‘শেয়ারবাজারের উন্নয়নে আর্থিক রিপোর্টে স্বচ্ছতা জরুরি’
২৬ ফেব্রুয়ারি ২০২০ ২৩:১৪
ঢাকা: শেয়ারবাজারের উন্নয়নে কোম্পানির আর্থিক রিপোর্টে স্বচ্ছতা জরুরি। এতে উদ্যোক্তা এবং বিনিয়োগকারী উভয় লাভবান হয়। আর আর্থিক বিবরণীতে থাকলে, কার্যকর পরিপক্ব পুঁজিবাজার গড়ে উঠা সম্ভব নয় বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) চেয়ারম্যান ড. এম খায়রুল হোসেন।
বুধবার (২৬ ফেব্রুয়ারি) শেয়ারবাজার বিষয়ক এক সেমিনারে তিনি এসব কথা বলেন।
রাজধানীর আগারগাঁও বিএসইসির নিজস্ব অডিটোরিয়ামে আয়োজিত ‘ফাইন্যান্সিয়াল স্টেটমেন্টস অ্যানালাইসিস অ্যান্ড ডিটেকশন অব ফ্রড’ শীর্ষক সেমিনারে উপস্থিত ছিলেন বিএসইসির কমিশনার ড. হেলাল উদ্দিন নিজামী, ড. স্বপন কুমার বালা, খোন্দকার কামালুজ্জামানসহ অনেকে। সেমিনারে মূলপ্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বিএসইসির পরিচালক মো. রেজাউল করিম।
বিএসইসির চেয়ারম্যান ড. এম খায়রুল হোসেন বলেন, ‘নতুন করপোরেট গর্ভন্যান্স কোড অনুযায়ী কোম্পানির মধ্যে অডিট কমিটির প্রধান হবেন একজন স্বাধীন পরিচালক। এছাড়াও চেয়ারম্যান, ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি), প্রধান অর্থ কর্মকর্তা (সিএফও) এবং অডিটরসহ কার কী দায়িত্ব সব কিছু নির্ধারণ করে দেওয়া হয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘আমরা প্রকাশিত তথ্যের (ডিসক্লোজার) ভিত্তিতেই কোম্পানির আইপিও অনুমোদন দিয়ে থাকি। এরপরও সব দোষ কমিশনকে দেওয়া হয়। এমনকি সেকেন্ডারি মার্কেটে সূচক কমলেও দোষ হয় কমিশনের। অথচ, আমাদের কোনো বিনিয়োগ নেই।’
বিএসইসির চেয়ারম্যান বলেন, ‘কমিশনের কাজ হল- কারসাজি হলে চিহ্নিত করে বিচার নিশ্চিত, চাহিদা সরবরাহ ঠিক রাখা এবং কেউ গুজব ছড়ালে, তার বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থায় নেওয়া। তারপর মার্কেট ওঠা-নামা করার জন্য আমাদেরকে সমস্ত দোষ দেওয়া হয়। নিয়ন্ত্রকসংস্থা হিসাবে আমরা এখানে অসহাত্ববোধ করি।’
ড. এম খায়রুল হোসেন বলেন, ‘আমাদের কাজের পরিধি বাংলাদেশ ব্যাংকের চেয়েও অনেক বড়। তারা শুধু ব্যাংক এবং আর্থিক প্রতিষ্ঠান নিয়ে কাজ করে। তাদের সেখানে সাত থেকে আট হাজার লোকবল রয়েছে। অথচ, আমাদের মাত্র ৮৪ জন অফিসার। আর পিয়ন ও দারোয়ান নিয়ে আমাদের জনবল ১৬০ জন।‘
নিয়ন্ত্রক সংস্থা হিসেবে আমরা একদিকে শক্তিশালী, অন্যদিকে অসহায় উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘আমরা ব্যাংক এবং অব্যাংক আর্থিক প্রতিষ্ঠান, মার্চেন্ট ব্যাংক, ব্রোকারেজ হাউজ, স্টক এক্সচেঞ্জ, এসেট ম্যানেজমেন্ট, ফার্ম ম্যানেজার এবং ক্রেডিট রেটিং কোম্পানি থেকে শুরু করে শেয়ারবাজারের বাইরের কোম্পানিও কাভার করতে হয়।’
বিএসইসির চেয়ারম্যান বলেন, ‘যখন আমরা আইপিও (প্রাথমিক শেয়ার) অনুমোদন দেই, ইস্যুটা সবার সামনে চলে আসে। এখানে অনেক জাগলারি হয়, সেগুলো যাতে তারা আইপিও আসার আগেই ধরতে পারে, তাতে নিয়ন্ত্রকসংস্থা শক্তিশালী হয়। এতে বিনিয়োগকারীরা উপকৃত হবে এবং শক্তিশালী হবে পুঁজিবাজার।’
বিনিয়োগকারীদের অবস্থা উল্লেখ করে ড. এম খায়রুল হোসেন বলেন, ‘বিনিয়োগকারী দেখে, এ কোম্পানিটির লভ্যাংশ দেওয়ার সক্ষমতা কী। তারা আরেকটা জিনিস দেখবে, তা হলো কোম্পানিটির আয় এবং ক্যাশ ফ্লো। এছাড়া সংশ্লিষ্টখাতের কোম্পানিটির অবস্থা তারা বিবেচনায় নেয়।’
অনুষ্ঠানে বিএসইসির নির্বাহী পরিচালক ও বাংলাদেশ একাডেমি অব সিকিউরিটি মার্কেটের (বিএএসএম) মহাপরিচালক মো. মাহবুবুল আলম, বিএসইসির নির্বাহী পরিচালক ফরহাদ আহমেদ, মো. সাইফুর রহমান, বিএসইসির পরিচালক কামরুল আনাম খান, এফআরসির নির্বাহী পরিচালক মোহাম্মদ মহিউদ্দিন আহমেদ, সিডিবিএলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক শুভ্রকান্তি চৌধুরী, সিএমজেএফের প্রেসিডেন্ট হাসান ইমাম রুবেল, সাধারণ সম্পাদক মনির হোসেন বক্তব্য রাখেন।