মুজিববর্ষে ৮ বিশেষ উদ্যোগ আইসিটি বিভাগের
৫ মার্চ ২০২০ ১৮:৫৫
ঢাকা: মুজিববর্ষকে সামনে রেখে আটটি বিশেষ উদ্যোগ নিয়েছে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগ। দেশের তরুণ উদ্ভাবকদের অনুপ্রাণিত করতে ‘বঙ্গবন্ধু ইনোভেশন গ্র্যান্ট’ প্রদান, ৭ মার্চের ঐতিহাসিক ভাষণের হলোগ্রাফিক প্রদর্শন, অনলাইনে মুজিববর্ষ উদযাপন, ১ লাখের বেশি তরুণকে তথ্য প্রযুক্তিতে প্রশিক্ষিত করে তোলার মতো বিশেষ উদ্যোগ ও কার্যক্রম হাতে নেওয়া হয়েছে। ৮ উদ্যোগের বাইরেও আরও একাধিক পরিকল্পনা রয়েছে বিভাগটির।
বৃহস্পতিবার (৫ মার্চ) সকালে রাজধানীর আগারগাঁওয়ে তথ্য ও বিভাগের সভাকক্ষে এক সংবাদ সম্মেলনে আইসিটি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক এসব তথ্য জানান। মুজিববর্ষ উদযাপনে আইসিটি বিভাগের স্লোগান হচ্ছে- ‘মুজিববর্ষে আমাদের অঙ্গীকার, প্রযুক্তি এগিয়ে যাওয়ার হাতিয়ার।’
মুজিববর্ষে আইসিটি বিভাগের পক্ষ থেকে বঙ্গবন্ধু ইনোভেশন গ্র্যান্ট প্রদান, জাতির পিতার ঐতিহাসিক ৭ মার্চের ভাষণের হলোগ্রাফিক প্রোজেকশন, অনলাইনে মুজিববর্ষ উদযাপন, মোবাইল গেম ও অ্যাপ্লিকেশনের দক্ষতা উন্নয়নে প্রশিক্ষণ, আইসিটি ডিভিশনের একশোর বেশি কৌশলগত পরিকল্পনা বাস্তবায়ন, ইউনিয়ন ডিজিটাল সেন্টার (ইউডিসি) এর দশ বছর উদযাপন উপলক্ষে মহাসম্মেলন, ডিজিটাল ওয়ার্ল্ড ২০২০ আয়োজন ও জাতীয় বাস্তবায়ন কমিটির প্রদত্ত নির্দেশনার যথাযথ বাস্তবায়নের উদ্যোগ এবং কার্যক্রম হাতে নেওয়া হয়েছে।
প্রতিমন্ত্রী জানান, মুজিববর্ষে চালু হচ্ছে বঙ্গবন্ধু ইনোভেশন গ্র্যান্ট-২০২০। দেশের তরুণ উদ্ভাবকদের অনুপ্রাণিত করতে ১০ থেকে ২৫ লাখ টাকা গ্র্যান্ট দেওয়া হবে। ভবিষ্যতে এটি ৫০ থেকে ১ কোটি টাকাতে উন্নীত করার পরিকল্পনা রয়েছে। বিশেষ উদ্ভাবনে দেশি উদ্যোক্তাদের প্রাধান্য দেওয়া হলেও এটিকে আন্তর্জাতিক গ্র্যান্টে পরিণত করার লক্ষ্য রয়েছে।
আগামী ৭ মার্চ জয় বাংলা কনসার্টে প্রথমবারের মতো জাতির পিতার ঐতিহাসিক ৭ মার্চের ভাষণের হলোগ্রাফিক প্রোজেকশন প্রদর্শন করা হবে। পরে জাতীয় সংসদ ভবনে এক অনুষ্ঠানেও এটি প্রদর্শন করা হবে। ধানমন্ডির বঙ্গবন্ধু জাদুঘরে স্থায়ীভাবে হলোগ্রাফিক প্রোজেকশন স্থাপনের লক্ষ্য রয়েছে, যেখানে দিনে দুই তিনবার ৭ মার্চের ভাষণের প্রদর্শন হবে।
