Friday 27 September 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

জালিয়াতি করে হাইকোর্ট থেকে জামিন, জড়িত ২ মুহুরি গ্রেফতার


৫ মার্চ ২০২০ ১৮:৫১

ঢাকা: জালিয়াতির মাধ্যমে হত্যা মামলার এক আসামিকে হাইকোর্ট থেকে জামিন করানোর অভিযোগে একটি চক্রের দুই সদস্যকে গ্রেফতার করেছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ। তারা দু’জনই আইনজীবীর মুহুরি হিসেবে কাজ করেন। এই চক্রের আরও অন্তত তিন সদস্যকে গ্রেফতার করতে অভিযান অব্যাহত রেখেছে ডিবি পুলিশ।

বৃহস্পতিবার (৫ মার্চ) বিকেলে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের সিরিয়াস ক্রাইম বিভাগের সিনিয়র সহকারী কমিশনার (এসি) নাজমুল হক সারাবাংলাকে এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

বিজ্ঞাপন

সহকারী কমিশনার নাজমুল হক বলেন, ঠাকুরগাঁও জেলার একটি হত্যা মামলার আসামি জামিল হাসানকে জামিনের জন্য চুক্তি করে হাইকোর্টের দুই আইনজীবীর মুহুরি খলিল উদ্দিন ও বেলাল হোসেন। চুক্তি হিসেবে জামিলের দেওয়া ৮৫ হাজার টাকার মধ্যে খলিল নেন ৩৫ হাজার টাকা, বেলাল নেন ৫০ হাজার টাকা। এছাড়া আইনজীবীর জন্য বাড়তি টাকা দেওয়ার কথা ছিল।

নাজমুল হক বলেন, গত বছরের ১৫ মে হাইকোর্টের একটি বেঞ্চ জামিল হাসানকে জামিন দেন। এর কিছুদিন পর ঠাকুরগাঁওয়ের আদালতে জামিনের কাগজ পাঠিয়ে মামলার বিষয়ে জানতে চাইলে বিষয়টি পরিষ্কার হয়ে যায়, ওই আসামি জালিয়াতির মাধ্যমে জামিন নিয়েছেন। পরে ওই আসামিকে জজ আদালত তলব করেন। কিন্তু আসামি জামিল আদালতে হাজির না হয়ে পলাতক থাকেন।

এই পুলিশ কর্মকর্তা আরও বলেন, এ ঘটনায় গত ৩ ফেব্রুয়ারি সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগের সহকারী রেজিস্ট্রার জাকির হোসেন বাদী হয়ে শাহবাগ থানায় জালিয়াতিতে জড়িতের বিরুদ্ধে মামলা করেন। সেই মামলায় গত ৬ ফেব্রুয়ারি রাজধানীর সেগুনবাগিচা এলাকা থেকে অভিযান চালিয়ে মুহুরি খলিল উদ্দিনকে গ্রেফতার করা হয়। খলিল জামিন জালিয়াতির কথা স্বীকার করে আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দেন।

বিজ্ঞাপন

জিজ্ঞাসাবাদ ও জবানবন্দিতে খলিল জানান, আরেক মুহুরি বেলাল হোসেনের মাধ্যমে তিনি এ কাজটি করেছেন। এই চক্রে আরও তিন জন জড়িত। এসব তথ্যের ভিত্তিতে অভিযান চালিয়ে বুধবার (৪ মার্চ) রাজধানীর রমনা এলাকা থেকে গ্রেফতার করা হয় বেলালকে। তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করে চক্রের বাকি সদস্যদের ধরতে ঠাকুরগাঁওয়ের কয়েকটি স্থানে অভিযান চালানো হয়। তবে গাঁ ঢাকা দেওয়ায় তাদের চক্রের কাউকেই ধরা যায়নি। জামিল হাসানও পলাতক।

গোয়েন্দা পুলিশের এই কর্মকর্তা আরও বলেন, ডিবির কাছে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেফতার বেলাল হোসেন জানিয়েছেন, এর আগে তারা নিম্ন আদালতের কাগজপত্র জালিয়াতি করে পাঁচ থেকে সাতটির মতো মামলায় হাইকোর্ট থেকে জামিন করিয়েছেন। প্রতিবারই ঠাকুরগাঁওয়ের একটি চক্র মামলাগুলো এনে দেয়। এরপর হাইকোর্টে মামলা ফাইল হয় এবং জামিন হয়ে যায়। পরবর্তী সময়ে ঘটনা ধরা পড়লেও আসামিরা ধরাছোঁয়ার বাইরে থেকে যায়। তদন্তের স্বার্থে বাকি আসামীদের নাম-পরিচয় প্রকাশ করতে রাজি হয়নি ডিবি পুলিশ।

এক প্রশ্নের জবাবে ডিবির সহকারী কমিশনার নাজমুল বলেন, গ্রেফতার দু’জন যাদের নাম বলেছেন, তাদের মধ্যে একজন এই চক্রের মূল হোতা। এর বাইরে আরও কারা জড়িত এই চক্রের সঙ্গে, তা তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। এমনকি কোনো আইনজীবীও এই চক্রের সঙ্গে জড়িত থাকলে তাকেও আইনের আওতায় আনা হবে।

গোয়েন্দা পুলিশ গ্রেফতার ২ জামিন জালিয়াতি জালিয়াত চক্র জালিয়াতির মাধ্যমে জামিন হাইকোর্টে জামিন জালিয়াতি

বিজ্ঞাপন
সর্বশেষ
সম্পর্কিত খবর