আগুন কেড়ে নিল ৩ প্রাণ, পরিবারে শোকের মাতম
৩ মার্চ ২০২০ ০১:১৪
ঘর আলো করে ছিল যে ছোট্ট ‘প্রাণ’, সে আর নেই। মাত্র ৫ বছর বয়সে কিছু বুঝে ওঠার আগেই পৃথিবী থেকে বিদায় নিতে হয়েছে তাকে। সারাক্ষণ বুকে আগলে রাখা সেই ধন হারানোর ব্যথা মা সইবেন কী করে? মা চলে গেলে না ফেরার দেশে। এদিকে লাইফ সাপোর্টে জীবনের সঙ্গে যুদ্ধ করে সন্তান আর স্ত্রীর পথ ধরলেন বাবাও।
রাজধানীর দিলু রোডের একটি ভবনে আগুন লাগার ঘটনায় এভাবেই প্রাণ হারালো একই পরিবারের তিনজন। ৫ বছরের শিশু রুশদি ঘটনাস্থলেই মারা যায়। মা জান্নাতুল ফেরদৌসীকে ঢাকা মেডিকেল হাসপাতালে ভর্তি করা হলে কিছুক্ষণ পর চিকিৎসকরা তাকে মৃত ঘোষণা করেন। সন্তান ও স্ত্রীর পর সোমবার (২ মার্চ) সকালে বাবা শহিদুল কিরমানি মারা যান।
শহিদুলের গ্রামের বাড়ি নরসিংদীর শিবপুর উপজেলার আইয়ুবপুর ইউনিয়নের ইটনা গ্রামে। চাকুরির সুবাদে স্ত্রী সন্তান নিয়ে দিলুরোডের ওই বাসায় ভাড়া থাকতেন শহিদুল কিরমানি।
গত বৃহস্পতিবার (২৭ ফেব্রুয়ারি) ভোর সাড়ে ৪টার দিকে দিলু রোডের ওই বাড়িটির নিচতলার গ্যারেজে আগুন লাগে। খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের আটটি ইউনিটের চেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রনে আসে।
আরও পড়ুন: শিশু রুশদি নেই, মৃত্যুর সঙ্গে লড়ছেন বাবা-মা
আগুনে ঘটনাস্থলেই মারা যায় জান্নাত-রনির একমাত্র সন্তান একেএম রুশদি (৪)। এছাড়া মারা যায় ভবনের পাঁচতলার বাসিন্দা এইচএসসি পরীক্ষার্থী আফরিন জাহান যুথী (১৭) ও ভবনের নিচতলায় বসবাসরত বায়িংহাউজের অফিস সহকারী আব্দুল কাদের লিটন (৪০)। পরে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান রুশদির মা জান্নাত ও বানা রনি। সব মিলিয়ে এই আগুনে নিহতের সংখ্যা দাঁড়াল পাঁচজন।
এ ঘটনায় হাসপাতালের জরুরি বিভাগের ওয়ান স্টপ ক্রাইসিস সেন্টারে ভর্তি আছেন তিনজন। এরা হলেন সুমাইয়া আক্তার (৩২), তার ছেলে মাহাদী (৯), মাহমুদুল হাসান (৯ মাস)।
পরিবারের তিনজনকে হারিয়ে শোকে স্তব্ধ শহিদুলের বাবা-মা। এমন অবস্থায় সান্তনা দেয়ার ভাষাও খুঁজে পাচ্ছেন না এলাকাবাসী ও আত্মীয়রা।