আবারও প্রমাণিত, সালমানকে কেউ খুন করেনি: সামিরার বাবা
২৪ ফেব্রুয়ারি ২০২০ ১৮:১৯
চট্টগ্রাম ব্যুরো: নব্বইয়ের দশকের সাড়া জাগানো চিত্রনায়ক সালমান শাহ’র মৃত্যুকে আত্মহত্যা বলে তদন্ত প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। এই প্রতিবেদন নিয়ে সন্তুষ্টি জানিয়ে সালমান শাহ’র শ্বশুর শফিকুল হক হীরা বলেছেন, ’২৪ বছর পর আবারও প্রমাণিত হয়েছে, সালমানকে কেউ খুন করেনি। সে আত্মহত্যা করেছিল।’
২৪ বছর ধরে সালমান শাহ’র অমিমাংসিত মৃত্যুরহস্য নিয়ে তার ভক্তদের মধ্যে নানা ধরনের জল্পনাকল্পনা ছিল। সালমানকে খুনের অভিযোগে বারবার কাঠগড়ায় দাঁড়াতে হয়েছিল তার স্ত্রী সামিরার পরিবারকে। এমনও আলোচনা আছে, সামিরার বাবা বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের সাবেক অধিনায়ক শফিকুল হক হীরার নির্দেশে সালমানকে খুন করা হয়েছে। এইসময়ের মধ্যে সামিরাকেও বারবার নানামুখী অভিযোগের মুখোমুখি হতে হয়েছে।
তবে সোমবার (২৪ ফেব্রুয়ারি) সালমান শাহ’ মৃত্যুর ঘটনায় দায়ের হওয়া মামলার তদন্ত প্রতিবেদন তুলে ধরে পিবিআই প্রধান বনজ কুমার মজুমদার জানিয়েছেন, পাঁচ কারণে সালমান আত্মহত্যা করেছিলেন বলে তারা তদন্তে পেয়েছেন। তাকে হত্যার কোনো প্রমাণ তারা তদন্তে পাননি।
সার্বিক বিষয়ে এখনই মুখ খুলতে নারাজ চট্টগ্রামে বসবাসরত সামিরার পরিবার। শফিকুল হক হীরা জানিয়েছেন, আইনজীবীর পরামর্শে সিদ্ধান্তে তারা এখনই এ বিষয়ে বিস্তারিত কিছু বলবেন না। তবে পিবিআইয়ের তদন্ত প্রতিবেদন আরও বিশ্লেষণ করে সামিরা সংবাদ সম্মেলন করতে পারেন। এ বিষয়ে সামিরা এবং তার মা সিদ্ধান্ত নেবেন।
আরও পড়ুন: পিবিআইয়ের প্রতিবেদন প্রত্যাখ্যান সালমান পরিবারের
২৪ বছর ধরে অভিযোগের কাঠগড়ায় থাকা হীরা নিজের প্রতিক্রিয়া জানিয়ে সারাবাংলাকে বলেন, ‘পিবিআই অনেক খুঁটিনাটি তদন্ত করেছে। তারা প্রমাণ করেছে যে, সালমান শাহকে কেউ খুন করেনি। সে আত্মহত্যা করেছিল। আমরাও ২৪ বছর ধরে সেটাই বলে আসছি। ২৪ বছর পর সেটা প্রমাণ হয়েছে। আমি পিবিআইয়ের তদন্তে সন্তুষ্ট। আমার পরিবারও সন্তুষ্ট।’
তদন্ত প্রতিবেদনে পিবিআইয়ের উল্লেখ করা আত্মহত্যার পাঁচ কারণের মধ্যে একটি হচ্ছে- সেই সময়ের জনপ্রিয় সালমান-শাবনূর জুটির শাবনূরকে বিয়ে করতে চেয়েছিলেন সালমান। কিন্তু সামিরা রাজি ছিলেন না বলে পিবিআইকে জানিয়েছেন। এর থেকে পারিবারিক দাম্পত্য কলহ তীব্র রূপ পায়। একপর্যায়ে সালমান আত্মহত্যা করেন।
শাবনূরের বিষয়ে জানতে চাইলে শফিকুল হক হীরা সারাবাংলাকে বলেন, ‘শাবনূরের বিষয়ে আমি আর কি বলব ? এই মেয়েকে তো আমি ভালো করে চিনিই না। কখনো আমার সঙ্গে সেভাবে দেখাও হয়নি। যদি কিছু বলতে হয়, সামিরা যদি প্রেস কনফারেন্স করে, তখন বলবে। ২৪ বছর ধরে আমার মেয়েকে তো অনেক অপবাদ নিতে হয়েছে। আমার মেয়ের ২৪ বছর তো চাইলেই কেউ আর ফিরিয়ে দিতে পারবে না। তবে ব্যক্তিগতভাবে কারও ওপর আমাদের কোনো রাগ-ক্ষোভ নেই।’
চিত্রনায়ক শাহরিয়ার চৌধুরী ইমন ওরফে সালমান শাহ’র মরদেহ ১৯৯৬ সালের ৬ সেপ্টেম্বর রাজধানীর ইস্কাটন রোডে নিজের ফ্ল্যাট থেকে পুলিশ উদ্ধার করেছিল। পুলিশের গোয়েন্দা ইউনিট (ডিবি), সিআইডি ঘুরে মামলাটি তদন্তের দায়িত্ব পায় পিবিআই। ২০১৭ সালে সালমান-সামিরা পরিবারের ঘনিষ্ঠ যুক্তরাষ্ট্রের পেনসিলভেনিয়ায় বসবাসরত রাবেয়া সুলতানা রুবি নামে এক নারীর ফেসবুকে এক ভিডিওবার্তা প্রকাশের পর এই মামলায় সামিরার পরিবারের সম্পৃক্ততার আলোচনা আরও জোরালো হয়। ওই নারী বলেন, ‘সালমান শাহ আত্মহত্যা করে নাই। সালমান শাহকে খুন করা হইছে, আমার হাজব্যান্ড এটা করাইছে আমার ভাইরে দিয়ে। সামিরার ফ্যামিলি করাইছে আমার হাজব্যান্ডকে দিয়ে। আর সব ছিল চায়নিজ মানুষ।’