Thursday 18 Sep 2025
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

বিটিআরসিতে গ্রামীণফোনের হাজার কোটি টাকা জমা


২৩ ফেব্রুয়ারি ২০২০ ১৫:৫৩ | আপডেট: ২৩ ফেব্রুয়ারি ২০২০ ১৮:১২
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

ঢাকা: আদালতের নির্দেশ অনুযায়ী টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনে (বিটিআরসি) বকেয়া রাজস্বের এক হাজার কোটি টাকা জমা দিয়েছে গ্রামীণফোন।

রোববার (২৩ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে বিটিআরসি মিলনায়তনে কমিশনের চেয়ারম্যান জহুরুল হকের হাতে এক হাজার কোটি টাকার পে-অর্ডার তুলে দেয় গ্রামীণফোন কর্তৃপক্ষ। এ সময় গ্রামীণফোনের পরিচালক ও হেড অব রেগুলেটরি অ্যাফেয়ার্স হোসেন সাদাতের নেতৃত্বে প্রতিষ্ঠানটির চার সদস্যের প্রতিনিধিদল উপস্থিত ছিল।

পে অর্ডার হস্তান্তর শেষে বিটিআরসি চেয়ারম্যান জহুরুল হক বলেন, ‘আমাদের মাঝে একটু ভুল বোঝাবুঝি তৈরি হয়েছিল। তাদের অর্থ প্রদানের মাধ্যমে আজ সংবিধান রক্ষা হলো, সুপ্রিম কোর্টের আদেশ রক্ষা হলো। সরকার তার প্রাপ্য অর্থের কিছু হলেও পেল, যা জনগণের টাকা। টাকা দেওয়ার জন্য গ্রামীণফোনকে ধন্যবাদ। দেরি হলেও তারা ব্যাপারটি বুঝতে পেরেছে।’

বিজ্ঞাপন

বিটিআরসি গ্রামীণফোনকে কখনও শত্রু মনে করেনি উল্লেখ করে চেয়ারম্যান বলেন, ‘তাদের অপারেটর মনে করতাম। রেগুলেটর হিসেবে তাদের যা পওনা তা সব সময় দিতে প্রস্তুত ছিলাম। কিছু কিছু কাজ বন্ধ রয়েছে আইনগত কারণে। নিজেদের কোনো ইচ্ছা বা অভিপ্রায় ছিল না যে, গ্রামীণফোনের কোনো ক্ষতি হোক।’

এনওসি প্রত্যাহারের বিষয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নে বিটিআরসি চেয়ারম্যান, ‘বিটিআরসিকে আদালত যে নির্দেশ দেবে সে অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আইনের বাইরে আমরা যাব না।’

এ সময় গ্রামীনফোনের হেড অব রেগুলেটরি অ্যাফেয়ার্স হোসেন সাদাত বলেন, ‘দেশের আইনের প্রতি আমরা শ্রদ্ধাশীল, নির্দেশনা অনুযায়ী এক হাজার কোটি টাকা জমা দিলাম। আমার বলে আসছি, অডিটের বিষয়ে আমাদের একটু আপত্তি আছে। সেই পজিশনটা স্টিল অব্যাহত রাখছি। আমরা মনে করি যে সমস্যা রয়েছে তা আলোচনা ও লিগ্যাল প্রসেসের মাধ্যমে সমাধান হবে। আমরা একটা কাঠামোগত অবস্থানে আসব বলে বিশ্বাস করি।’

গ্রামীণফোনের এই কর্মকর্তা আরও বলেন, ‘আমরা সব সময় আলোচনা অব্যাহত রেখেছি। আমরা মনে করি আলোচনা অব্যাহত রাখতে পারলে সব পক্ষ মিলে একটা সুন্দর সমাধানে আসতে পারব।’

এদিকে, ডাক ও টেলিযোগাযোগমন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার তার ফেসবুক স্ট্যাটাসে লিখেছেন, ‘সুখবরটা পেলামই। গ্রামীণফোন এক হাজার কোটি টাকা জমা দিয়েছে।’

এর আগে গত বৃহস্পতিবার সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ এক আদেশে সোমবারের (২৪ ফেব্রুয়ারি) মধ্যে বিটিআরসিতে এক হাজার কোটি টাকা পরিশোধের নির্দেশ দেয়। পরে শুক্রবার গ্রামীণফোন এক বিবৃতিতে জানায়, রোববার এই টাকা জমা দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তারা। সেই সিদ্ধান্তানুযায়ী রোববার এক হাজার কোটি টাকার পে অর্ডার জমা দিল গ্রামীণফোন।

২০১৯ সালের নভেম্বরে গ্রামীণফোনকে আপাতত দুই হাজার কোটি জমা দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছিল আপিল বিভাগ। ওই সময় তিন মাসের মধ্যে এই টাকা পরিশোধ করতে বলা হয়। ২৩ ফেব্রুয়ারির মধ্যে এই টাকা জমা দেওয়ার সময় শেষ হওয়ার কথা ছিল। নির্দিষ্ট সময়ে টাকা জমা দেওয়া না হলে গ্রামীণফোনের কাছে বিটিআরসির দাবি করা সাড়ে ১২ হাজার কোটি টাকার ওপর হাইকোর্টের জারি করা স্থগিতাদেশ প্রত্যাহার হয়ে যাবে বলেও তখন সতর্ক করে দেন আদালত।

পরে উচ্চ আদালতের দুই হাজার কোটি টাকা দেওয়ার নির্দেশনার বিরুদ্ধে গ্রামীণফোন রিভিউ আবেদন করে। বৃহস্পতিবার শুনানি শেষে আদালত ১ হাজার কোটি টাকা পরিশোধের নির্দেশ দেয়। তার আগের দিন বুধবার অডিট আপত্তির দাবির বিষয়ে আলোচনা চালিয়ে যেতে বিটিআরসিতে ১০০ কোটি টাকা জমা দিতে (১৯ ফেব্রুয়ারি) গিয়েছিল গ্রামীণফোন। তবে তা ফিরিয়ে দেয় বিটিআরসি।
প্রসঙ্গত, অডিট আপত্তির ভিত্তিতে গ্রামীণফোনের কাছে ১২ হাজার ৫৭৯ কোটি ৯৫ লাখ টাকার বকেয়া রাজস্ব দাবি করে আসছে বিটিআরসি। এর মধ্যে বিটিআরসির নিজস্ব পাওনা ৮ হাজার ৪৯৪ কোটি টাকা এবং জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের পাওনা ৪ হাজার ৮৬ কোটি টাকা।

এই অর্থ আদায়ে দফায় দফায় বৈঠক হয়েছে। নেওয়া হয়েছে নানা পদক্ষেপ। চিঠি দিয়ে বকেয়া অর্থ দাবির পর তা পরিশোধ না করায় ২০১৯ সালের এপ্রিলে গ্রামীণফোন (জিপি) ও রবি আজিয়াটার (রবি) ব্যান্ডউইথ সক্ষমতা কমিয়ে দেওয়া হয়েছিল। বকেয়া আদায় না হওয়া পর্যন্ত অপারেটর দুটিকে কোনো এনওসি (নতুন সেবা প্রদান) করার সিদ্ধান্তও আসে। তৃতীয় ধাপ হিসেবে মোবাইল ফোন অপারেটর গ্রামীণফোন ও রবির টুজি ও থ্রিজি লাইসেন্স কেন বাতিল করা হবে না— সে বিষয়ে কারণ দর্শানোর নোটিশ দিয়েছিল বিটিআরসি। সর্বশেষ ধাপ হিসেবে গ্রামীণফোন ও রবিতে প্রশাসক বসানোর ইঙ্গিত দেয় নিয়ন্ত্রণ কমিশন। সেইসঙ্গে চলতে থাকে দেন-দরবার। গেল বছরের ১৮ সেপ্টেম্বর সচিবালয়ে অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল ও ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বারের সঙ্গে মোবাইল ফোন অপারেটগুলোর এক বৈঠকে সরকার নিয়ন্ত্রণমূলক ব্যবস্থা থেকে সরে আসার কথাও জানায়। একই সঙ্গে আদালতে আইনি প্রক্রিয়াও চলতে থাকে।

বিজ্ঞাপন

কুয়াকাটায় আইনজীবীকে কুপিয়ে জখম
১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৫ ০০:২৩

আরো

সম্পর্কিত খবর