এ ছাড়া সিআরআই, এটুআই ও আইসিটি বিভাগ যৌথভাবে অনলাইনে মুজিববর্ষ উদযাপন করবে। স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র প্রতিযোগিতা, অ্যানিমেশন ভিডিও, অডিওবুক, বঙ্গবন্ধুর এই দিনে, অনলাইন নিউজে ফিচার, বঙ্গবন্ধু ব্লগ, অনলাইন কুইজ প্রতিযোগিতা, আমার বঙ্গবন্ধু, কম্পিউটার গ্রাফিক্স ভিডিও, সাক্ষাৎকারভিত্তিক ভিডিও, ডিজিটাল কার্ড প্রভৃতি কনটেন্ট নির্মাণ ও প্রচারে বছরব্যাপী কাজ করার পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে। এই সকল কনটেন্টের মাধ্যমে তরুণ প্রজন্মের কাছে জাতির পিতার জীবন ও কর্মের বিভিন্ন বিষয় তুলে ধরা হবে। এক্ষেত্রে সিআরআই এর ইয়ং বাংলা ও এটুআই প্রকল্পের বিভিন্ন ক্রিয়েটিভ টিম ও নেটওয়ার্কিং প্লাটফর্ম সমন্বিতভাবে কাজ করবে।
আইসিটি বিভাগের অধীনে মুজিববর্ষে ১ লাখেরও বেশি তরুণকে ফ্রিল্যান্সিং, মোবাইল গেম ও এপ্লিকেশনের দক্ষতা উন্নয়নে প্রশিক্ষিত করা হবে। বছরটিতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার লেখা ‘মুজিব আমার পিতা’ গ্রন্থের আলোকে একটি অ্যানিমেশন বেসড মোবাইল অ্যাপ তৈরি করা হবে। নির্মাণ করা হবে বঙ্গবন্ধুর অসমাপ্ত আত্মজীবনী ভিত্তিক একটি অ্যানিমেটেড মুভি। বঙ্গবন্ধু স্মৃতি জাদুঘরের ভিজ্যুয়াল রিয়্যালিটি (ভিআর) নির্মাণ ও তাঁর স্মৃতি বিজড়িত স্থানসমূহে তা প্রদর্শনের ব্যবস্থা থাকবে। মুজিববর্ষের ওপর মোবাইল অ্যাপ নির্মাণ ও ‘আমার মুজিব গেমি কুইজ’ নির্মাণের পরিকল্পনা রয়েছে।
এদিকে গেল কয়েক বছর আগে আইসিটি বিভাগের উদ্যোগে বঙ্গবন্ধু অ্যাপ তৈরি করা হয়েছিল। পলক জানান, এখন পর্যন্ত অ্যাপটি দেড় লাখ বার ডাউনলোড হয়েছে। অ্যাপসটির ইংরেজি ভার্সন করার কাজও হাতে নেওয়া হয়েছে।
বিভাগটির পক্ষ থেকে ১০০+ কৌশলগত পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। আইসিটি বিভাগের বাৎসরিক উন্নয়ন পরিকল্পনা (এডিপি) শতভাগ বাস্তবায়ন করার লক্ষ্য রয়েছে। সব পর্যায়ের কর্মকর্তা-কর্মচারী সারাবছরে অতিরিক্ত ১০০ ঘণ্টা অফিস করবে প্রতিজ্ঞা করেছেন। নতুন ১০০টি নাগরিক সেবাকে ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মে নিয়ে আসার পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে।
আগামী ১১ নভেম্বর ইউনিয়ন ডিজিটাল সেন্টার (ইউডিসি) এর দশ বছর উদ্যাপন উপলক্ষ্যে উদ্যোক্তাদের মহাসম্মেলন মহাসম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে। প্রধানমন্ত্রীর আইসিটি বিষয়ক উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয় এই সম্মেলন উদ্বোধন করার কথা রয়েছে।
এছাড়া ডিসেম্বরে অনুষ্ঠেয় ‘ডিজিটাল ওয়ার্ল্ড ২০২০’ এ ডিজিটাল বাংলাদেশের সার্বিক অর্জন তুলে ধরা হবে। সেই সঙ্গে সেমিনার, ইনোভেশন, কুইজসহ সকল কার্যক্রমে স্পেশালি-অ্যাবলড ব্যক্তিদের অংশগ্রহণের সুযোগ নিশ্চিত করা হবে। এর বাইরেও তথ্য প্রযুক্তি খাতের নারীদের জন্যে উইমেন হ্যাকাথন অনুষ্ঠিত হবে।