খাগড়াছড়িতে গ্রামবাসীর সঙ্গে সংঘর্ষ, বিজিবি সদস্যসহ নিহত ৫
৩ মার্চ ২০২০ ১৫:০৬
খাগড়াছড়ি: খাগড়াছড়ির মাটিরাঙায় বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) সদস্য ও গ্রামবাসীর মধ্যে সংঘর্ষে একই পরিবারের তিন জনসহ পাঁচ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। নিহতদের মধ্যে এক বিজিবি সদস্যও রয়েছেন। এছাড়া পরিবারের তিন সদস্যের মৃত্যুর খবর শুনে মারা গেছেন আরও একজন।
মঙ্গলবার (৩ মার্চ) দুপুরের দিকে এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় এলাকায় থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে।
সংঘর্ষে যারা মারা গেছেন তারা হলেন— মাটিরাঙা উপজেলার গাজীনগর এলাকার মো. সাহাব উদ্দিন মিয়া (৫৫), তার বড় ছেলে আলী আকবর (২৭) ও ছোট ছেলে আহমদ আলী (২৪), একই এলাকার সিরাজ মিস্ত্রির ছেলে মফিজ মিয়া (৫০) এবং বিজিবি সদস্য শাওন। পরে দুই ছেলে ও স্বামীর মৃত্যুর খবর শুনে হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে মারা যান সাহাব উদ্দিনের স্ত্রী রঞ্জু বিবি।
স্থানীয়দের বক্তব্য, মঙ্গলবার সকাল ১১টার দিকে পাঁচ টুকরা গাছ গাজিনগর বাজারের একটি কাঠের মিলে নিয়ে যাচ্ছিলেন সাহাব উদ্দিন ও তার ছেলেরা। এসময় বিজিবি সদস্যরা তাদের বাধা দেন। বিষয়টি নিয়ে সাহাব উদ্দিন ও তার দুই ছেলের সঙ্গে বিজিবি সদস্যদের তর্ক হয়। এক পর্যায়ে বিজিবি সদস্যরা গুলি করলে ঘটনাস্থলেই দুই ছেলেসহ সাহাব উদ্দিন মারা যান। এ খবর ছড়িয়ে পড়লে বিজিবি সদস্যদের সঙ্গে গ্রামবাসীর সংঘর্ষ শুরু হয়। এতে আরও এক গ্রামবাসীর মৃত্যু হয়। মারা যান এক বিজিবি সদস্যও।
নিহত সাহাব উদ্দিন মিয়ার মেয়ে নিলুফা বেগমের দাবি, বিদ্যুতের লাইন যাওয়ার কারণে তারা বেশকিছু দিন আগে নিজেদের একটি গাছ কেটে রেখেছিলেন। সেই গাছটির টুকরো নিয়েই তার বাবা ও ভাইয়েরা বাজারে যাচ্ছিলেন।
এ বিষয়ে মাটিরাঙা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. শামছুদ্দিন ভূঁইয়া জানান, ঘটনাস্থলে গিয়ে নিহতদের মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য মরদেহগুলো খাগড়াছড়ি আধুনিক সদর হাসপাতালে পাঠিয়েছেন। এ ঘটনায় কারা জড়িত এবং কারা দোষী, তা তদন্ত করে প্রয়োজনীয় আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানান তিনি।
মাটিরাঙার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) বিভিশন কান্তি দাশ বলেন, তিনি সংঘর্ষ ও হতাহতের ঘটনা শুনেছেন। ঘটনায় জড়িতদের খুঁজে বের করা হবে এবং দৃষ্টান্তমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
মাটিরাঙ্গা পৌর মেয়র সামছুল হক জানান, গাছ কাটাকে কেন্দ্র করে অনাকাঙ্ক্ষিত ও হৃদয় বিদারক ঘটনা ঘটেছে। তিনি এলাকাবাসীকে শান্ত থাকার জন্য অনুরোধ জানান।
জেলা প্রশাসক প্রতাপ চন্দ্র বিশ্বাস ও পুলিশ সুপার মো. আব্দুল আজিজসহ প্রশাসনের ঊধ্বর্তন কর্মকতারা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। তারা এ ঘটনায় জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিয়ে এলাকাবাসীকে শান্ত থাকার আহ্বান জানান।