Friday 06 September 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

জমি জেলা প্রশাসনের, বিক্রি করে ‘দখলদার’


২৮ ফেব্রুয়ারি ২০২০ ১০:২৯

কুয়াকাটা (পটুয়াখালী): কুয়াকাটা সমুদ্র সৈকতের ‘সরকারি পিকনিক স্পটে’র অধিকাংশ জমিই অবৈধভাবে দখল করে নিয়েছেন স্থানীয় প্রভাবশালীরা। সেখানে একের পর এক গড়ে তোলা হচ্ছে আবাসিক হোটেল-বাড়িঘর।  শুধু তাই নয়, জমি জেলা প্রশাসনের হলেও দখলদাররা তা বিক্রিও করছেন অন্যদের কাছে।  অনেকেই এসব সরকারি জমি মোটা অংকের টাকায় বিক্রি করে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে বলেও অভিযোগ পাওয়া গেছে।

সরেজমিনে দেখা গেছে, কুয়াকাটা সমুদ্র সৈকতে সরকারি পিকনিক স্পটের উত্তর পাশ জুড়ে বেড়িবাঁধ সংলগ্ন বিশাল এলাকাজুড়ে গড়ে উঠেছে গ্রাম।  জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে এসব সরকারি জমির দখল ছেড়ে দেওয়ার জন্য বলা হলেও কাজ হয়নি কোনো।  উল্টো প্রতিনিয়ত বেহাত হয়ে যাচ্ছে আরও কয়েক একর জমি।

সমুদ্র সৈকতের জিরো পয়েন্টের পূর্বপাশে অবস্থিত পিকনিক স্পটকে ঘিরে সৌন্দর্যবর্ধন, পার্কিং জোন ও মিনি পার্ক নির্মাণে জেলা প্রশাসন যে পরিকল্পনা নিয়েছে, দখল-দূষণের কারণে তা বাস্তবায়নে দীর্ঘসূত্রিতা দেখা দিয়েছে।

দখলদারের একজন পিকনিক স্পটের সাবেক কেয়ার টেকার (অবৈতনিক) আ. কুদ্দুস।  দখল ছেড়ে দেওয়ার জন্য উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. মুনিবুর রহমান ইতোমধ্যে মৌখিক নির্দেশও দিয়েছেন।  তবে তার দাবি, এসব জমি নিয়ে সরকারের সঙ্গে একটি পক্ষের মামলা রয়েছে।  মামলা চলমান অবস্থায় ভোগদখল সূত্রে এই জমির মালিক তারা।

জানা যায় বিএস জরিপ অনুযায়ী, এসব জমির মালিক জেলা প্রশাসন।  তারপরও কুয়াকাটা সমুদ্র সৈকতের জিরো পয়েন্ট সৈকত লাগোয়া সরকারি পিকনিক স্পটের পূর্বপাশের জমি দখল করে স্পটের সাবেক কেয়ারটেকার (অবৈতনিক) আ. কুদ্দুস গড়ে তুলেছেন ‘আবাসিক হোটেল ভাই ভাই’।

এছাড়াও তিনি স্থানীয় জামাল হোসেনের কাছে একটি প্লট চল্লিশ হাজার টাকায় বিক্রি করেছেন।  কুদ্দুস জানান, ভোগদখল সূত্রেই এসব জমির মালিক তিনি। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জমি ছেড়ে দেওয়ার জন্য অন্যায়ভাবে চাপ সৃষ্টি করছে বলেও দাবি তার।

একইভাবে স্থানীয় তৈয়ব আলী বাড়ির পাশে ‘ব্যাবিলন’ নামে একটি আবাসিক হোটেল নির্মাণ করে পিকনিক পার্টিদের কাছে রুম ভাড়া দিচ্ছেন।  এছাড়া আবুল হোসেন কাজী বসবাসের পাশাপাশি গড়ে তুলেছেন ‘সমুদ্র নীড়’ নামের একটি আবাসিক হোটেল।  এভাবে অনেকেই বাড়িঘর ও আবাসিক হোটেল গড়ে তুলেছেন সরকারি জমিতে।

সরকারি জমি দখল করে কিছুদিন পর মোটা অংকের টাকা পেয়ে সুযোগ বুঝে বিক্রি করে দিয়েছেন অনেকেই, এমন অভিযোগ মহিপুর ইউনিয়ন ভূমি অফিসের তহসিলদার আব্দুল আজিজের।  তিনি জানান, ‘আ. কুদ্দুস, ইউনুস, আল আমিন, নিজামসহ একাধিক ব্যক্তি সরকারি জমি অবৈধভাবে ভোগদখলের পাশাপাশি প্লট আকারে ৪০-৬০ হাজার টাকায় বিক্রি করেছেন।  গড়ে তুলেছেন আবাসিক হোটেল। ’

তহসিলদার আরও বলেন, ‘এসব জমি সরকারি ১নং খাস খতিয়ানের আওতাভুক্ত। যার দাগ নং ৩৪২২, ৩৪২৫, ৩৪২৬ ও ৩৪২৮। এ জমি কখনও ব্যক্তি মালিকানা ছিল না।  অবৈধ দখল উচ্ছেদ করে সরকারি জমি উদ্ধারে যখনই তারা উদ্যোগ নিয়েছেন, তখনই দখলদাররা রাজনৈতিক আশ্রয় নিচ্ছে। যার ফলে উদ্ধার প্রক্রিয়া বাধাগ্রস্ত হয়। ’

কলাপাড়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. মুনিবুর রহমান বলেন, ‘সরকারি পিকনিক স্পটের জমির অবৈধ দখলদারদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য জেলা প্রশাসনকে অবহিত করা হয়েছে। এরই মধ্যে দখলদার আ. কুদ্দুসকে তার হোটেল ও ঘর-বাড়ি সরিয়ে নিতে বলা হয়েছে। ’ তালিকা অনুযায়ী অবৈধ দখলদার যারা রয়েছে, তাদের পর্যায়েক্রমে উচ্ছেদ করা হবে বলেও জানান তিনি।

কুয়াকাটা কুয়াকাটা সমুদ্র সৈকত জমি দখলদার


বিজ্ঞাপন
সর্বশেষ
সম্পর্কিত খবর