করোনাভাইরাস দীর্ঘায়িত হলে টানেলের কাজে বিঘ্নের আশংকা কাদেরের
৮ মার্চ ২০২০ ১৬:৫৫
চট্টগ্রাম ব্যুরো: চীনের করোনাভাইরাস পরিস্থিতি বিলম্বিত হলে চট্টগ্রামের কর্ণফুলী টানেলের কাজে বিঘ্ন সৃষ্টি হওয়ার আশংকা করছেন সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। তবে বিদ্যমান পরিস্থিতি বহাল থাকলে ২০২২ সালে নির্ধারিত সময়ের মধ্যেই কাজ শেষ হবে বলেও জানিয়েছেন তিনি।
রোববার (৮ মার্চ) সকালে চট্টগ্রাম নগরীর পতেঙ্গায় নির্মাণাধীন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান টানেল (কর্ণফুলী টানেল) পরিদর্শনে যান মন্ত্রী।
পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের কাছে তিনি টানেলের কাজের অগ্রগতি তুলে ধরে জানান, এ পর্যন্ত টানেলের ৫১ শতাংশ কাজ শেষ হয়েছে।
করোনাভাইরাস এবং টানেল প্রকল্পে কর্মরত চীনা নাগরিকদের বিষয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘কর্ণফুলী টানেল নির্মাণ প্রকল্পে ২৯৩ জন চীনের নাগরিক কর্মরত আছেন। এর মধ্যে ৭২ জন নববর্ষের ছুটিতে চীনে গিয়েছিলেন। ছুটি শেষে ৪৫ জন ফিরে আসেন। এর মধ্যে ২৮ জনের ১৪ দিনের কোয়ারেন্টাইন সম্পন্ন হয়েছে এবং তারা কাজে যোগ দিয়েছেন। বাকি ১৭ জন এখনো কোয়ারেন্টাইনে আছেন।’
‘আমি এটুকু বলতে পারি, চীনের নাগরিক যারা টানেল প্রকল্পে কর্মরত আছেন, তাদের জন্য এখনো পর্যন্ত টানেলের নির্মাণকাজে কোনো ক্ষতি হয়নি বা সময়ক্ষেপণ হয়নি। কাজ যথারীতি এগিয়ে চলছে। কিন্তু করোনাভাইরাস দীর্ঘায়িত হলে বা বিলম্বিত হলে তখন ব্যাপারটা অন্যদিকে কিছুটা মোড় নিতে পারে। এরপরও যতটা পদ্মাসেতুতে হতে পারে, কর্ণফুলী টানেলে ততটা না-ও হতে পারে। কারণ এখানে কর্মরত চীনা নাগরিকের সংখ্যা খুব বেশি নয়। মাত্র কয়েকজন কোয়ারেন্টাইনে আছেন। এজন্য কাজের তেমন কোনো বিঘ্ন হবে না।’
টানেলের ৫১ শতাংশ কাজ শেষ হয়েছে জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, ‘আমরা আশাবাদী ২০২২ সালের নির্ধারিত সময়ের মধ্যেই কাজ শেষ হবে।’
১০ হাজার ৩৭৪ কোটি ৪২ লাখ টাকা ব্যয়ে বাস্তবায়নাধীন টানেল প্রকল্পে বাংলাদেশ সরকার দিচ্ছে ৪ হাজার ৪৬১ কোটি ২৩ লাখ টাকা। চীন সরকার দিচ্ছে ৫ হাজার ৯১৩ কোটি ১৯ লাখ টাকা। ২০১৯ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি প্রধানমন্ত্রী শেখ টানেল বোরিং কাজের উদ্বোধন করেন।
মন্ত্রী জানিয়েছেন, চীনের জিয়াংসু প্রদেশের জেং জিয়াং শহরে টানেল সেগমেন্ট কাস্টিং প্ল্যান্টে সেগমেন্ট নিমার্ণের কাজ চলছে। গত জানুয়ারি পর্যন্ত ১৯ হাজার ৬১৬টি সেগমেন্টের মধ্যে ১০ হাজার ৫৮২টি চট্টগ্রামে টানেল প্রকল্পে পৌঁছেছে। এর মধ্যে ৪ হাজার ৯১২টি টানেলে প্রতিস্থাপন করা হয়েছে।
চট্টগ্রামে মেট্রোরেল নির্মাণের জন্য ফিজিবিলিটি স্টাডির কাজ দ্রুততম সময়ের মধ্যে শুরু হবে বলে জানিয়েছেন মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।
পরিদর্শনের সময় মন্ত্রীর সঙ্গে তথ্যমন্ত্রী হাছান মাহমুদ, সংসদ সদস্য মোছলেম উদ্দিন আহমেদ, সিটি মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীন আহমেদও ছিলেন।
তবে সেখানে উপস্থিত গণমাধ্যমকর্মীদের মন্ত্রীর পরিদর্শনের সময় ভেতরে ঢুকতে দেননি নিরাপত্তা রক্ষীরা। এ নিয়ে গণমাধ্যম কর্মীরা সেখানে ক্ষোভ প্রকাশ করেন। পরিদর্শন শেষে বেরিয়ে যাবার সময় মূল ফটকে মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের সাংবাদিকদের মুখোমুখি হন।