আমনে রেকর্ড, অ্যাপে কেনা হবে বোরো ধানও
১১ মার্চ ২০২০ ১৮:৩৫
ঢাকা: এবার আমন মৌসুমে ধান কেনার ক্ষেত্রে রেকর্ড করেছে খাদ্য মন্ত্রণালয়াধীন খাদ্য অধিদপ্তর। আমনে সরাসরি কৃষকের কাছ থেকে ইতিহাসের সর্বোচ্চ পরিমাণ প্রায় ৬ লাখ ২৭ হাজার মেট্রিক টন ধান কেনা হয়েছে।
বুধবার (১১ মার্চ) খাদ্য মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে আমন ধান সংগ্রহ নিয়ে সংবাদ সম্মেলনে খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার এ সব কথা বলেন। এ সময় কৃষিমন্ত্রী ড. আব্দুর রাজ্জাক উপস্থিত ছিলেন।
খাদ্যমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম ৬ লাখ ২৬ হাজার ৯৯১ টন আমন ধান, ৩ লাখ ৩৭ হাজার ৬১৮ টন সিদ্ধ চাল ও ৪৩ হাজার ৯০০ টন আতপ চাল সংগ্রহ করব। এই উদ্দেশ্যকে সামনে রেখেই কাজ শুরু করি।’
খাদ্যমন্ত্রী বলেন, ‘ছোটখাট বিচ্যুতি ছাড়া সর্বপ্রথম কৃষকদের কাছ থেকে সরাসরি প্রায় ৬ লাখ ২৭ হাজার মেট্রিক টন আমন ধান সংগ্রহ করা সম্ভব হয়েছে। খাদ্য ও কৃষি মন্ত্রণালয় সবসময় আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে কাজ করেছে।’
তিনি বলেন, ‘কৃষক বাঁচলে দেশ বাঁচবে। কৃষককে ন্যায্যমূল্য দেওয়ার জন্যই আমাদের এ প্রয়াস। আমরা ধানের লক্ষ্যমাত্রার ৯৯ দশমিক ৯৫ শতাংশ সংগ্রহ করতে সক্ষম হয়েছি। এ ছাড়া সিদ্ধ চাল ৯৯ দশমিক ৯৪ শতাংশ ও আতপ চাল ৯৮ দশমিক ৮৬ শতাংশ অর্জন করা সম্ভব হয়েছে।’
মন্ত্রী আরও বলেন, ‘আমনে লক্ষ্যমাত্রার বিপরীতে ৬ লাখ ২৬ হাজার ৬৫৭ টন ধান, ৩ লাখ ৩৭ হাজার ৪০৭ টন সিদ্ধ চাল ও ৪৩ হাজার ৯০০ টন আতপ চাল সংগ্রহ করেছে খাদ্য অধিদফতর। ধান কেনার ক্ষেত্রে লটারির মাধ্যমে কৃষক নির্বাচন করা হয়েছে। প্রাথমিকভাবে পাইলট প্রকল্পের আওতায় ১৬ টি জেলার ১৬টি উপজেলায় অ্যাপের মাধ্যমে ধান কেনা হয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘আমরা আস্তে আস্তে কৃষককে ন্যায্যমূল্য দেওয়ার উদ্দেশে হয়ত একসময় সবটুকু ধানে চলে যেতে পারি, আমাদের সেই পরিকল্পনা রয়েছে।’
এ ছাড়া আগামী বোরো মৌসুমে অ্যাপের মাধ্যমে কৃষকের কাছ থেকে ৬৪ জেলার একটি করে উপজেলায় ধান ও ১৬ উপজেলায় মিলারদের কাছ থেকে চাল কেনার পরিকল্পনা রয়েছে বলেও মন্ত্রী জানান। তিনি বলেন, ‘প্রাথমিকভাবে পাইলট প্রকল্পের আওতায় আমনে অ্যাপের মাধ্যমে ১৬টি উপজেলার ধান কেনায় সফলতা আসায় আগামী বোরো মৌসুম থেকে এ উদ্যোগ নেওয়া হবে।’
কৃষিমন্ত্রী ড. আব্দুর রাজ্জাক বলেন, ‘ফসল উৎপাদন করে কৃষক যদি লাভ করতে না পারে তবে তার জীবনের প্রয়োজনগুলো কীভাবে মেটাবে! গত বোরোতে কৃষক দাম পায়নি। তখন থেকেই আমরা গভীরভাবে চিন্তা করছিলাম কীভাবে কৃষকের কাছ থেকে সরাসারি ধান কিনে কিছুটা বেনিফিট তাদের দেওয়া যায়। গতবছর বোরো ধান কেনার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছিল। পরিকল্পনা করতে সময় লেগেছিল, তারপরও ভালো সংগ্রহ হয়েছিল। এবার আমনের আগে আমরা কঠিন সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম যে কোনো মূল্যে চাষির কাছ থেকে ধান কিনতে হবে।’
তিরি আরও বলেন, ‘অত্যন্ত আনন্দের কথা যে গত আড়াই/তিন মাস ধরে আমন ধান সংগ্রহ হচ্ছে। ধানের লক্ষ্যমাত্রা বাস্তবায়ন হয়েছে। প্রায় ৬ লাখ ২৭ হাজার টন ধান সংগ্রহ হয়েছে। এটি একটা অসাধারণ অর্জন।’
তিনি বলেন, আমি আশাবাদী আগামী বোরোতেও সফলভাবে চাষীর কাছ থেকে ধান সংগ্রহ করতে পারব।
খাদ্য সচিব ড. মোছাম্মৎ নাজমানারা খানুম বলেন, ‘আমনে পরীক্ষামূলকভাবে ১৬টি জেলায় অ্যাপের মাধ্যমে ৩০ হাজার ১৭০ টন ধান কেনার লক্ষ্যমাত্রা ছিল। সেখানে ২৯ হাজার ৭০১ টন ধান কেনা হয়েছে।’
সংবাদ সম্মেলনে অন্যান্যদের মধ্যে কৃষি সচিব মো. নাসিরুজ্জামান, খাদ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক সরোয়ার মাহমুদসহ অন্যান্য কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।