করোনার প্রভাবে বহু এয়ারলাইনস দেউলিয়া হওয়ার আশঙ্কা
১৭ মার্চ ২০২০ ১৭:৫০
করোনাভাইরাসের ক্ষতিকর প্রভাব দ্রুতই বিশ্ব অর্থনীতিতে পড়বে বলে আশঙ্কা করছেন বিশেষজ্ঞরা। চীনের হুবাই প্রদেশ থেকে উদ্ভুত এ ভাইরাসটির প্রভাবে ইতিমধ্যে বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম অর্থনীতিতে বড়সড় ধাক্কা লেগেছে। পরে ভাইরাসটি বিশ্বের অন্যান্য বৃহৎ অর্থনীতির দেশগুলোতে ছড়িয়ে পড়ায় ওই দেশগুলোও পড়ছে ক্ষতির মুখে। ভাইরাসের প্রাদুর্ভাবে কলকারখানা ও ছোট-বড় ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানের সক্ষমতা হ্রাসের কারণে উৎপাদনে ধ্বস নামার পাশাপাশি সামগ্রিক ভোগ কমে যাওয়ায় বৈশ্বিক অর্থনীতিতে মন্দার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে।
তবে এভিয়েশন খাত নিয়ে গবেষণা করে এমন সিডনিভিত্তিক কনসাল্ট্যান্সি প্রতিষ্ঠান ‘সিএপিএ- সেন্টর ফর এভিয়েশন’ তাদের এক প্রতিবেদনে জানায়, করোনায় সবচেয়ে বড় ধাক্কাটি লাগবে এয়ারলাইনস খাতে। ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, আগামী মে মাসের শেষ নাগাদ ছোট-বড় কয়েকটি এয়ারলাইনস দেউলিয়া হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে।
করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব বেড়ে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই বেশিরভাগ দেশ পুরোপুরি বা সীমিত আকারে ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে। বেশ কয়েকটি দেশ বন্ধ করে দিয়েছে ভিসা প্রক্রিয়া। ফলে বিভিন্ন রুটে বিমান চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।
সিএপিএ তাদের প্রকাশিত ওই প্রতিবেদনে জানায়, কয়েকটি এয়ারলাইনস দেউলিয়া হওয়ার উচ্চ ঝুঁকি তৈরি হয়েছে। খুব শীঘ্রই বড়সড় ঋণের বোঝা বইতে হবে এসব এয়ারলাইনসগুলোকে। করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবে কারণে বেশ কয়েকটি রুটে বন্ধ হয়ে গেছে বিমান চলাচল।
এতে বলা হয়, এসব এয়ারলাইনসের বহু বিমান গ্রাউন্ডেড করা হয়েছে। এতে এয়ারলাইনসগুলোর নগদ সঞ্জয় দ্রুত হ্রাস পাচ্ছে। ফলে শীঘ্রই এসব এয়ারলাইনস অর্থ ঋণ নেওয়া শুরু করবে।
প্রতিবেদনটিতে সিএপিএ জানায়, এসব এয়ারলাইনসগুলোকে বাঁচাতে দরকার সরকারি সাহায্য। বিভিন্ন দেশের সরকার যদি এয়ারলাইনসগুলোর পাশে দাঁড়ায় তবে অনেকটাই ক্ষতি কাটিয়ে ওঠা সম্ভব হবে।
তবে ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, চীন, যুক্তরাষ্ট্র ও মধ্যপ্রাচ্যের বেশিরভাগ এয়ারলাইনসগুলোতে সরকারি সহযোগিতা থাকায় এসব দেশের প্রতিষ্ঠানগুলো ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে পারবে।
উল্লেখ্য, আমেরিকান এয়ারলাইনস গ্রুপ ইঙ্ক, অস্ট্রেলিয়ার কান্টাস এয়ারওয়েস লিমিটেড তাদের পরিবহণ সক্ষমতার ৬০ থেকে ৯০ শতাংশ কমিয়ে দিয়েছে। এছাড়া সুইডেনের এয়ারলাইন্স গ্রুপ এসএএস এবি তাদের বেশিরভাগ কর্মীদের ছুটি দিয়েছে। ইউরোপে আন্তঃমহাদেশীয় বিমান পরিবহণের জন্য বিখ্যাত ফ্লাইবি এয়ারলাইনস ইতিমধ্যে বড়সড় আর্থিক ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছে বলে জানিয়েছে।
এদিকে, ইন্টারন্যাশনাল এয়ার ট্রান্সপোর্ট অ্যাসোসিয়েশন ইতিমধ্যে তাদের এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, করোনাভাইরাসের কারণে বিশ্বজুড়ে এয়ারলাইনস খাতে ১১৩ বিলিয়ন ডলার ক্ষতি হতে পারে। ভাইরাসটির বিস্তার যত বেশি হবে ক্ষতির আশঙ্কা তত বাড়বে।