ভারতকে দ্রুত সহিংসতা বন্ধের আহ্বান প্রতিরোধ মোর্চার
৩ মার্চ ২০২০ ১৭:২৬
ঢাকা: ভারতের দিল্লিতে সাম্প্রদায়িক সহিংসতার প্রতিবাদে মানববন্ধন করেছে জঙ্গিবাদ ও সাম্প্রদায়িক প্রতিরোধ মোর্চা নামের একটি সংগঠন।
মঙ্গলবার (৩ মার্চ) রাজধানীর শাহবাগে অনুষ্ঠিত এ মানববন্ধন থেকে দ্রুত এই সহিংসতা বন্ধের আহ্বান জানানো হয়েছে। সেইসঙ্গে বাংলাদেশেও যাতে কোনো সাম্প্রদায়িক শক্তি মাথাচাড়া দিয়ে উঠতে না পারে সে বিষয়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে সতর্ক থাকার পরামর্শ দিয়েছেন সংগঠনটির নেতারা।
মুজিববর্ষের অনুষ্ঠানে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির যোগদানকে কেন্দ্র করে যারা ঘোলা পানিতে মাছ শিকার করতে চায়; তাদের সঙ্গে পাকিস্তানি প্রেতাত্মার যোগসূত্র রয়েছে বলেও মন্তব্য করেন মানববন্ধনে অংশ নেওয়া বক্তারা।
মানববন্ধনে অংশ নিয়ে সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের সভাপতি গোলাম কুদ্দুছ বলেন, ‘পৃথিবীর যে প্রান্তেই মানবতা ভুলুণ্ঠিত হবে, সাধারণ মানুষের ওপর হামলা হবে, আমরা সবসময় তার বিরুদ্ধে। ভারতের মত অসাম্প্রদায়িক রাষ্ট্র যারা কিনা নিরাপত্তা পরিষদের সদস্য পদ আশা করছে, সেই দেশে এ রকম সাম্প্রদায়িক সহিংসতা কাম্য নয়। আমরা ভারতের মানবিক বোধের সঙ্গে পরিচিত, তাই এই ধরনের কর্মকাণ্ড আমরা কখনও মেনে নিতে পারি না। আমরা দেখতে চাই ভারতে সব ধর্ম-বর্ণের মানুষ মিলে মিশে শান্তিতে বসবাস করবে।’
মানববন্ধনে হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিষ্টান ঐক্য পরিষদের সাধারণ সম্পাদক রানা দাস গুপ্ত বলেন, ‘ভারতের জাতির পিতা মহাত্মা গান্ধিকে যে নাথুরাম গডসে খুন করেছিল, সেই খুনির ১৮০ ফুট ভাস্কর্য নির্মাণ করা হচ্ছে। অর্থাৎ ভারতে যেমন গান্ধিবাদী রাজনীতি হচ্ছে, ঠিক তেমনি নাথুরামের প্রেতাত্মারা অপরাজনীতি-দাঙ্গা এসব করে যাচ্ছে। তারাই এসব কলুষতার জন্য দায়ী।
জঙ্গিবাদ ও সাম্প্রদায়িক প্রতিরোধ মোর্চার সদস্য মুফতি ফয়জুর রহমান বলেন, ‘পৃথিবীতে সবধর্মের মানুষের সহবস্থান নিশ্চিত করার জন্য সবাইকে কাজ করতে হবে। ভারতের মতো বাংলাদেশেও একটি চক্র এই সাম্প্রদায়িক উস্কানি দেওয়ার চেষ্টা করছে। যে চক্র মনে করে, বঙ্গবন্ধুকে জাতির পিতা বললে কুফরি হয়, সেই তারাই আবার বলছে মুজিববর্ষের ইজ্জত রক্ষা করতে মোদির বাংলাদেশে আসা রুখতে হবে। তাদের মতলব মোটেই সাম্প্রদায়িকতা নিঃশেষ করা নয় বরং সাম্প্রদায়িকতা লালন করা। তারা যদি আসলেই মুসলমানদের পক্ষে থাকতো তবে চীনের উইঘুরের মুসলমান দের পক্ষেও কথা বলত, চীনের সঙ্গেও সম্পর্ক ছেদ এর কথা বল। এরা মূলত পাকিস্তানি প্রেতাত্মা , রাজাকারদের দোসর।’
৭১ এর ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য চন্দন শীল বলেন, ‘আমাদের দেশেও কিছু কিছু মহল ধর্মীয় প্রচারণার নামে উস্কানিমূলক কথা বলছে। এসব থামাতে না পারলে এখানেও সাম্প্রদায়িক দাঙ্গার মতো ঘটনাও ঘটতে পারে। যারা ঘোলা পানিতে মাছ শিকার করার চেষ্টা করছেন, তাদের বলতে চাই মুজিব আদর্শের সৈনিকরা এখনও জাগ্রত আছে।’
সমাপনী বক্তব্যে জঙ্গিবাদ ও সাম্প্রদায়িক প্রতিরোধ মোর্চার আহ্বায়ক ব্যারিস্টার তুরিন আফরোজ বলেন, ‘আমরা ধর্ম বুঝি না, রাজনিতি বুঝি না, আমরা শুধু চাই মানুষে মানুষে সম্প্রীতি ও সহবস্থান। আর এই সম্প্রীতি রক্ষার জন্য আমরা সদা জাগ্রত থাকব।
গৌরব ’৭১-এর সাধারণ সম্পাদক এফ এম শাহীনের সঞ্চালনায় মানববন্ধনে আরও বক্তব্য দেন অপরাজেয় বাংলার আহ্বায়ক এইচ রহমান মিলু, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বঙ্গবন্ধু হলের জি এস শান্ত, বিজয় ৭১ হলের ছাত্রনেতা তারিক।
মানববন্ধনে উপস্থিত ছিলেন সাংবাদিক নেতা শাহনেওয়াজ দুলাল, বাণী ইয়াসমিন হাসি, রবিউল রুপম, অনিকেত রাজেশ, সাবেক ছাত্রনেতা জসিমউদ্দীন ভূইয়া, রোকেয়া হল ছাত্রসংসদের এ জি এস ফাল্গুনি দাস তন্বী।