চবি শিক্ষক সমিতি ভোট, খালি মাঠে ‘হলুদ প্যানেলের’ গোল
২৭ ফেব্রুয়ারি ২০২০ ২০:২৭
চট্টগ্রাম ব্যুরো: চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে (চবি) শিক্ষক সমিতি নির্বাচনে বিএনপি ও জামায়াতপন্থী ‘সাদা দল’ এবং বিএনপিপন্থী শিক্ষকদের একাংশের জাতীয়তাবাদী শিক্ষক ফোরাম নির্বাচনে অংশ না নেয়ায় বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নিরঙ্কুশ জয়লাভ করেছে আওয়ামী ও বামপন্থী ‘হলুদ প্যানেল’।
প্রতীকী প্রতিবাদ হিসেবে নির্বাচনে অংশ নেয়নি বলে জানিয়েছে ‘সাদা দল’। অন্যদিকে শিক্ষকদের আস্থা অর্জন করতে না পারাই ভরাডুবির আশঙ্কায় নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেনি বলে মন্তব্য করেছেন হলুদ প্যানেলের শিক্ষকরা।
বিএনপি ও জামায়াতপন্থী শিক্ষকেরা বলেছেন, সারাদেশে গণতন্ত্রহীনতা বিরাজ করছে। এবং ভোটাধিকার প্রয়োগের ব্যাপারে যে পরিস্থিতি বিরাজমান তারই ধারাবাহিকতায় বিশ্ববিদ্যালয় থেকে প্রতিবাদের একটা মাত্রই ভাষা আমাদের সেটা হলো নির্বাচনে অংশ না নেয়া।
অন্যদিকে আওয়ামী ও বামপন্থী শিক্ষকেরা বলেছেন, বিগত সময়ে শিক্ষক সমিতির জন্য কিছু করতে পারেনি তারা। শিক্ষকদের আস্থাও অর্জন করতে পারেনি। তাই শিক্ষকরা তাদের ভোট দেয়নি।
এদিকে, গত সোমবার (১৭ ফেব্রুয়ারি) নির্বাচন কমিশন শিক্ষক সমিতি নির্বাচনে মনোনয়নপত্র বিতরণ শুরু করে। গত রোববার (২৩ ফেব্রুয়ারি) ছিল মনোনয়নপত্র জমা দেয়ার শেষ দিন। আর বুধবার (২৬ ফেব্রুয়ারি) ছিল মনোনয়ন প্রত্যাহারের শেষ দিন। ১১টি পদে হলুদ প্যানেলের ১১জন শিক্ষক মনোনয়নপত্র জমা দেন। তবে, সাদা দল ও বিএনপিপন্থী শিক্ষকদের একাংশের জাতীয়তাবাদী শিক্ষক ফোরাম শিক্ষকরা মনোনয়নপত্র নেননি। তারা মনোনয়নপত্র না নেওয়ায় আগামী রোববার (৮মার্চ) নির্বাচন হওয়ার কথা থাকলেও বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় হলুদ প্যানেলের শিক্ষকদের বুধবার ( ২৬ ফেব্রুয়ারি) বিজয়ী ঘোষণা করা হয়।
হলুদ প্যানেলের বিজয়ী প্রার্থীরা হলেন- সভাপতি পদে পরিসংখ্যান বিভাগের অধ্যাপক মো. এমদাদুল হক, সাধারণ সম্পাদক পদে আধুনিক ভাষা ইনস্টিটিউটের সহযোগী অধ্যাপক মনজুরুল আলম, সহ-সভাপতি পদে মাইক্রোবায়োলজি বিভাগের অধ্যাপক ড. মো তৌহিদ হোসেন, কোষাধ্যক্ষ পদে মানবসম্পদ ব্যবস্থাপনা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক শাহ নেওয়াজ মাহমুদ, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক পদে অর্থনীতি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মো সাইফুদ্দীন, সদস্য পদে নির্বাচিত হয়েছেন বন ও পরিবেশবিদ্যা ইনস্টিটিউটের অধ্যাপক ড. খালেদ মিসবাহুজ্জামান, বাংলা বিভাগের অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ শফিউল আযম, জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড বায়োটেকনোলজি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. আদনান মান্নান, আইন বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ মঈন উদ্দীন, ইনস্টিটিউট অব মেরিন সায়েন্স এর সহকারী অধ্যাপক জুয়েল দাশ ও ইলেকট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেকট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের সহকারী অধ্যাপক কাজী তানভীর আহাম্মদ।
এ বিষয়ে জানতে শিক্ষক সমিতির নির্বাচনের প্রধান কমিশনার ও ফাইন্যান্স বিভাগের অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ আকতার হোসেন সারাবাংলাকে বলেন, সাদা দল ও বিএনপিপন্থী শিক্ষকদের একাংশের জাতীয়তাবাদী শিক্ষক ফোরামের কোন প্রার্থী না থাকায় বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় হলুদ প্যানেলের প্রার্থীদের বিজয়ী ঘোষণা করা হয়।
জাতীয়তাবাদী শিক্ষক ফোরামের আহ্বায়ক ও বন ও পরিবেশবিদ্যা ইনস্টিটিউটের অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ আল-আমীন সারাবাংলাকে বলেন,আমরা তো বিচ্ছিন্ন দেশে বাস করিনা। সমাজের মধ্যে যে অস্থিরতা আছে সেটাকে সামনে রেখে একটা প্রতিবাদের ভাষা হিসেবে নিয়েছি। এটা আমাদের একটা প্রতীকী প্রতিবাদ।
হলুদ প্যানেলের আহ্বায়ক ও ব্যাংকিং অ্যান্ড ইন্সুরেন্স বিভাগের অধ্যাপক ড. সুলতান আহমেদ সারাবাংলাকে বলেন,বিশ্ববিদ্যালয় নির্বাচন গুলোতে বিএনপি ও জামায়াত পন্থীদের ভরাডুবি হয়েছে। তাই তারা নির্বাচন বয়কট করেছে। এর আগে ডিন নির্বাচনেও তাদের ভরাডুবি। বিগত সময়ে শিক্ষক সমিতির জন্য তারা কিছু করতে পারেনি। শিক্ষকদের আস্থা অর্জনেও তারা ব্যর্থ। তাদের কোনো অস্তিত্ব নেই।