করোনা প্রতিরোধে স্বাস্থ্য অধিদফতরকে ৫০ কোটি টাকা বরাদ্দ
১১ মার্চ ২০২০ ২২:২০
ঢাকা: করোনাভাইরাস প্রতিরোধে স্বাস্থ্য অধিদফতরকে ৫০ কোটি টাকা অর্থ বরাদ্দ দিয়েছে অর্থ বিভাগ। এর প্রায় ৯০ ভাগ টাকাই চিকিৎসা সরঞ্জাম সরবরাহ খাতে ব্যয় করার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। বাকি টাকা ব্যয় করতে হবে কেমিক্যাল রি-এজেন্ট কেনা ও সরবরাহ এবং জনসচেতনতা প্রকাশনা খাতে।
বুধবার (১১ মার্চ) ৫০ কোটি টাকা বরাদ্দ দিয়ে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে চিঠি দিয়েছে অর্থ বিভাগ। এর আগে করোনাভাইরাস মোকাবিলায় বরাদ্দ চেয়ে গত ৫ মার্চ অর্থ বিভাগকে চিঠি দিয়েছিল স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। তবে তাদের চাহিদা ছিল ১০০ কোটি টাকা।
স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের জন্য বরাদ্দ নিশ্চিত করে অর্থ বিভাগের উপসচিব ড . মোহাম্মদ আবু ইউছুফের সই করা চিঠিতে বলা হয়েছে, স্বাস্থ্য সেবা বিভাগ থেকে করোনাভাইরাস প্রতিরাধ ও কোভিড-১৯-এ আক্রান্ত রোগীদের চিকিৎসার জন্য অর্থ বরাদ্দ চাওয়া হয়েছিল। তাদের চাহিদার পরিপ্রেক্ষিতে অর্থ বিভাগের অপ্রত্যাশিত ব্যয় ব্যবস্থাপনা খাত থেকে চলতি ২০১৯-২০২০ অর্থবছরের সংশোধিত বাজেটে স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের অনুকূলে সচিবালয় অংশে সাধারণ থোক বরাদ্দ খাতে ৫০ কোটি টাকা বরাদ্দ দেওয়া হলো। স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের অধীন স্বাস্থ্য অধিদফতরের অনুকূলে এ অর্থ বরাদ্দ দেওয়া হয়।
অর্থ বিভাগের চিঠিতে বলা হয়েছে, বরাদ্দের অর্থ থেকে ৪৫ কোটি ৫১ লাখ ৭৫ হাজার টাকা ব্যয় করতে হবে চিকিৎসা ও শল্য চিকিৎসা সরঞ্জাম সরবরাহের জন্য। এছাড়া কেমিক্যাল রি-এজেন্ট খাতে ব্যয় করতে হবে ২ কোটি ৫০ হাজার টাকা। আর জনসচেতনায় প্রকাশনা কাজে ব্যয় করতে হবে ১ কোটি ৯৮ লাখ ২৫ হাজার টাকা।
বরাদ্দের অর্থ ব্যয়ে কিছু শর্তও জুড়ে দেওয়া হয়েছে। বলা হয়েছে, অর্থ ব্যয়ের ক্ষেত্রে পাবলিক প্রকিউরমেন্ট অ্যাক্ট-২০০৬ ও পাবলিক প্রকিউরমেন্ট রুলস-২০০৮ অনুসরণ করতে হবে এবং সরকারি আর্থিক বিধিবিধান যথাযথভাবে পালন করতে হবে। এ অর্থ প্রস্তাবিত খাত (করোনাভাইরাস বা কোভিড-১৯) ছাড়া অন্য কোনো খাতে ব্যয় করা যাবে না।
চিঠিতে আরও বলা হয়েছে, চলতি ২০১৯-২০২০ অর্থবছরের সংশোধিত বাজেটে সংশ্লিষ্ট খাতে এ অর্থ সমন্বয় করতে হবে। এ খাতের অর্থ অন্য খাতে পুনঃউপযোজন বা স্থানান্তর করা যাবে না। বরাদ্দ দেওয়া অর্থের যেকোনো পরিমাণ ব্যয় করা না হলে তা ৩০ জুনের মধ্যে সমর্পণ করতে হবে। এছাড়া অর্থ ব্যয়ের ১০ দিনের মধ্যে কোন কোন খাতে অর্থ ব্যয় হয়েছে, তা অর্থ বিভাগকে বিস্তারিত আকারে জানাতে হবে।
এর আগে, করোনাভাইরাস মোকাবিলায় বরাদ্দ চেয়ে অর্থ মন্ত্রণালয়ের চিঠি পাঠানো হয় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় থেকে। গত ৫ মার্চ স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের সিনিয়র সহকারী সচিব সুশীল কুমার পালের সই করা চিঠিতে বলা হয়, স্বাস্থ্য বিভাগ করোনাভাইরাস প্রতিরোধে সচেতনতা বাড়াতে ও কোভিড-১৯-এর চিকিৎসায় বিভিন্ন পদক্ষেপ নিয়েছে। স্থানীয় সংসদ সদস্য ও জেলা/উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যানকে উপদেষ্টা করে দু’টি কমিটি গঠন করা হয়েছে। এই রোগে আক্রান্ত ব্যক্তিকে নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে রাখতে হয়। এ জন্য সিসিইউ, আইসিইউ, আইসোলেশন ওয়ার্ড চালু, সহায়ক স্বাস্থ্যসেবা (সাপোর্ট কেয়ার), করোনাভাইরাস পরীক্ষার জন্য কিট এবং বিভিন্ন যন্ত্রপাতি কেনার পদক্ষেপও নেওয়া হয়েছে।
চিঠিতে আরও বলা হয়, দেশের সব জেলা বা জেনারেল হাসপাতালসহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ও বিশেষায়িত হাসপাতালে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত মানুষের জন্য চিকিৎসা সুবিধা স্থাপন বা সম্প্রসারণ করা প্রয়োজন। এ লক্ষ্যে চলতি (২০১৯-২০) অর্থবছরের সংশোধিত বাজেটে স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের সচিবালয় অংশে সাধারণ থোক বরাদ্দ খাতে ১০০ কোটি টাকা বরাদ্দ প্রয়োজন।