আদালতের আগে গণমাধ্যম কিভাবে তদন্ত প্রতিবেদন পেল?
৪ মার্চ ২০২০ ১৪:০২
ঢাকা: সাংবাদিক দম্পতি সাগর-রুনির তদন্তের অগ্রগতি প্রতিবেদন আদালতের উপস্থাপনের আগেই গণমাধ্যমে কিভাবে প্রকাশ পেল তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন হাইকোর্ট। তবে আদালত সাংবাদিকদের কোনো দোষ দেখছেন না বলেও জানান।
বুধবার (৪ মার্চ) বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি মো: মোস্তাফিজুর রহমানের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ মন্তব্য করেন।
সকালে এ মামলার শুনানি শুরু হলে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী সাগর-রুনি হত্যা মামলার অগ্রগতি প্রতিবেদন উপস্থাপন করেন। এ সময় বেঞ্চের জ্যেষ্ঠ বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম বলেন, এ রিপোর্ট মিডিয়ায় কিভাবে গেল? হয় অ্যাটর্নি জেনারেল কার্যালয় বা তদন্ত সংস্থার কাছ থেকে এ রিপোর্ট গেছে। কোর্টে উপস্থাপনের আগেই এভাবে মিডিয়ায় রিপোর্ট প্রকাশ পেলে জনমনে এক ধরণের পারসেপশনের (ধারণা) তৈরি হয়।
তখন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল অমিত তালুকদার আদালতকে বলেন, আমি সাংবাদিক ছিলাম, আমি কাউকে কোনো রিপোর্ট দেইনি। এ কারণে আমার সাংবাদিক বন্ধুরা আমাকে দেখতে পারেন না।
তখন আদালত বলেন, সাংবাদিকদের কাজই হল খবরের পেছনে ছুটা। তারা খবর সংগ্রহ করতে ছুটবেই। আমরা তো সাংবাদিকদের কোনো দোষ খুঁজে পাচ্ছি না।
ডিএজি অমিত তালুকদার বলেন, এভাবে রিপোর্ট প্রকাশ আদালত অবমননার শামিল।
আদালত বলেন, সাংবাদিকরা রিপোর্ট পেলেই ছাপাবে এটাই স্বাভাবিক। যদি ওই রিপোর্টের সঙ্গে তদন্ত প্রতিবেদনের মিল না থাকে তখন তাদের দোষারোপ বা ধরার সুযোগ থাকে।
তিনি আরো বলেন, রিপোর্ট আদালতে দাখিলের আগেই যে সাংবাদিকদের হাতে গেছে এ দোষ তো কাউকে না কাউকে স্বীকার করতেই হবে।
এরপর আদালতে পরবর্তী শুনানি শুরু হয়। শুনানিতে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী জানান, এ মামলার শুনানি করতে আদালতের এখতিয়ার নাই। পরে আদালত মামলাটি কার্য তালিকা থেকে বাদ দেন।
সাংবাদিক দম্পতি সাগর-রুনি হত্যা মামলার তদন্তের অগ্রগতি প্রতিবেদন গত ২ মার্চ দাখিল করে র্যাব। ওই রিপোর্টে বলা হয়, সাগর-রুনি হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় দু’জন অপরিচিত পুরুষ জড়িত ছিলো। সাগরের হাতে বাঁধা চাদর এবং রুনির টিশার্টে ওই দুই পুরুষের ডিএনএ’র প্রমাণ মিলেছে বলেও প্রতিবেদনে দাবি করেছে র্যাব।
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, এই মামলায় তানভিরের অবস্থা রহস্যজনক। এই মামলা থেকে তাকে অব্যাহতি (বিচারিক আদালতে ব্যাক্তিগত হাজিরা থেকে) দেওয়া যুক্তিযুক্ত হয়নি। আমেরিকা পাঠানো ডিএনএ নমুনার সঙ্গে অপরিচিত দুই ব্যাক্তির ডিএনএ’র মিল পাওয়া গেছে।
এ রিপোর্ট দাখিলের জন্য ৪ মার্চ শুনানির জন্য নির্ধারিত ছিল। কিন্তু তার আগেই বিষয়টি গণমাধ্যমে প্রকাশ হয়। যা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন আদালত।