Thursday 21 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

চসিকে ভোটের দিন খোলা থাকবে অফিস, চলবে যান


১৪ মার্চ ২০২০ ১৪:১৮

চট্টগ্রাম ব্যুরো: প্রচলিত বিধি ভেঙে এই প্রথমবারের মতো কোনো ভোটের দিন কোনো এলাকায় অফিস-আদালত ও কল-কারখানা খোলা রাখা এবং যানচলাচল চালু রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। আগামী ২৯ মার্চ অনুষ্ঠেয় চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন নির্বাচন (চসিক) এই সিদ্ধান্ত বাস্তবায়িত হবে। তবে ইসি’র সিদ্ধান্ত অনুযায়ী অফিস-আদালত ও কল-কারখানা খোলা থাকবে অর্ধদিবস, আর যানবাহন চলাচল হবে সীমিত আকারে।

বিজ্ঞাপন

শনিবার (১৪ মার্চ) চট্টগ্রাম সার্কিট হাউজ মিলনায়তনে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন নির্বাচন নিয়ে আইনশৃঙ্খলা সংক্রান্ত মতবিনিময় সভা শেষে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কে এম নুরুল হুদা সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান।

সিইসি বলেন, ভোটের দিন যানবাহন চলাচল বন্ধ থাকলে দূর-দূরান্ত থেকে ভোটাররা ভোটকেন্দ্রে আসতে পারেন না। অনেকে প্রতিবাদস্বরূপ ভোটকেন্দ্রেই আসেন না। সে কারণে আমরা চিন্তা করেছি, ভোটের দিন সীমিত আকারে যানবাহন চালু রাখব। তবে যানচলাচল পুরোপুরি উন্মুক্ত হবে না। আমরা সীমিত আকারে যানচলাচল চালু রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।

সিইসি জানান, সরকারি-বেসরকারি অফিস-আদালত ও কল-কারখানাগুলো ভোটের দিন দুপুর ১২টা পর্যন্ত চালু রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে কমিশন।

সিইসি বলেন, ‘২৬ থেকে ২৯ মার্চ টানা কয়েকদিন বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। নির্বাচনের দিনও বন্ধ থাকলে চার-পাঁচদিনের বন্ধের ফাঁদে পড়ে যাচ্ছে। এ কারণে নির্বাচনের দিনে অফিস অর্ধবেলা চালু থাকবে। বিকালের সময়ে বন্ধ থাকবে।’

যানবাহন চলাচলের বিষয়ে চট্টগ্রামের পুলিশ কমিশনার ও জেলা প্রশাসক রিটার্নিং কর্মকর্তার সাথে আলোচনা করে বাস মালিক-শ্রমিক নেতৃবৃন্দের সাথে কথা বলে ঠিক করবেন বলেও জানান তিনি।

করোনা ভাইরাস নিয়ে সৃষ্ট পরিস্থিতিতে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের নির্বাচন পেছানোর কোনো চিন্তা নির্বাচন কমিশনের নেই বলেও জানিয়েছেন সিইসি।

তিনি বলেন, ‘করোনা ভাইরাস নিয়ে এখনো পর্যন্ত যে পরিস্থিতি আছে, দুর্যোগপূর্ণ অবস্থা তো সরকার ঘোষণা করেনি। নির্বাচন বন্ধ করার কোনো পরিস্থিতি আসে নাই। জাতীয় পর্যায়ে সিরিয়াস পরিস্থিতি হলে দেখা যাবে। নির্বাচনের প্রস্তুতি নেয়ার পর অন্য কোন সিদ্ধান্তে যেতে চাচ্ছি না এখনই।’

বিজ্ঞাপন

নিজ দায়িত্বে কেন্দ্রে যেতে হবে এজেন্টদের

এর আগে, আইনশৃঙ্খলা সংক্রান্ত মতবিনিময় সভায় সিইসি ভোটের দিন প্রার্থীর এজেন্টদের নিজ দায়িত্বে ভোটকেন্দ্রে যাওয়ার আহ্বান জানান। কেন্দ্রে ঢোকার পর কেউ যেন এজেন্টদের বের করে না দেয়, সেটা দেখার জন্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে নির্দেশ দিয়েছেন তিনি।

