Sunday 24 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

করোনাভাইরাসের ঝুঁকি থাকলেও আমরা প্রস্তুত: স্বাস্থ্যমন্ত্রী


৪ মার্চ ২০২০ ১৯:৩৮

ঢাকা: বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশও করোনাভাইরাস সংক্রমণের ঝুঁকিতে আছে বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক। তবে পরিস্থিতি মোকাবিলার জন্য বাংলাদেশ প্রস্তুত বলেও জানিয়েছেন তিনি।

বুধবার (৪ মার্চ) বিকেলে জাতীয় প্রতিষেধক ও সামাজিক চিকিৎসা প্রতিষ্ঠানে (নিপসম) পুনঃসজ্জিত অডিটোরিয়াম ও নবনির্মিত ব্যায়ামাগারের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কথা বলেন তিনি।

বিজ্ঞাপন

স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, বিশ্বের অনেক দেশে এখন করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়েছে। সব দেশই কমবেশি ঝুঁকিতে রয়েছে। আমাদের পার্শ্ববর্তী দেশগুলোতে এই ভাইরাসে অনেকেই আক্রান্ত হয়েছে। তাই আমাদের দেশেও যেকোনো সময় করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়তে পারে।

স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, যুক্তরাষ্ট্রও এই রোগ থেকে নিজেদের মুক্ত রাখতে পারেনি। সেখানকার সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে আমার কথা হয়েছে। বলা যায়, সেখানেও করোনাভাইরাস আতঙ্ক ছড়াচ্ছে। কিছু মৃত্যুর ঘটনাও ঘটেছে। ইউরোপীয় ইউনিয়নের অনেক দেশে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ হয়েছে। সেখানেও অনেকে মারা গেছে। ইতালিতেও মারা গেছে। আমাদের আশপাশের দেশেও করোনাভাইরাস আক্রান্ত রোগী আছে। আমাদের দেশে যেকোনো মুহূর্তেই করোনাভাইরাস আসতে পারে।

তিনি বলেন, দেশ হিসেবে আমরা এই মুহূর্তে করোনাভাইরাসের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ একটি দেশ। কারণ আমাদের জনসংখ্যার ঘনত্ব অনেক বেশি। আমাদের প্রায় এক কোটি লোক বিশ্বের বিভিন্ন দেশে কর্মরত। সেসব দেশগুলোর অনেকগুলোই এখন করোনায় আক্রান্ত। সেসব দেশে যাতায়াতের সূত্র ধরেও করোনাভাইরাস ঢোকার সুযোগ আছে। কে কোথা থেকে আসবে, তা কিন্তু আমরা জানি না। তাই আমাদের সতর্ক হয়ে নিজেদের প্রস্তুত রাখতে হবে। সে কারণেই আমরা অনেক পদক্ষেপ নিয়েছি করোনাভাইরাস মোকাবিলায়।

বিজ্ঞাপন

স্বাস্থ্যমন্ত্রী আরও বলেন, আজও চিকিৎসকদের সঙ্গে আমাদের বৈঠক হয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর আদেশ ও নির্দেশে আমরা প্রতিদিনই নিজেদের প্রস্তুত রাখছি। প্রতিটি জেলায় এরই মধ্যে ১০০ আইসোলেশন বেড প্রস্তুত করা হয়েছে। প্রতিটি বিভাগীয় শহরে তিন থেকে চারশ বেড নিয়ে আইসোলেটেড ব্যবস্থা আমরা নিয়েছি। চিকিৎসাক্ষেত্রে তৈরি করা হয়েছে প্রটোকল। নার্স ও চিকিৎসকদের আইডেন্টিফাই করে তাদের জন্যেও প্রোটেকটিভ গিয়ারসহ প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে।

জাহিদ মালেক বলেন, গতবছর ডেঙ্গুর ব্যাপক প্রাদুর্ভাব দেখা দিয়েছিল। কিন্তু ডাক্তার ও নার্সরা যেভাবে মনোযোগ দিয়ে জীবন বাজি রেখে কাজ করেছেন, তা আমরা গর্বের সঙ্গে বলি। আমরা অত্যন্ত সফলতার সঙ্গে ডেঙ্গু মোকাবিলা করতে সক্ষম হয়েছি। করোনাভাইরাস মোকাবিলায়ও আমাদের ডাক্তারদেরও বলিষ্ঠ ভূমিকা রাখতে হবে।

তিনি বলেন, আমরা জানি মানুষ ছাড়া কাজ হয় না। আমার কাছে এই মুহূর্তে স্বাস্থ্যখাতে আমাদের এক নম্বর সমস্যা হলো সব স্তরে জনবল সংকট। এটি কাটিয়ে উঠতে মাসখানেক আগে নতুন অনুমোদন পাওয়া গেছে। সব পর্যায়ে নিয়োগ বন্ধ ছিল প্রায় ১০ থেকে ১২ বছর। আদালতে নিজের উদ্যোগে সেটি নিয়ে আমরা লড়াই করেছি। এই মামলাগুলো আমরা জয়লাভ করে এখন নিয়োগ দিতে শুরু করেছি। এ বছরের মধ্যে আমরা পাঁচ হাজার নতুন ডাক্তার ও ১৫ হাজার নার্স নিয়োগ দেবো।

মন্ত্রী বক্তব্যে স্বাস্থ্য খাতে বাংলাদেশের উন্নয়ন কর্মকাণ্ড তুলে ধরে বলেন, দেশের বিভাগীয় শহরগুলোতে ক্যানসার ইনস্টিটিউট হচ্ছে। এ বছরের মধ্যে আমরা হাসপাতালগুলোতে আইসিইউ ও ডায়ালাইসিস ব্যবস্থা যা আছে, তার দ্বিগুণ করব। এ বছরের মধ্যে আমরা পাঁচ হাজার নতুন ডাক্তার ও তিন হাজার নার্স নিয়োগ দেবো। বাংলাদেশের হাসপাতালগুলোতে এখন চিকিৎসকদের উপস্থিতির সংখ্যাও অনেক বেশি।

অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সচিব আসাদুল ইসলাম। এতে বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ মেডিক্যাল অ্যাসোসিয়েশনের (বিএমএ) সভাপতি ডা. মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন, স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদের (স্বাচিপ) সভাপতি অধ্যাপক ডা. এম ইকবাল আর্সলান, স্বাচিপের মহাসচিব ডা. মো. আব্দুল আজিজ, নিপসম পরিচালক অধ্যাপক ডা. বায়জিদ খুরশীদ রিয়াজসহ অন্যরা।

করোনাভাইরাস করোনাভাইরাস সংক্রমণ করোনাভাইরাসের ঝুঁকি স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর