কভিড-১৯: দ. কোরিয়ায় বাংলাদেশিদের জন্য দূতাবাসের ভিডিও বার্তা
২৫ ফেব্রুয়ারি ২০২০ ১৫:১০
ঢাকা: দক্ষিণ কোরিয়ায় সর্বোচ্চ সতর্কতা জারির দুদিন পর কভিড-১৯ ভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা ৮৯৩ জনে দাঁড়িয়েছে। এছাড়া এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে দেশটিতে এ পর্যন্ত মারা গেছে ৮ জন। আর সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন ২৩ জন। বিভিন্ন শহরে দ্রুত ভাইরাসটি ছড়িয়ে পড়ায় মৃত্যুপুরীতে পরিণত হচ্ছে দক্ষিণ কোরিয়া। বর্তমানে কোরিয়ায়র নাগরিকরা গৃহবন্দির মতো জীবন-যাপন করছে। অধিকাংশ দোকানপাট বন্ধ রয়েছে। রাস্তা এবং বাজারগুলোও শূন্য।
সোমবার (২৫ ফেব্রুয়ারি) কোরিয়ায় অবস্থানরত বাংলাদেশি নাগরিকদের সর্বোচ্চ সতর্কতা মেনে চলার জন্য বাংলাদেশ দূতাবাসের ফেসবুক পেজ থেকে ভিডিও বার্তা প্রকাশ করেছেন দেশটিতে নিযুক্ত রাষ্ট্রদূত আবিদা ইসলাম।
ভিডিও বার্তায় আবিদা ইসলাম বলেন, ‘কভিড-১৯ ভাইরাসের প্রভাবের কারণে দক্ষিণ কোরিয়ায় এই রোগে সংক্রমিত রোগীর সংখ্যা আশঙ্কাজনক হারে বাড়ছে। গত ২০ জানুয়ারি আমরা এখানে প্রথম এই ভাইরাসে আক্রান্তের কথা জানতে পারি। পরবর্তী এক মাসে অর্থাৎ ১৯ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত এই রোগের সংক্রমিত রোগীর সংখ্যা ছিল ৫১ জন। কিন্ত গত পাঁচ দিনে তা ৮০০ জন ছাড়িয়ে গেছে।’
তিনি বলেন, ‘প্রতি ঘণ্টায় এই ধরনের রোগীর সংখ্যা বেড়েই চলেছে। এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে এরই মধ্যে দক্ষিণ কোরিয়ার আটজন নাগরিক মারা গেছেন। এ দেশের সরকার ভাইরাস সংক্রান্ত সর্বোচ্চ সতর্কতা জারি করেছে। তারা এই রোগের কেন্দ্রস্থল হিসেবে দেগু এবং চেওংদো শহরকে চিহ্নিত করেছেন। তারা এই দুটি শহরকে স্পেশাল কেয়ার অঞ্চল হিসেবে ঘোষণা করেছে। তবে এই ভাইরাসের প্রকোপ বিভিন্ন শহরে ছড়িয়ে পড়েছে। সরকার এই সংকট থেকে উত্তরণের জন্য এদেশে বসবাসকারী সব দেশি ও বিদেশি নাগরিকদের সহযোগিতা কামনা করেছেন।’
রাষ্ট্রদূত বলেন, ‘বাংলাদেশি ভাই-বোনেরা সুস্থ রয়েছেন। কোনো বাংলাদেশি নাগরিক এ রোগে আক্রান্ত হয়েছেন- এমন কোনো তথ্য এখন পর্যন্ত পাওয়া যায়নি। তবে দূতাবাসের পক্ষ থেকে আপনাদের সবাইকে সর্বোচ্চ সতর্কতা অবলম্বন করার জন্য অনুরোধ জানাচ্ছি।’
তিনি বলেন, ‘কারও যদি এই রোগের কোনো লক্ষণ দেখা যায়, তবে দেরি না করে কল সেন্টারের ১৩৩৯ নম্বরে এবং স্থানীয় হাসপাতালে যোগাযোগ করুন। আপনার ভিসা সংক্রান্ত কোনো জটিলতা থাকলে ভয় পাবেন না, আতঙ্কিত হবেন না। এজন্য আপনাকে দেশে পাঠানো হবে না বা জেলেও পাঠানো হবে না। বিনামূল্যে এ দেশের সরকার আপনাকে চিকিৎসা সেবা দেবে।’
অন্য কোনো ধরনের অসুস্থতা নিয়ে হাসপাতালে যেতে হলে অবশ্যই হাতমোজা বা গ্লাভস এবং মুখে মাস্ক পরে যাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে ভিডিও বার্তায়। অন্য সময়ও হাতমোজা এবং মাস্ক ব্যবহার করতেও বলা হয়েছে। যেহেতু হাঁচি বা কাশি থেকে এ ভাইরাসটি ছড়ানোর আশঙ্কা রয়েছে সে জন্য সভা-সমাবেশ ও গণপরিবহন এড়িয়ে চলার চেষ্টা করতে বলা হয়েছে।
ভিডিও বার্তায় বলা হয়, জরুরি প্রয়োজন ছাড়া বাড়ি বা কর্মস্থলের বাইরে না যাওয়াই ভালো। প্রবাসী বাংলাদেশিদের যে কোনো সহযোগিতার জন্য দূতাবাসের হটলাইন ২৪ ঘণ্টা খোলা রয়েছে (নম্বর: 01028814056)। কেউ চাইলে ডাকযোগেও এ সেবা নিতে পারবেন। এজন্য বাংলাদেশ দূতাবাসে স্বশরীরে আসার কোনো প্রয়োজন নেই বলে জানান রাষ্ট্রদূত।