বর-কনে নিয়ে ফেরার পথে নৌকাডুবি, মৃত ৬, কনেসহ নিখোঁজ ৩
৭ মার্চ ২০২০ ১৫:৫১
রাজশাহী: বৌভাতের অনুষ্ঠান শেষে বর-কনেকে নিয়ে ফেরার পথে পদ্মা নদীতে দুটি নৌকাডুবির ঘটনায় মৃতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ছয়জনে। এ ঘটনায় নববধূসহ নিখোঁজ তিনজন।
শনিবার (৭ মার্চ) বিকেল পর্যন্ত যে চারজনের মৃতদেহ পাওয়া গেছে তারা হলেন, কনের চাচী মনি খাতুন (৪০), চাচা শামীম (৪৮), শামীমের মেয়ে রশ্মি (৮), এখলাস (২২), রতন (২৮) ও শিশু মরিয়ম।
নিখোঁজ তিনজন হলেন-কনে সুইটি আক্তার পূর্নিমা (১৫), খালা আঁখি (২০) ও তার ফুফাতো বোনের মেয়ে রুবাইয়া (১৩)।
মৃতের সংখ্যা বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করছে ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স।
রাজশাহী ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের সিনিয়র স্টেশন অফিসার আব্দুর রউফ জানান, দুই নৌকায় প্রায় ৩৮ জন যাত্রী ছিলেন। ঘটনার পর উদ্ধার হওয়া কয়েকজনকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পর মরিয়ম খাতুন নামের এক শিশুর মৃত্যু হয়।
সন্ধ্যায় বরের বাড়িতে বৌ-ভাতের অনুষ্ঠান শেষে নববধূ নিয়ে ফিরছিলেন তার বাবার বাড়ির স্বজনরা। ফিরানি অনুষ্ঠানের জন্য বর-কনেসহ কনেপক্ষের লোকজন নদীর চরখিদিরপুর থেকে পবা উপজেলার ডাঙ্গেরহাটে ফেরার পথে এই ঘটনা ঘটে।
সৌভাগ্যক্রমে নদী সাঁতরে প্রাণে বেঁচে যাওয়া চরখিদিরপুর গ্রামের মৃত ইনসার আলীর ছেলে বর আসাদুজ্জামান রুমন শনিবার দুপুরে শ্রীরামপুর সংলগ্ন পদ্মা নদীর পাড়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন। তিনি জানান, চরখিদিরপুর থেকে নৌকা যোগে বাড়ি ফিরছিলেন তারা। নদীতে দুটি নৌকা পাশাপাশি আসছিলো। প্রথমে একটি নৌকার তলা ফেটে পানি উঠতে শুরু করে। এতে নৌকাটি ডুবে যায়। এ সময় ঐ নৌকার যাত্রীদের আরেকটি নৌকায় নেয়া হচ্ছিল। অতিরিক্ত যাত্রীর চাপ ও লাফালাফি শুরু করলে নৌকাটি ডুবতে শুরু করে। এসময় ওই পথ দিয়ে যাওয়া বালুবাহী একটি ট্রলার দড়ি ফেলে দিলে তারা ধরে তিনিসহ ১৫ জন বেঁচে যান। যখন সবাই লাফালাফি শুরু করেছে তার তার স্ত্রী নৌকা থেকে পড়ে যায়। এরপর আর কিছু বলতে পারেন না তিনি।
পবা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শাহাদাত হোসেন জানান, নিখোঁজদের উদ্ধারে ফায়ার সার্ভিস ও বিজিবি সদস্যরা গতরাত থেকেই উদ্ধার অভিযান চালাচ্ছেন। তাদের সঙ্গে যুক্ত হয়েছে বিআইডব্লিউটি’র একটি ডুবুরি দল। সকাল ১০টা থেকে তিনটি দল উদ্ধার অভিযান শুরু করেছে।
তিনি বলেন, নৌকা ডুবির ঘটনা তদন্তে অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট আবু আসলামকে প্রধান করে পাঁচ সদস্যের কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটি সকাল থেকে তদন্ত শুরু করেছে। নিহতদের জন্য সরকারের পক্ষ থেকে ২০ হাজার টাকা করে দেওয়া হবে। এছাড়াও আহতের চিকিৎসা ব্যয়ও বহন করা হবে বলে জানান তিনি।