ঢাকা: ‘আমাদের এখনো অনেক দূর যেতে হবে। তাই নারীর ক্ষমতায়ন বা সমতা নিশ্চিত করা জরুরি। এ ক্ষেত্রে আমরা খুব সৌভাব্যবান যে শেখ হাসিনার মতো একজন দক্ষ রাষ্ট্রনায়ক পেয়েছি। তা না হলে বাংলাদেশে নারীর অবস্থা আফগানিস্তানের মতো হতো।’
পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মো. শাহরিয়ার আলম মঙ্গলবার (১০ মার্চ) ‘উইমেন লিডারশিপ ইন মিডিয়া: চ্যালেঞ্জ অ্যান্ড ওয়ে টু ফরোয়ার্ড’ শীর্ষক এক সেমিনারে এমন মন্তব্য করেন। ঢাকায় কর্মরত কূটনৈতিক প্রতিবেদকদের সংগঠন ডি-কাব এবং ঢাকার সুইডিশ মিশনের যৌথ আয়োজনে সেমিনারটি জাতীয় প্রেস ক্লাবে অনুষ্ঠিত হয়।
জাতীয় প্রেস ক্লাবের সাধারণ সম্পাদকের উদাহরণ টেনে পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মো. শাহরিয়ার আলম বলেন, তিনি যখন সাংবাদিকতা শুরু করেন তখন থেকে এখন পর্যন্ত তথ্য পর্যালোচনা করলে সাংবাদিকতা জগতে নারীদের অবস্থান নিয়ে আশা জাগানিয়া কিছু পাওয়া যাবে, যা ইতিবাচক। বাংলাদেশে গত ৫০ বছরে যা ঘটেছে, শিক্ষা, অর্থনীতি, মাতৃ মৃত্যুহার কমানো, টেকসই উন্নয়নসহ অনেক কিছুই বাদ দিলাম। কিন্তু কেবল নারীর ক্ষমতায়নে বাংলাদেশে যে পরিমাণ এগিয়েছে, সে জায়গা থেকে জননেত্রী শেখ হাসিনার অবদান সরিয়ে নিলে ভয়াবহ চিত্র ফুটে উঠবে।
তিনি বলেন, শেখ হাসিনা বাংলাদেশকে নারীর অধিকার আদায়ের জন্য যে জায়গায় নিয়ে এসেছেন বা পৌঁছে দিয়েছেন, আমরা যদি তালেবান শাসিত আফগান্তিানকে নেতিবাচক উদাহরণ হিসেবে বিবেচনা করি, তবে বাংলাদেশ ন্যূনতম পক্ষে সেই অবস্থানেই থাকত।
শাহরিয়ার আলম আরও বলেন, নারীর অধিকার প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে আমরা বৈশ্বিকভাবে অনেক এগিয়ে আছি। কিন্তু আমরা শতভাগ অর্থাৎ পূর্ণ নারীর অধিকার প্রতিষ্ঠা করতে চাই। বৈশ্বিক শ্রম সংস্থার (আইএলও) সর্বশেষ তথ্য হচ্ছে, যে বিশ্বে নারী-পুরুষের মজুরি বৈষম্য হচ্ছে ২১ দশমিক ২ শতাংশ, যেখানে এই পরিসংখ্যান মাত্র ২ দশমিক ২ শতাংশ।
প্রতিমন্ত্রী মো. শাহরিয়ার আলম বলেন, নারীর অধিকার বা সমতার বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে দেখা উচিত। কেননা আমাদের এখনও অনেক দূর যেতে হবে। নারীর সমতা নিশ্চিত না হলে অনেক দূর যাওয়া সম্ভব নয়। কেননা নারীর ক্ষমতা নিশ্চিত না হলে আমরা আজ যেখানে আছি, সেখানে আসতে পারতাম না। সত্যিকার অর্থে আমরা নারী-পুরুষ কোনো ভেদাভেদ রাখতে চাই না। এ বিষয়ের উন্নতির জন্য পুরুষদের সহায়তা বেশি প্রয়োজন।
ইত্তেফাক সম্পাদক তাসমীমা হোসেন বলেন, নারীকে নিজেই নিজের ক্ষমতা বা অধিকার প্রতিষ্ঠা করতে হবে। হাল ছেড়ে দিলে হবে না। তবে একজন নারীকে লড়াই করার জন্য রাষ্ট্রকে সে প্রেক্ষাপট তৈরি করে দিতে হবে। বেইজিং ঘোষণায় কর্মক্ষেত্রে ৫০ শতাংশ নারীদের অবস্থান নিশ্চিত বিষয়ে সবাইকেই এগিয়ে আসতে হবে।
সেমিনারে তথ্যনির্ভর মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন, সাংবাদিক ও গবেষক শামীম আরা শিউলী। ঢাকায় নিযুক্ত সুইডিশ রাষ্ট্রদূত সার্লোটা স্লাইটার, ঢাকায় নিযুক্ত জাতিসংঘের নারী বিষয়ক আবাসিক প্রতিনিধি সকো ইসিকাওয়া সেমিনোরে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন।