হুন্ডির মাধ্যমে টাকা লেনদেন করতেন পাপিয়া
১৩ মার্চ ২০২০ ১৭:১৪
ঢাকা: যুব মহিলা লীগের বহিষ্কৃত নেত্রী শামীমা নুর পাপিয়া-সুমন চৌধুরী দম্পতি বিদেশে বেশির ভাগ অর্থপাচার করতেন হ্যান্ড লেনদেন বা হুন্ডির মাধ্যমে। তারা ব্যাংকের মাধ্যমে খুবই সামান্য পরিমাণ টাকা পাঠিয়েছে বলে জানিয়েছে সিআইডি।
পাপিয়া দম্পতির অর্থপাচার মামলার বিষয়টি অনুসন্ধান করছে ক্রিমিনাল ইনভেস্টিগেশন ডিপার্টমেন্ট (সিআইডি)। অনুসন্ধান করতে গিয়ে সিআইডি অর্থপাচারের বিষয়ে বেশকিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পেয়েছে। যা যাচাই-বাছাইয়ের কাজ চলছে।
উপ-মহাপরিদর্শক (ডিআইজি) ইমতিয়াজ আহমেদ সারাবাংলাকে বলেন, ‘পাপিয়া দম্পতির অর্থপাচার মামলার বিষয়ে অনুসন্ধান চলমান রয়েছে। নিবিড়ভাবে তদন্ত কাজ চলছে। বেশকিছু আলামত হাতে এসেছে। তাতে এখন পর্যন্ত বেশকিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পেয়েছি আমরা। সেগুলো যাচাই-বাছাই চলছে।’
আরেক প্রশ্নের জবাবে ডিআইজি বলেন, ‘এখন পর্যন্ত পাপিয়ার সঙ্গে যাদের নাম এসেছে তাতে তার স্বামী সুমনের সম্পৃক্ততা রয়েছে। আরও কারা রয়েছে সে বিষয়ে তদন্ত শেষে বলা যাবে।’
সিআইডি সূত্র জানায়, পাপিয়ার বিষয়ে অনুসন্ধানের শুরুতে বাংলাদেশ ব্যাংকের মাধ্যমে তাদের ব্যাংক অ্যাকাউন্টের তথ্য চাওয়া হয়েছে। অ্যাকাউন্টগুলো জব্দ করতেও বলা হয়েছে।
প্রাথমিক তথ্যমতে, ব্যাংক জানিয়েছে অ্যাকাউন্টে নগদ টাকা খুব বেশি নেই। বেশির ভাগ টাকাই হাতে হাতে লেনদেন হয়েছে। তার মানে হুন্ডির মাধ্যমে লেনদেন হয়েছে। পাপিয়া ও তার স্বামী সুমন চৌধুরী বিদেশে টাকা পাচারের জন্য অন্যকোনো মাধ্যমের কাছে সরাসরি টাকা পরিশোধ করেছেন।
হুন্ডির মাধ্যমে টাকা লেনদেন হয়েছে এর আইনগত ভিত্তি কিভাবে প্রমাণ করবেন জানতে চাইলে সিআইডির একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা সারাবাংলাকে বলেন, ‘এরই মধ্যে যাদের কাছে টাকা পরিশোধ করেছেন তাদের বেশ কয়েকজনের নাম এসেছে। ওইসব তথ্য প্রমাণ আমরা তদন্তের আওতায় নিয়ে আসা হবে।’
পাপিয়া এর আগে থাইল্যান্ডে রাশিয়ান মডেলের মাধ্যমে টাকা পাচার করেছিলেন, এমন তথ্য বিভিন্ন গোয়্ন্দা সংস্থার বরাত দিয়ে গণমাধ্যমে প্রকাশ পায়। এরপর দুদক ও সিআইডি অর্থ পাচারের বিষয়ে অনুসন্ধানে নামে।
আরেক প্রশ্নের জবাবে সিআইডি কর্মকর্তা বলেন, ‘দেশেই পাপিয়া দম্পতির যে অবৈধ সম্পত্তি রয়েছে, তাতেও তাদের দীর্ঘ মেয়াদী শাস্তি হতে পারে।’
গত ২২ ফেব্রুয়ারি হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে জাল মুদ্রা, ইয়াবা ও নগদ দুই লাখ টাকাসহ পাপিয়া, তার স্বামী সুমন চৌধুরী, সহযোগী সাব্বির ও শেখ তায়্যিবাকে গ্রেফতার করে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব)।
এরপর তাদের নিয়ে অভিযান চালিয়ে রাজধানীর ফার্মগেটের দুই ফ্লাট থেকে নগদ ৫৮ লাখ টাকা, বৈদেশিক মুদ্রা, ৭ রাউন্ড গুলিসহ বিদেশি পিস্তল ও মদ উদ্ধার করে।
পাপিয়াদের নামে বিমানবন্দর থানায় একটি ও শেরেবাংলা নগর থানায় দুইটি মামলা করে। তিন মামলায় ১৫ দিনের রিমান্ডে পাপিয়াসহ চারজনকে জিজ্ঞাসাবাদের অনুমতি পায় র্যাব। এ কারণে তারা এখন র্যাব-১ এর হেফাজতে রয়েছে।
এর আগে, ১৫ দিনের রিমান্ডে নিয়ে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করে।
আরও পড়ুন
পাপিয়ার মামলা তদন্ত করবে র্যাব
পাপিয়া দম্পতির তথ্য চেয়ে ৫৯ ব্যাংকে দুদকের চিঠি
পাপিয়াকাণ্ডে আমরা বিব্রত নই: ওবায়দুল কাদের
পাপিয়ার তথ্য জানতে ওয়েস্টিন হোটেলকে দুদকের চিঠি
শুধু পাপিয়া নয়, নেপথ্যে যারা আছেন তারাও নজরদারিতে: কাদের
এমপি হতে চেয়েছিলেন পাপিয়া, খরচ করেছেন ১০ কোটি টাকা
‘পাপিয়ার সঙ্গে জড়িতদের আইনের আওতায় আনা হবে’
পাপিয়ার ‘প্রতারণা’, মুখ খুললেন ‘নির্যাতিত’ ব্যবসায়ী