বঙ্গবন্ধুকে শ্রদ্ধা জানিয়ে চট্টগ্রাম সেনানিবাসে শোভাযাত্রা
১৭ মার্চ ২০২০ ১১:৪৪
চট্টগ্রাম ব্যুরো: জন্মশতবর্ষে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে শ্রদ্ধা জানিয়ে চট্টগ্রাম সেনানিবাসে হয়ে গেলো বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা। সেনাবাহিনীর ২৪ পদাতিক ডিভিশনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাসহ তিন শতাধিক সেনাসদস্য এতে যোগ দেন।
মঙ্গলবার (১৭ মার্চ) সকালে শোভাযাত্রাটি সেনানিবাসের নিসর্গ চত্বর থেকে বের হয়। শোভাযাত্রী উদ্বোধন করেন সেনাবাহিনীর ২৪ পদাতিক ডিভিশনের জিওসি ও এরিয়া কমান্ডার মেজর জেনারেল এস এম মতিউর রহমান। এ সময় তিনি বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়ার জন্য সেনাসদস্যদের একসঙ্গে কাজ করার আহ্বান জানান।
শোভাযাত্রায় অংশ নেওয়া সেনাসদস্যদের হাতে ছিল বঙ্গবন্ধুর বিভিন্ন বক্তব্যের উদ্ধৃতিসহ তাঁকে নিয়ে লেখা গান-কবিতার অংশবিশেষ নিয়ে বানানো প্ল্যাকার্ড, ফেস্টুন ও ব্যানার। বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে লেখা গান এবং দেশাত্মবোধক সঙ্গীতের সুরে বাদ্যযন্ত্র বাজিয়ে এর তালে তালে এগিয়ে যাওয়া শোভাযাত্রা সেনানিবাসের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে।
এর আগে মুজিববর্ষ উপলক্ষে দেওয়া বক্তব্যে মেজর জেনারেল এস এম মতিউর রহমান বঙ্গবন্ধুর রাজনৈতিক জীবন তুলে ধরে বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১৯৫২ সালে ভাষা আন্দোলনে সক্রিয় ভূমিকা পালন করেন। ১৯৬৩ সালে তিনি আওয়ামী লীগের সভাপতি নির্বাচিত হয়ে পূর্ব পাকিস্তানের স্বায়ত্ত্বশাসনের লক্ষ্যে ছয় দফা ঘোষণা করেন। মুজিবের জনপ্রিয়তায় ভীতসন্ত্রস্ত হয়ে পাকিস্তান সরকার তার বিরুদ্ধে আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলা দায়ের করে এবং প্রবল গণআন্দোলনের মুখে সেই মামলা প্রত্যাহারে বাধ্য হয়।
তিনি বলেন, ‘১৯৭০ সালের সাধারণ নির্বাচনে সাধারণ সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জনের পরও শেখ মুজিবুর রহমানকে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী হতে দেওয়া হয়নি। এরপর ৭ই মার্চের ঐতিহাসিক ভাষণের পর দেশে চলতে থাকে পাকিস্তানবিরোধী আন্দোলন। ক্ষমতা হস্তান্তরের টালবাহনার এক পর্যায়ে ২৬শে মার্চ বঙ্গবন্ধু স্বাধীনতা যুদ্ধের ডাক দেন। ওইদিনই তাকে গ্রেফতার করে পশ্চিম পাকিস্তানে নিয়ে যাওয়া হয়। কিন্তু তার অনুপস্থিতিতে তিনি আরও শক্তিশালী হয়ে দেখা দেন বাঙালির মুক্তিযুদ্ধে। নয় মাসের যুদ্ধ শেষে আসে বাংলাদেশের স্বাধীনতা। দীর্ঘ ১০ মাস কারাবন্দি থাকার পর ১৯৭২ সালের ১০ জানুয়ারি তিনি মুক্তি লাভ করেন এবং পাকিস্তান থেকে দেশে ফিরে আসেন।’
তিনি আরও বলেন, ‘জন্মশতবার্ষিকীর এই ক্ষণটি সারা দেশব্যাপী বিভিন্ন অনুষ্ঠানের মাধ্যমে পালন করা হচ্ছে। এটি বঙ্গবন্ধুর প্রতি শ্রদ্ধা ও কৃতজ্ঞতা প্রকাশে বাঙালি জাতির জন্য অনন্য এক সুযোগ। মুজিববর্ষের এই আয়োজনের মধ্য দিয়ে পরবর্তী প্রজন্ম বঙ্গবন্ধুর জীবন ও কর্ম সম্পর্কে জানবে এবং তার আদর্শে অনুপ্রাণিত হয়ে স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়তে সহযোগিতা করবে।
এদিকে বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষে সেনানিবাসের মূল প্রবেশপথসহ বিভিন্ন স্থাপনায় আলোকসজ্জা করা হয়েছে। বিভিন্ন সড়কে স্থাপন করা হয়েছে মুজিববর্ষের ব্যানার-ফেস্টুন। এছাড়া বঙ্গবন্ধুর জীবনভিত্তিক প্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শনী, বিশেষ দোয়া ও মোনাজাতের আয়োজন করা হয়েছে।
চট্টগ্রাম সেনানিবাসের পাশাপাশি পার্বত্য চট্টগ্রামের গুইমারা, বান্দরবান, খাগড়াছড়ি ও রাঙ্গামাটি রিজিয়ন, বাংলাদেশ মিলিটারি একাডেমি, আর্টিলারি সেন্টার স্কুল অ্যান্ড কলেজ এবং ৩৪ ইঞ্জিনিয়ারিং কনস্ট্রাকশন ব্রিগেডেও বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষে বিভিন্ন অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছে।