রোববার থেকে ২ মাস ভোলার নদীতে মাছ ধরা যাবে না
২৯ ফেব্রুয়ারি ২০২০ ২২:৩৮
ভোলা: অভয়াশ্রম হওয়ায় ভোলার মেঘনা ও তেঁতুলিয়া নদীতে আগামী ২ মাসের জন্য ইলিশসহ সব ধরনের মাছ শিকারের উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। রোববার (১ মার্চ) থেকে এই নিষেধাজ্ঞা কার্যকর হবে।
ভোলা মৎস্য অফিস জানায়, প্রতি বছরের মত এবারও ১ মার্চ থেকে ৩০ এপ্রিল পর্যন্ত টানা ২ মাস ভোলার ভেদুরিয়া থেকে চর রুস্তম ১০০ কিলোমিটার এবং চর ইলিশা থেকে চর পিয়াল পর্যন্ত ৯০ কিলোমিটারসহ মোট ১৯০ কিলোমিটার নদীতে মাছ ধরা বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। মাছের অভয়াশ্রম হওয়ায় ভোলার মেঘনা, তেতুঁলিয়া, বুড়া গৌড়াঙ্গ, জাহাঙ্গলিয়া, গনেশপুর নদীতে ইলিশসহ সব ধরণের মাছ শিকার, বাজারজাত, সংরক্ষণ, পরিবহন ও বিক্রির উপর নিষেধাজ্ঞার জারি করেছে সরকার। আর নিষেধাজ্ঞার বিষয়টি এরইমধ্যে জেলেদের জানিয়ে দেওয়া হয়েছে।
ভোলা সদরের ইলিশা, রাজাপুর, ধনিয়া তুলাতলি, নাছির মাঝি, ভোলার খাল এলাকায় সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, সরকারি নিষেধাজ্ঞাকে স্বাগত জানিয়ে জেলেরা নৌকা, জালসহ মাছ ধরার সব সরঞ্জাম নদী থেকে সরিয়ে নিয়েছেন।
ভোলার সদরের শিবপুরের ভোলার খাল এলাকার জেলে মো. রুস্তম আলী ও আবু তাহের জানান, সরকার দুই মাসের জন্য নদীতে মাছ না ধরার জন্য অভিযান দিয়েছে। তাই তারা মাছ ধরার সব সরঞ্জাম গুছিয়ে বাড়ি নিয়ে যাচ্ছেন। তারা আরও জানান, অভিযান শেষে ২ মাস পর নদীতে গিয়ে অনেক বড় মাছ পাওয়া যাবে, এতে তারাই লাভবান হবেন। তাই আইন অমান্য করে মাছ শিকারের কথা কেউ ভাবছেন না।
ভোলার ধনিয়া তুলাতলি মাছ ঘাটের মৎস্য ব্যবসায়ী ও জেলে ইউনুছ, অধির, ভুট্টু, জাহাঙ্গির মাঝি, মনছুর মিয়া ও মোহাম্মদ আলী বলেন, যেহেতু দুই মাস তাদের উপার্জন থাকবে না, তাই দ্রুত যেন তাদের জন্য বরাদ্দ দেওয়া চাল বিতরণ করা হয় সেই দাবি জানান তারা।
সেইসঙ্গে নিষেধাজ্ঞা চলাকালীন সময় বিভিন্ন ব্যাংক ও এনজিও থেকে নেওয়া ঋণের কিস্তির টাকা আদায় বন্ধ রাখতেও অনুরোধ জানিয়েছেন স্থানীয় জেলেরা।
ভোলা সদর উপজেলার সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা মো. আসাদুজ্জামান জানান, জেলেদের দাবির প্রেক্ষিতে ঋণের কিস্তির টাকা আদায় বন্ধ রাখার জন্য যথাযথ কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। আগামী ৭ দিনের মধ্যে জেলেদের জন্য বরাদ্দকৃত চাল বিতরণ শুরু করা হবে বলেও জানান তিনি।
ভোলার সাত উপজেলার প্রায় সাড়ে ৩ লাখ জেলে থাকলেও ভোলা মৎস্য বিভাগের নিবন্ধনকৃত জেলে সংখ্যা ১ লাখ ৩২ হাজার ২৬০ জন। আর এবছর দুই মাসের নিষেধাজ্ঞার সময় চাল বরাদ্দ হয়েছে ৭০ হাজার ৯৪৩ জন জেলের।