মাস্ক নিয়ে যেন ব্যবসা না হয়, খেয়াল রাখতে বললেন হাইকোর্ট
৯ মার্চ ২০২০ ১৫:২৪
ঢাকা: করোনাভাইরাসকে কেন্দ্র করে পেঁয়াজের মতো মাস্ক নিয়ে যাতে ব্যবসা না হয়, সেটি খেয়াল রাখতে বলেছেন হাইকোর্ট। দেশে যেন কেউ মাস্কসহ প্রয়োজনীয় সরঞ্জামের দাম বেশি না নিতে পারে এবং মজুদ করতে না পারে সে জন্য মোবাইল কোর্ট পরিচালনার কথা বলা হয়েছে।
সোমবার (৯ মার্চ) বিচারপতি এফআরএম নাজমুল আহাসান ও বিচারপতি কে এম কামরুল কাদেরের হাইকোর্ট বেঞ্চ এসব নির্দেশনা দেন। আদালতের নির্দেশে স্বাস্থ্য অধিদফতরের প্রতিবেদন দাখিল করেন ওই কোর্টের ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এবিএম আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ বাশার।
প্রতিবেদন দেখে আদালত বলেন, ‘করোনাভাইরাস ছড়ানোর পর মাস্ক ব্যবহারের কথা বলা হচ্ছে। এখন মানুষের মধ্যে একটা সচেতনতাও তৈরি হয়েছে। সে সুযোগে এটা নিয়ে বাজারে পেঁয়াজের মতো কোনো ধরনের ব্যবসা হয় কিনা, সেটা খেয়াল রাখতে হবে। প্রয়োজনে মোবাইল কোর্ট ব্যবহার করতে হবে। কেউ যেন বেশি দাম না নিতে পারে, মজুদ না করতে পারে।’
এ সময় আদালতে থাকা সিনিয়র আইনজীবী মওদুদ আহমদ বলেন, ‘এটার ব্যপকতা যে কত তা সরকারও অনুভব করেছেন। কিছু স্টেপ (পদক্ষেপ) ওনারা নিয়েছে। মাস্ক নিয়ে বলবো ১০ টাকার মাস্ক ১২০ টাকা নিচ্ছে। এটা নিয়ে একটা ডাইরেকশন দেন।’
করোনাভাইরাস: মাস্কের চাহিদা আকাশচুম্বী, প্রয়োজন কতটুকু?
তিনি আরও বলেন,‘ সরকার ইচ্ছা করলে মাস্ক ফ্রি দিতে পারেন।’ তখন আদালত বলেন, ‘১০ বা ১৬ কোটি মানুষকে মাস্ক দেওয়ার মতো অবস্থা নেই। একটা হতে পারে, যারা কোনো রকমভাবে সন্দেহের মধ্যে বা আক্রান্ত হয় বা হাসপাতালে যায়, তাদের ব্যবস্থা করা যায় কিনা এটা হয়তো বাস্তব।’
রোগতত্ত্ব, রোগনিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের (আইইডিসিআর) প্রতিদিনকার সংসবাদ সম্মেলন নিয়ে আদালত বলেন, ‘আইইডিসিআর এর একজন দায়িত্বশীল ব্যক্তি প্রেস ব্রিফিং করেন। ওনার বক্তব্য আরও পজিটিভ হওয়া বাঞ্ছনীয়। এটা যেন কোনোভাবে মানুষর মধ্যে আতঙ্ক সৃষ্টি না করে। মানুষ কিভাবে সচেতন হবে এবং কি করা দরকার সে বিষয়গুলো মানুষকে জানানো দরকার। আর সরকার কি পদক্ষেপ নিয়েছেন সেটা জানানো দরকার।’
গণমাধ্যমে সচেতনতা বিষয় প্রচারের বিষয়ে আদালত বলেন, ‘প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়াতে এমন ভাবে সচেতনতামূলক প্রচার করতে হবে যেন মানুষের দৃষ্টিগোচর হয়।’
দেশের মানুষ বিদেশে যাওয়া এবং দেশের নাগরিকসহ বিদেশিদের দেশে আগমনের বিষয়ে আদালত বলেন, ‘আমাদের দেশের অনেকে বিদেশে থাকেন। শ্রমিকরা বিভিন্ন দেশে যায়। তাদের সার্টিফিকেট দেওয়ার দরকার হলে যেন সমস্যা না হয়। সেটি খেয়াল রাখতে হবে। আর যারা বিদেশ থেকে আসবেন তাদের ক্ষেত্রেও সার্টিফিকেট আছে কিনা সেটা দেখতে হবে এয়ারপোর্টগুলোতে। বিষয়টি নজরে রাখলাম। আগামী ৫ এপ্রিল পরবর্তী আদেশের জন্য রাখা হলো।’
এর আগে, চীনের উহান থেকে ছড়িয়ে পড়া করোনাভাইরাস প্রতিরোধে সরকার কী ব্যবস্থা নিয়েছেন তা জানতে চেয়ে গত ৫ মার্চ আদেশ দিয়েছিলেন হাইকোর্ট। আদালতের ওই নির্দেশেই আজ প্রতিবেদন দাখিল করা হয়।