প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগে জটিলতা কাটছে এ মাসেই
৪ মার্চ ২০২০ ২২:৪৯
ঢাকা: দেশের ৩৫ জেলায় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সহকারী শিক্ষক নিয়োগ কার্যক্রম শুরু করা হয়েছে। মার্চ মাস শেষ হওয়ার আগেই বাকি ২৬ জেলাতেও নিয়োগ জটিলতা শেষ হবে বলে আশা করছে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়।
মন্ত্রণালয়ের সচিব আকরাম আল হোসেন বলেন, ‘জটিলতা নিরসনের জন্য আমরা চেষ্টা করছি। আমরা আশা করছি, মার্চ মাস শেষ হওয়ার আগে এসব জেলাতেও পদায়ন কার্যক্রম শেষ হবে।’
সচিব বলেন, ‘সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোতে শিক্ষক সংকট রয়েছে। এখন এতগুলো শিক্ষক নিয়োগ দিয়ে আমরা যদি তাদের পদায়ন করতে না পারি, তাহলে এই সংকট প্রকট আকার ধারণ করবে। এটি সবাইকে বুঝতে হবে। আমাদেরকে শিক্ষার্থীদের স্বার্থ দেখতে হবে। দেশের শিক্ষার উন্নয়নের স্বার্থে এই জটিলতা নিরসন প্রয়োজন।’
সরকারি প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগের যিনি লিখিত পরীক্ষায় উত্তীর্ণরা শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ দাবি করে আদালতের দ্বারস্থ হলে এ জটিলতার সূত্রপাত হয়। লিখিত পরীক্ষায় উত্তীর্ণ এবং সাক্ষাৎকারে অংশগ্রহণকারী সবাইকে প্যানেলভুক্ত করে নিয়োগ দেওয়ার দাবিতে বিভিন্ন সময় অবস্থান কর্মসূচিও পালন করেছেন অনেকে।
এ বিষয়ে আকরাম আল হোসেন বলেন, ‘লিখিত পরীক্ষার পর যারা সাক্ষাৎকারেও উত্তীর্ণ হয়েছে আমরা কেবল তাদেরকেই নিয়োগ দিয়েছি। এটিই নিয়ম। এ নিয়মের ব্যত্যয় আমরা করতে পারব না। যে কেউ চাইলেই আন্দোলন করতে পারবে কিন্তু এখানে আমাদের কিছুই করার নেই।’
গত ৬ বছর ধরে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সহকারী শিক্ষক নিয়োগ কার্যক্রম বন্ধ ছিল। ২০১৮ সালে সহকারী শিক্ষক নিয়োগে সারাদেশ থেকে ২৪ লাখ পরীক্ষার্থী অংশ নেন। এর মধ্যে ৫৫ হাজার ২৯৫ জন লিখিত পরীক্ষায় উত্তীর্ণ এবং ১৮ হাজার ১৪৭ জন চূড়ান্তভাবে নিয়োগের জন্য সুপারিশপ্রাপ্ত হন। এ বছরই আরও ২৫ হাজার সরকারি প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ দেওয়ার কথা রয়েছে।
এদিকে দেশের ৩৫ জেলায় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সহকারী শিক্ষক নিয়োগ কার্যক্রম আগেই শুরু করা হয়েছে। আইনি জটিলতার কারণে এসব জেলায় নতুন নিয়োগ পাওয়া শিক্ষক পদায়ন বন্ধ ছিল।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, ২০ জেলায় সহকারী শিক্ষক পদে যোগাদন ও পদায়ন দেয়া হয়েছে। বাকি ১৫টি জেলায় পদায়ন চলমান রয়েছে।
প্রাথমিক শিক্ষা অধিদফতর (ডিপিই) থেকে জানা গেছে, আদালতে মামলা দায়ের করায় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সহকারী শিক্ষক নিয়োগ কার্যক্রম স্থগিত করা হয়। পরে আদালতের স্থগিতাদেশ বাতিল করতে উচ্চ আদালতে আপিল করে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়।
জানা গেছে, মন্ত্রণালয় থেকে উচ্চ আদালতে আপিল করায় এ পর্যন্ত মোট ৩৫ জেলার নিয়োগের স্থাগিতাদেশ বাতিল করা হয়েছে। তার মধ্যে সম্পতি ঠাকুরগাঁও, চুয়াডাঙ্গা, বরিশাল ও বরগুনা জেলার স্থগিতাদেশ বতিল করা হয়েছে। বর্তমানে এসব জেলায় চূড়ান্তভাবে পাস করা প্রার্থীদের যোগদান, প্রশিক্ষণ ও পদায়নের কাজ শুরু হয়েছে। বাকি জেলাগুলোতে স্থগিতাদেশ বাতিলে আপিল করা হয়েছে।
এ বিষয়ে ডিপিই’র মহাপরিচালক মো. ফসিউল্লাহ বলেন, চলতি মাসের মধ্যেই আদালতের স্থগিতাদেশ বাতিল হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
উল্লেখ্য, মৌখিক পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হতে না পেরে প্রায় ৩৭ হাজার ১৪৮ জন চাকরি প্রত্যাশী প্যানেলভুক্ত নিয়োগের দাবিতে এখন জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে অবস্থান কর্মসূচি পালন করছেন।