Monday 25 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

১২ ভাষার শিল্পীদের অংশগ্রহণে নাইজেরিয়ায় মাতৃভাষা দিবস উদযাপন


২৩ ফেব্রুয়ারি ২০২০ ০৮:৩৬

নাইজেরিয়ায় বাংলাদেশ হাইকমিশন যথাযথ মর্যাদায় “শহীদ দিবস” ও “আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস” পালন করেছে। হাইকমিশন মিলনায়তনে শুক্রবার, ২১ ফেব্রুয়ারী ২০২০ সন্ধ্যা ৭ ঘটিকায় একটি আলোচনা সভা ও বহু ভাষা-ভিত্তিক একটি বর্ণিল সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।

সভার শুরুতেই ভাষা শহীদদের স্মরণে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়। এরপর দিবসটির উপরে একটি প্রামান্যচিত্র প্রদর্শন করা হয়। স্বাগত বক্তৃতায় হাইকমিশনার জনাব মোঃ শামীম আহসান বলেন যে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসটি সারা বিশ্বে ভাষার বৈচিত্র্য উদ্যাপনের একটি প্রেক্ষাপট তৈরী করেছে। এ প্রসঙ্গে তিনি মহান ভাষা আন্দোলনে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এর নেতৃস্থানীয় ভূমিকা ও ভাষা শহীদদের আত্মত্যাগের কথা তুলে ধরেন। ভাষা আন্দোলনের ঐতিহাসিক গুরুত্ব তুলে ধরে তিনি আরো বলেন যে এই আন্দোলনের ধারাবাহিক অর্জনই বাংলাদেশের স্বাধীনতা।

বিজ্ঞাপন

অনুষ্ঠানে আবুজায় ইউনেস্কোর আঞ্চলিক প্রতিনিধি জনাব ইয়ো ইদো বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন। তিনি দিবসটির তাৎপর্য তুলে ধরতে গিয়ে ইউনেস্কোর ভূমিকার কথা উল্লেখ করার সাথে সাথে ১৯৫২ সালে মহান ভাষা আন্দোলনে বাংলাদেশী তরুণদের আত্মত্যাগের কথা তুলে ধরেন। এই মহান ভাষা আন্দোলন ও আত্মত্যাগের ভিত্তিতে ইউনেস্কো, ২১শে ফেব্রুয়ারীকে “আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস” হিসেবে স্বীকৃতি প্রদান করে বলে তিনি উল্লেখ করেন।

ভারতের হাইকমিশনার জনাব আভেয় ঠাকুর তার বক্তৃতায় মাতৃভাষার মর্যাদা রক্ষার জন্য এই অনন্য আত্মত্যাগের মধ্য দিয়ে দিবসটির আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি পাওয়ার ক্ষেত্রে বাংলাদেশের বিশাল অবদানের কথা উল্লেখ করে তিনি বাংলাদেশকে অভিনন্দন জানান।

বিজ্ঞাপন

নাইজেরিয়ার ন্যাশনাল আর্টস এন্ড কালচার এর মহাপরিচালক জনাব ওতুনবা ওলেসেগুন রানসুয়ে আলোচনায় অংশ নেন। দিবসটির মূল চেতনার কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন যে বিশ্বের বিভিন্ন ভাষাভাষী মানুষের মধ্যে শান্তি ও পারষ্পরিক বোঝাপড়া সৃষ্টির ক্ষেত্রে ইউনেস্কোর ঘোষণার তাৎপর্য অনেক।

বহু ভাষা ও সংস্কৃতি-ভিত্তিক বর্ণিল সাংস্কৃতিক আয়োজনে বিদেশী শিল্পীরা (বাংলাদেশ, চীন, কলম্বিয়া, ভারত-হিন্দি ও তামিল, ইন্দোনেশিয়া, দক্ষিণ কোরিয়া, মালয়েশিয়া, নেপাল, নাইজেরিয়া-ʿইউরোবা, শ্রীলঙ্কা এবং ইউক্রেন) এবং হাইকমিশনের পরিবার, স্থানীয় প্রবাসী বাংলাদেশ কমিউনিটি ও পশ্চিম বঙ্গের বাঙালীরা নাচ, গান, আবৃত্তি ও বাঁশির মাধ্যমে সবাইকে মুগ্ধ করেন এবং একটি বহুভাষা-বহুজাতির সম্মিলনের বিরল আবহের সৃষ্টি হয়। অনুষ্ঠানে অন্যান্য শিল্পীদের সাথে ইন্দোনেশিয়ার রাষ্ট্রদূত ও অন্যান্য দেশের কূটনীতিকদের পরিবেশনা নতুন একটি মাত্রা যোগ করে।

নাইজেরিয়ার উর্ধ্বতন সরকারী কর্মকর্তাবৃন্দ, ভারত, ইরান, ইন্দোনেশিয়া, মালয়েশিয়া, ফিলিপিনস, সিরিয়া, শ্রীলঙ্কা, ভেনিজুয়েলা এর রাষ্ট্রদূত/হাইকমিশনার, সংযুক্ত আরব আমিরাত ও ইউক্রেনের চার্জ দ্যা এ্যাফেয়ার্স, কলম্বিয়ার অনারারী কনসাল জেনারেল, বিভিন্ন দেশের উল্লেখযোগ্য সংখ্যক কূটনীতিক, সুশীল সমাজের প্রতিনিধি, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের প্রতিনিধি, পশ্চিমবংগের বাঙ্গালী কমিউনিটির সদস্যবৃন্দ এবং প্রবাসী বাংলাদেশীরা সপরিবারে সদস্যবৃন্দ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন। পরিশেষে, ঐতিহ্যবাহী বাংলাদেশী খাবারে অতিথিদের আপ্যায়ন করা হয়।

কর্মসূচীর অংশ হিসেবে পূর্বে হাইকমিশনে সম্প্রতি নির্মিত শহীদ মিনারে পুষ্পস্তবক অর্পনের মাধ্যমে “শহীদ দিবস” ও “আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস”-এর কর্মসূচী শুরু করা হয়। সকালে হাইকমিশনে আনুষ্ঠানিকভাবে পতাকা অর্ধনমিত করা হয় এবং দিবসটি উপলক্ষে প্রেরিত মহামান্য রাষ্ট্রপতি, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, মাননীয় পররাষ্ট্র মন্ত্রী ও মাননীয় পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীর বাণী পাঠ করা হয়। বাংলা একাডেমীর বইমেলায় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় কর্তৃক প্রথমবারের মতো প্যাভিলিয়নের উপরে একটি প্রামান্যচিত্র প্রদর্শন করা হয়। এরপর ভাষা আন্দোলন ও মুক্তিযুদ্ধে শহীদদের রুহের মাগফেরাত ও দেশের অব্যাহত শান্তি ও সমৃদ্ধি কামনা করে বিশেষ মোনাজাত করা হয়।

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর