Saturday 28 September 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

করোনা শনাক্তের রাত না পেরোতেই বাজারে উত্তাপ


৯ মার্চ ২০২০ ১১:৪৬

ঢাকা: বাংলাদেশে করোনাভাইরাসজনিত রোগ কোভিড-১৯ এ আক্রান্ত রোগী পাওয়া গেছে এমন ঘোষণার পর রাত পেরোতেই বেড়েছে নিত্য প্রয়োজনীয় বিভিন্ন জিনিসপত্রের দাম। দাম বাড়ার কারণ হিসেবে বিক্রেতারা বলছেন, হঠাৎ ক্রেতাদের বেশি চাপ হওয়ায় জিনিসপত্রের সংকট দেখা দিয়েছে। তবে ক্রেতাদের দাবি, ব্যবসায়ীরা কারসাজি করছেন।

সোমবার ( ৯ মার্চ) সকালে রাজধানীর পল্টন, তোপখানা, কাকরাইল ও শান্তিনগর বাজার ঘুরে এই চিত্র দেখা গেল।

বিজ্ঞাপন

রোববার (৮ মার্চ) বিকেলে বাংলাদেশে তিনজন করোনা রোগী সনাক্ত হওয়ার ঘোষণা দেওয়া হয়। এরপরই ওষুধের দোকানগুলোতে মাস্ক, জীবানুনাশক তরল যেমন হেক্সাসল, হ্যান্ড স্যানিটাইজার ইত্যাদি কিনতে ক্রেতাদের উপচে পড়া ভিড় দেখা যায়। এর ধারাবাহিকতা ছিল সোমবার সকালেও।

পল্টন, তোপখানা, কাকরাইল, শান্তিনগরসহ আশপাশের এলাকার একাধিক ওষুধ বিক্রির দোকানে গিয়ে দেখা যায়, অধিকাংশ দোকানেই মাস্ক নেই। অনেকে সেটা বড় করে লিখে ঝুলিয়ে দিয়েছেন। নেই জীবানুনাশক স্যানিটাইজারও। বেশিরভাগ দোকান থেকে ক্রেতাদের খালি হাতে ফিরে যেতে দেখা গেছে।

পল্টনের আব্দুল্লাহ ফার্মেসীর সত্ত্বাধিকারী সাইফ ইমন সারাবাংলাকে বলেন, ‘গতকাল সন্ধ্যায় মাস্ক, হেক্সিসল ও হ্যান্ড স্যানিটাইজার শেষ হয়ে গেছে। কিছু স্টক করে রাখলেও সেগুলো কয়েক ঘণ্টার ব্যবধানে শেষ হয়ে যায়। এখন ক্রেতারা আসছেন আর খালি হাতে ফিরে যাচ্ছেন। তাই মেডিসিন কোম্পানির গাড়ি না আসলে এগুলোর সংকট কাটবে না। তবে কোম্পানিগুলোও যদি সংকট দেখায় তাহলে দুর্ভোগ দেখা দিতে পারে।’

দোকানটিতে কথা হয় বেসরকারি একটি প্রতিষ্ঠানে কর্মরত রাশেদ আমিনের সঙ্গে। তিনি জানান, হ্যান্ড স্যানিটাইজার কিনতে এসেছিলেন। কিন্তু পাচ্ছেন না। আশপাশের কোনো দোকানেই পাচ্ছেন না।

বিজ্ঞাপন

অন্যদিকে কাঁচাবাজার ঘুরে দেখা গেছে, কাঁচা মরিচ, ব্রয়লার মুরগি, ফার্মের ডিম, লেবু, চায়না আদা, আমদানি করা রসুন, পাকিস্তানি কক প্রজাতির মুরগির দাম সোমবারের চেয়ে বেড়েছে। প্রায় সবকিছুর দামই বেড়েছে ৫ থেকে ২০ টাকা।

এসব বাজারে কাঁচামরিচ কেজি প্রতি বিক্রি হচ্ছে ৭০ টাকা। যা গতকাল ছিলো ৬০ টাকা। ব্রয়লার মুরগি কেজি বিক্রি হচ্ছে ১৩৫ টাকা যা গতকাল ছিলো ১৩০ টাকা।

তোপখানা রোডের মুরগি বিক্রেতা হাশেম আলী বলেন, হঠাৎ করে মুরগির দাম বেড়েছে। ফার্মগুলোতে মুরগির সংকট রয়েছে বলে জানানো হচ্ছে।

এদিকে ফার্মের ডিমে একদিনের ব্যবধানে ডজন প্রতি বেড়েছে ১০ টাকা। গতকাল ৯০ টাকা বিক্রি হলেও আজ  বাজারে ১০০ টাকা। লেবু হালি ১৫ টাকা বেড়ে ৮৫ টাকা। চায়না আদা ২০ টাকা বেড়ে বিক্রি হচ্ছে ১২০ টাকা। আমদানি করা রসুনেরও কেজিতে ১০ টাকা বেড়েছে।

শান্তিনগর কাঁচাবাজারের খুচরা ব্যবসায়ী আল আমিন সারাবাংলাকে বলেন, জিনিসপত্রের দাম বাড়লে তারা আর কি করবেন? কাওরানবাজারে সকালে গিয়ে অধিকাংশ পণ্য পাননি। আর যা পেয়েছেন সেগুলো বেশি দাম দিয়ে কিনতে হয়েছে। সুতরাং তাদেরকে বেশি দামেই বিক্রি করতে হবে। ক্ষোভ প্রকাশ করে তিনি বলেন, ‘লোকসান করে তো আর ব্যবসা করা যাবে না।’

তবে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগী পাওয়া গেলেও এ নিয়ে আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই বলে মনে করছেন আইইডিসিআর পরিচালক অধ্যাপক ডা. মীরজাদী সেব্রিনা ফ্লোরা। তিনি সবাইকে সচেতন হওয়ার জন্য এবং বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার নির্দেশনাগুলো অনুসরণ করার আহ্বান জানান। তিনি বলেন, ‘প্রত্যেককে এখনই মাস্ক পরে ঘুরতে হবে, এমন পরিস্থিতি হয়নি। তবে সবাইকে সতর্ক থাকতে হবে।’

ডা. ফ্লোরা বলেন, ‘এই ভাইরাস যেন অন্যদের মধ্যে ছড়িয়ে না পড়ে, আমরা সে ব্যবস্থা নিতে পারব বলে আশাবাদী। এ বিষয়ে আমরা গণমাধ্যমের সহযোগিতা কামনা করছি। আমরা মনে করছি না, এই ভাইরাস সারাদেশে ছড়িয়ে পড়তে পারে।’

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থাও বলছে, কোভিড-১৯-এর লক্ষণ (বিশেষ করে কাশি) দেখা দিলেই কেবল মাস্ক পরতে হবে। এছাড়া কোভিড-১৯ থাকতে পারে, এমন কারও সংস্পর্শে থাকলেও মাস্ক পরা জরুরি। ডিসপোজাল ফেস মাস্কগুলো একবারের বেশি ব্যবহার করা যাবে না। অসুস্থ না হলে বা অসুস্থ কারও দেখাশোনার দায়িত্বে না থাকলে মাস্কের ব্যবহার অপ্রয়োজনীয়।

করোনাভাইরাস বাজারে করোনাভাইরাসের প্রভাব বাজারে প্রভাব

বিজ্ঞাপন
সর্বশেষ

ঢাকার পথে প্রধান উপদেষ্টা
২৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ১১:৩৩

সম্পর্কিত খবর