সিইসি নুরুল হুদা বলেন, ‘নির্বাচনের ক্ষেত্রে কয়েকটি অভিযোগ আমাদের কাছে আসে। প্রথম অভিযোগ যেটা ব্যাপকভাবে আসে সেটা হচ্ছে পোলিং এজেন্টের ক্ষেত্রে। পোলিং এজেন্ট ভোটকেন্দ্রে যেতে পারে না, তাদের বের করে দেওয়া হয়— এমন অভিযোগ আমরা পাই। এই অভিযোগগুলো আমরা বিভিন্নভাবে পর্যালোচনা করে জানতে চাই, এগুলো সঠিক কি না। কারণ পোলিং এজেন্ট হচ্ছে নির্বাচনে যারা প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন, তাদের সবচেয়ে নির্ভরশীল ব্যক্তি। বুথে কোনো অনিয়ম হলে প্রতিরোধের ক্ষমতা তাদের দেওয়া থাকে। সেই এজেন্টদের নিজ দায়িত্বে নির্বাচন কেন্দ্রে আসতে হবে।’

ম্যাজিস্ট্রেট-পুলিশ ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘যখন একজন এজেন্ট নির্বাচন কেন্দ্রে যাবেন, তার নিরাপত্তার দায়িত্ব আপনাদের নিতে হবে। কেন্দ্রে যেতে না দেওয়া কিংবা কেন্দ্র থেকে বের করে দেওয়ার অভিযোগগুলোর ক্ষেত্রে আমরা দেখি, অধিকাংশ কেন্দ্রে এজেন্টই যায়নি। কেন্দ্রে যদি এজেন্ট না যায়, তাহলে আপনাদের-আমাদের কিছু করার থাকে না।’

‘প্রার্থীদের প্রতি অনুরোধ, যোগ্য এজেন্ট কেন্দ্রে পাঠাবেন। এটা সুষ্ঠুভাবে নির্বাচন পরিচালনার জন্য আমাদের দরকার। এজেন্ট যাওয়া-না যাওয়া— সেটা প্রার্থীদের ও এজেন্টদের বিষয়। ভেতরে এজেন্ট গেলে বের করে দেওয়ার অভিযোগ থাকে। কিন্তু গত দু’বছরে এমন একটা অভিযোগও নেই যে কোনো এজেন্ট বলেছে, আমি ভেতরে ঢোকার পর আমাকে জোর করে বের দেওয়া হয়েছে। এক্ষেত্রে কঠোর আইনি ব্যবস্থা আছে এবং অভিযোগ প্রমাণ করতে হবে। বলতে হবে, কে কোথায় বের করে দিয়েছে কিংবা নির্বাচন কেন্দ্রে যেতে বাধা দিয়েছে কারা? আমরা এটা সিরিয়াসলি চাই যে এজেন্টরা কেন্দ্রে সুষ্ঠুভাবে দায়িত্ব পালন করুক,’— বলেন সিইসি।

ভোটারদের ভোট দিতে আসার অনুরোধ করে নুরুল হুদা বলেন, ‘আপনারা নির্দ্বিধায় কেন্দ্রে আসবেন, ভোট দেবেন, যাকে ইচ্ছা তাকে ভোট দেবেন। এখানে আপনাদের কোনো বাধা দেওয়া হবে না। ইভিএমের মাধ্যমে একজন ভোটার একবার ভোট দিলে আরেকবার দিতে পারবেন না। ইভিএম মেশিন তাকে গ্রহণ করবে না। জাল ভোট দেওয়ার কোনো সুযোগ নেই।’

সুষ্ঠু অবাধ নির্বাচনের জন্য সবার সহযোগিতা কামনা করে তিনি বলেন, ‘নির্বাহী ও বিচার বিভাগের কর্মকর্তাদের কোনো স্বার্থ নেই। তারা অবাধ নির্বাচনের পক্ষপাতী। অতীতেও আপনাদের সহযোগিতার কথা আমরা মনে রেখেছি। আশা করছি, ভবিষ্যতেও পাব।’

সিইসি’র স্বাগত বক্তব্যের পর রুদ্ধদ্বার কক্ষে সভা শুরু হয়। চট্টগ্রামের বিভাগীয় কমিশনার এ বি এম আজাদের সভাপতিত্বে সভায় সিএমপি কমিশনার মো. মাহাবুবর রহমান, চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ ইলিয়াছ হোসেনসহ প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

কে এম নুরুল হুদা চট্টগ্রাম সিটি নির্বাচন চসিক নির্বাচন ভোটের দিন অফিস খোলা ভোটের দিন যানবাহন চালু সিইসি

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর