শ্যামলা সোনার বাংলা। সেদিন বেশি দূরে নয়। ব ঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে সেই লক্ষ্যে পৌঁছাবে। এটিই আমাদের একুশে ফেব্রুয়ারির অঙ্গীকার।’
আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য বেগম মতিয়া চৌধুরী বলেন, ‘তিনি শুধু প্রধানমন্ত্রী নন। আওয়ামী লীগের কম্পাসের কাঁটা এবং চালিকাশক্তি। সেই শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আজকে আমাদের এই আলোচনা সভা।
বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার দিকে ইঙ্গিত করে সাবেক এই কৃষিমন্ত্রী বলেন, ‘আমি তুলনায় যাব না। আসলে আমার খুব খারাপ লাগে। কিসের তুলনা অন্যান্যদের সঙ্গে? একটাই বলি, ওই যে হাতিরঝিলটা, পাশ দিয়ে আমরা যেতে পারতাম না। যা-তা গন্ধ। আজকে হাতিরঝিল দৃষ্টিনন্দন। সারা পৃথিবীর দৃষ্টি আকর্ষণ করে। আমি খুব নিশ্চিত, বেগম জিয়ার মাথায় শ্যাম্পুর পর শ্যাম্পু দিয়া ধুইলেও এই আইডিয়া তার মাথা থেকে বাইর হবে না। কাজেই এইখানেই পার্থক্য।’
‘শহিদদের আত্মত্যাগ বৃথা যেতে দেব না, এটাই ভাষা দিবসে প্রতিজ্ঞা’
আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য সাবেক এলজিআরডি প্রতিমন্ত্রী জাহাঙ্গীর কবির নানক বলেন, ‘জাতির পিতার নেতৃত্বে বাঙালি জাতি মরণকে বরণ করে মৃত্যু ঝুঁকিকে আলিঙ্গন করে। তিনি এই বাঙালির অন্ন বস্ত্র শিক্ষা চিকিৎসার নিশ্চয়তার অভীষ্ট লক্ষ্যে পৌঁছে দিয়েছেন। ৬০’দশকে আমরা একটি স্লোগান দিয়েছিলাম, অন্ন চাই, বস্ত্র চাই, বাঁচার মত বাঁচতে চাই, শিক্ষা চাই, চিকিৎসা চাই, বাঁচার মত বাঁচতে চাই। সেই বাংলাদেশে আবার ৭৫’র পরে আমরা স্লোগান দিয়েছিলাম, আমরা ভোটের অধিকার চাই, আমরা অন্নের নিশ্চয়তা চাই, আমরা বস্ত্রের নিশ্চয়তা চাই, আমরা শিক্ষার নিশ্চয়তা চাই, আমরা চিকিৎসার নিশ্চয়তা চাই, আমরা সামরিক জান্তার কবল থেকে মুক্তি চাই। কিন্তু আজ শেখ হাসিনার নেতৃত্বে এই অসাধ্য সাধন করে বাঙালি জাতি তার অভীষ্ট লক্ষ্যে পৌঁছেছে। তাই শেখ হাসিনার নেতৃত্বে একুশের চেতনায় গড়বো আধুনিক সমৃদ্ধ বাংলাদেশ, আজকের দিনে এই হোক আমাদের শপথ।’
সভাপতিমণ্ডলীর আরেক সদস্য আব্দুর রহমান বলেন, ‘প্রিয় নেত্রী আপনার আগামী দিনের এই লক্ষ্য অর্জনের যেকোনো সংগ্রামে আওয়ামী পরিবারের নেতাকর্মীরা পাশে দাঁড়িয়ে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে হলেও সেই লক্ষ্য অর্জনে আপনার হাত শক্তিশালী করবে।’
আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক তথ্যমন্ত্রী হাছান মাহমুদ বলেন, ‘বাংলাদেশের উন্নয়ন অগ্রগতি আরও বেশি হতে পারত, যদি আমাদের দেশে বিএনপি-জামায়াত জোটের এই ধ্বংসাত্মক রাজনীতি না থাকত। বিএনপি প্রতিদিন বলে বেগম জিয়ার শরীর খারাপ। তিনি দাঁড়াতে পারছেন না, বসতে পারছেন না। দুঃখজনকভাবে বিএনপির রাজনীতিটা বেগম জিয়ার হাঁটুর ব্যথা আর কোমরের ব্যথার মধ্যে আটকে আছে। দুর্নীতির দায়ে শাস্তিপ্রাপ্ত আসামি হয়ে সাজাভোগ করছে, সেটির মধ্যে এখন আটকে আছে। জনগণের কোনো বিষয় নিয়ে তাদের কোনো বিবৃতি নাই।’
দলের অপর যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম শহীদ দিবসে নেতাকর্মীদের প্রতি শপথ নেওয়ার আহ্বান জানিয়ে বলেন, ‘যারা বাংলাদেশের অস্তিত্ব বিপন্ন করতে চায়, যারা মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে বিপন্ন করতে চায়। যারা বাংলাদেশকে লুন্ঠন করে সম্পদের পাহাড় গড়ে নিজেদেরকেই প্রতিষ্ঠা করতে চায়, যারা নিজের স্বার্থ এবং নিজেদেরকে প্রতিষ্ঠা করার মধ্য দিয়ে যারা বাঙালি জাতিকে শোষণ করতে চায়, তাদের বিরুদ্ধে আমাদের লড়াই সংগ্রাম করতে হবে।’
সভার শুরুতে ভাষা শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে এক মিনিট দাঁড়িয়ে নীরবতা পালন করা হয়।
আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় আরও বক্তব্য দেন- যুক্তরাষ্ট্রের ইউনিভার্সিটি অব ডেনভারের অর্থনীতির শিক্ষক অধ্যাপক হায়দার আলী খান, মহিলা বিষয়ক সম্পাদক মেহের আফরোজ চুমকি, কার্যনির্বাহী সদস্য মেরিনা জামান কবিতা, ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণের সভাপতি শেখ বজলুর রহমান, আবু আহম্মেদ মান্নাফী এবং ভাষা শহীদদের স্মরণে কবিতা আবৃত্তি করেন কবি তারিক সুজাত। আলোচনা সভা যৌথভাবে পরিচালনা করেন দলের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক আবদুস সোবহান গোলাপ ও উপ-প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক আমিনুল ইসলাম আমিন।