‘মুক্তিযোদ্ধা কাদেরকে বেয়নেট দিয়ে হত্যা করেন নিজামুল হক’
২৫ ফেব্রুয়ারি ২০২০ ২০:২০
ঢাকা: ১৯৭১ সালের ২৫ জুলাই রাজাকার নিজামুল হকসহ সশস্ত্র রাজাকার দল মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল কাদের মোল্লাকে খুঁচিয়ে খুঁচিয়ে হত্যা করেন। আরেক মুক্তিযোদ্ধা মকবুল হোসেনকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে গলা কেটে হত্যার লাশ ফেলে রাখেন।
মঙ্গলবার (২৫ ফেব্রুয়ারি) আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থার তদন্ত প্রতিবেদনে এমনটিই উঠে এসেছে।
মুক্তিযোদ্ধা কাদের মোল্লার গ্রামের বাড়ি গোপালগঞ্জের কাশিয়ানী থানার সিতারামপুর গ্রামে। তিনি একাত্তর সালে মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক ছিলেন। আর রাজাকার নিজামুল হক একই উপজেলার সাধুহাটি গ্রামের বাসিন্দা ছিলেন।
তদন্ত প্রতিবেদনে বলা হয়, ১৯৭১ সালের ২৫ জুলাই রাজাকার আব্দুল মান্নান মিয়া নেতৃত্বে রাজাকার ইনায়েত হোসেন মিয়া, নিজামুল হকের একটি সশস্ত্র রাজাকার দল গোপালগঞ্জ জেলার কাশিয়ানী থানার সিতারামপুর গ্রামে পালতোলা নৌকাযোগে প্রবেশ করেন। সেখানে ৯টি বাড়িতে লুটপাট ও অগ্নিসংযোগ করেন। ওই গ্রাম ও আশপাশ থেকে মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক আব্দুল কাদের মোল্লা, মকবুল হোসেন, মো. রওশন আলী মোল্লা, আনোয়ার মীর ও আজাহার শেখদের ধরে নিয়ে যান। পরে আনোয়ার মীর ও আহাজার শেখকে বার্ধক্যজনিত কারণে ছেড়ে দেন। আর আর্মিদের সহায়তা রাজাকাররা কাদের মোল্লাকে বেয়নেট দিয়ে খুঁচিয়ে খুঁচিয়ে এবং মকবুল হোসেনকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে গলা কেটে হত্যার পর লাশ ফেলে রাখেন।
রাজাকার নিজামুল হকসহ পাচঁ রাজাকারের বিরুদ্ধে তদন্ত সম্পন্ন করেন তদন্ত কর্মকর্তা মো. নূরুল ইসলাম।
বাকি চার আসামি হলেন গোপালগঞ্জের কাশিয়ানী থানার বাসিন্দা মোতাহার উদ্দিন সিকদার (৬৫) ও ইনায়েত হোসেন মিয়া ওরফে মোল্লা (৬৫), তদন্তের স্বার্থে বাকি দুইজনের নাম প্রকাশ করা হয়নি।
এ আসামিদের বিরুদ্ধে একাত্তরে লুটপাট, অগ্নিসংযোগ, আটক, অপহরণ, নির্যাতন, হত্যা ও লাশগুমসহ চারটি অভিযোগ আনা হয়েছে।
একাত্তরে মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচারে গঠিত আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থার ৭৭তম প্রতিবেদন এটি।
শিগগিরই তদন্ত প্রতিবেদন ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউশন বরাবর দাখিল করা হবে বলে সংবাদ সম্মেলনে জানিয়েছেন তদন্ত সংস্থার প্রধান আব্দুল হান্নান খান।
আসামিদের মধ্যে একজন গ্রেফতার আছেন। বাকি চার আসামি এখনও গ্রেফতার হননি। আসামিরা গোপালগঞ্জ জেলার কাশিয়ানী থানার বাসিন্দা। আসামিরা সবাই একাত্তর সালে মুসলীম লীগের সমর্থক ছিলেন।
চারটি ভলিয়মে ৩৯৭ পৃষ্টার তদন্ত প্রতিবেদনে তদন্ত কর্মকর্তাসহ ৩৫ জনকে সাক্ষী করা হয়েছে।