Friday 22 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

সাবেক ভিপিদের চোখে সর্বশেষ ডাকসু নির্বাচন


১৫ মার্চ ২০২০ ০৮:১৫

দীর্ঘ ২৮ বছরের বিরতি শেষে গত বছরের ১১ মার্চ অনুষ্ঠিত হয়েছিল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচন। সেই নির্বাচনের পর পেরিয়ে গেছে একবছর। অচলায়তন ভেঙে রাজনীতির সূতিকাগার হিসেবে পরিচিত ডাকসু সচল হলেও একবছরের মেয়াদে প্রত্যাশা আর প্রাপ্তিতে রয়েছে বড় ফারাক। তারপরও আরও অনেকের মতোই ডাকসু নির্বাচন মাঠে গড়ানোকেই ইতিবাচক হিসেবে দেখতে চান ডাকসু’র সাবেক দুই সহসভাপতি (ভিপি) মাহফুজা খানম ও মাহমুদুর রহমান মান্না। তবে এ নির্বাচন কেবল নয়, সামগ্রিকভাবে ডাকসু নিয়েই কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি ডাকসুর আরেক সাবেক ভিপি মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম।

বিজ্ঞাপন

১৯৬৬-৬৭ মেয়াদে ডাকসুর ভিপি ছিলেন মাহফুজা খানম। ২৮ বছর পর গত বছর মার্চ মাসে অনুষ্ঠিত নির্বাচনকে তিনি ‘শুভ সূচনা’ বলে আখ্যায়িত করেছেন।

মাহফুজা খানম সারাবাংলাকে বলেন, ‘দীর্ঘ ২৮ বছর পর অনুষ্ঠিত হওয়া ডাকসু নির্বাচনকে আমি শুভ সূচনা বলব। নির্বাচনে কিছু ত্রুটি-বিচ্যুতি যদিও ছিল, তারপরও আমি বলব— এই নির্বাচনের মধ্য দিয়ে শুভ একটা সূচনা হয়েছে।’

১৯৭৯ সালে ডাকসুর ভিপি নির্বাচিত হওয়া মাহমুদুর রহমান মান্নাও ওই নির্বাচনকে ইতিবাচক মনে করেন, তবে সেটা ক্যাম্পাসে ক্ষমতাসীন ছাত্রলীগের ‘জবরদখলে’র রাজনীতির বিপরীতে একটি নির্বাচন হওয়ার জন্য।

মান্না সারাবাংলাকে বলেন, ‘সামাজিক ও রাজনৈতিক দৃষ্টি থেকে দেখলে ক্ষমতাসীন ছাত্রলীগের হলে হলে যে জবরদখল ও অন্যায়, তার বিরুদ্ধে একটি শক্ত আঘাত ছিল এই নির্বাচন।’

ডাকসু নির্বাচনের দিন বাংলাদেশ-কুয়েত মৈত্রী হলে সিল মারা ব্যালট পেপার পাওয়া যাওয়া, রোকেয়া হল ও সুফিয়া কামাল হলে একই অভিযোগে কিছু সময় ভোটগ্রহণ বন্ধ থাকাসহ বিভিন্ন অভিযোগে অনেকেই ডাকসু নির্বাচন নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন। এ প্রসঙ্গে মাহফুজা খানম বলেন, ‘নির্বাচনের বিষয়ে প্রশাসন যেসব প্রশ্নের সম্মুখীন হয়েছে, তারা চাইলে সহজেই সেগুলো এড়াতে পারতেন। যেমন, রাতের বেলা ব্যালট পেপার, বক্স প্রভৃতি পাঠানোর দরকারই ছিল না।

গত এক বছরে ডাকসুর কার্যক্রমে সমন্বয়হীনতার প্রশ্নটি ঘুরেফিরে বারবার এসেছে। ছাত্র অধিকার পরিষদের প্যানেল থেকে নির্বাচিত ভিপি ও সমাজসেবা সম্পাদকের সঙ্গে ছাত্রলীগের প্যানেল থেকে নির্বাচিত বাকি ২৩ জনের অনৈক্য ডাকসু বিভিন্ন কার্যক্রমে সমন্বয়হীনতার ছাপ ফেলে বলে মনে করেন সংশ্লিষ্টরা।

বিজ্ঞাপন

মাহফুজা খানম মনে করেন, একজোট হয়ে কাজ করতে পারলে বিষয়টি আরও ভালো হতে পারত। তিনি বলেন, ‘ছাত্রলীগের প্যানেল থেকে ২৩ জন ও অন্য প্যানেল থেকে ভিপি ও সমাজসেবা সম্পাদক পদে দু’জন নির্বাচিত হয়েছেন। বিভিন্ন সময় তাদের মধ্যে অনৈক্য দেখা দিয়েছে। তারা যদি কাজ করার ক্ষেত্রে একজোট-একমত হতে পারতেন, তবে বিষয়টি নিঃসন্দেহে আরও ভালো হতো।’

তবে মান্নার দাবি, ছাত্রলীগের প্যানেল থেকে যারা ছিলেন, তারা সমন্বয় করতে চাননি। বরং ভিপির ওপর আক্রমণ চালিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘তারা মূলত সমন্বয়ই করতেই চাননি। ছাত্রলীগের প্যানেল থেকে যারা ছিলেন, তারা ভিপিকে বরং পিটিয়েছে বারবার।’

এদিকে, গত বছরের ডাকসু নির্বাচনের পর ২৩ মার্চ আনুষ্ঠানিকভাবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন নির্বাচিত ২৫ জন প্রতিনিধি। সে হিসাবে চলতি মাসেই ডাকসুর মেয়াদ শেষ হওয়ার কথা। তবু পরবর্তী নির্বাচন নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের দৃশ্যমান কোনো পদক্ষেপ এখনো দেখা যায়নি। তবে ডাকসুর সাবেক ভিপি মাহফুজা খানম চান, ডাকসু নির্বাচনের ধারা যেন বন্ধ না হয়ে যায়। তিনি বলেন, ভালো-মন্দ, ভুল-শুদ্ধ যা-ই হোক— এই প্রবাহ যেন বন্ধ না হয়। প্রতিনিধিদের দেওয়া প্রতিশ্রুতি ও ছাত্রদের দাবি-দাওয়ার কিছু তো অন্তত পূরণ হয়েছে। আমি চাইব, ডাকসু যেন অব্যহত থাকে। একই রকম মত মান্নারও।

এদিকে, সার্বিক ডাকসু বিষয়ে মূল্যায়ন জানতে চাইলে ১৯৭২ সালে ডাকসুর ভিপি নির্বাচিত হওয়া মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি। তিনি এ বিষয়ে ছাত্রদের জিজ্ঞাসা করতে বলেন।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ সহসভাপতি (ভিপি)

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর