Friday 22 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

কিট নয়, কোভিড-১৯ শনাক্তের পদ্ধতি উদ্ভাবন গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের


১৮ মার্চ ২০২০ ২৩:৫৭

ঢাকা: সহজ উপায়ে, সুলভ মূল্যে করোনাভাইরাস পরীক্ষার জন্য নতুন কিট উদ্ভাবন করেছে গণস্বাস্থ্য কেন্দ্র— এমন একটি খবর অনলাইনে ভেসে বেড়াচ্ছে কয়েকদিন ধরে। কিন্তু গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলছেন, তারা করোনাভাইরাস শনাক্তের কিট নয়, বরং এই ভাইরাসের কারণে যে রোগটি হচ্ছে সেটি শনাক্ত করার পদ্ধতি উদ্ভাবন করেছেন।

বুধবার (১৮ মার্চ) বিকেলে মোবাইলে ফোনে সারাবাংলাকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে গণস্বাস্থ্য কেন্দ্র উদ্ভাবিত কোভিড-১৯ সংক্রমণ শনাক্তকরণ পদ্ধতি সম্পর্কে বিস্তারিত বলেন ড. জাফরুল্লাহ চৌধুরী। তিনি বলেন, ‘মূলত ওটা কিট নয়, করোনাভাইরাস সংক্রমণের ফলে কোভিড-১৯ নামে যে রোগে মানুষ আক্রান্ত হচ্ছে— সেটি শনাক্ত করার জন্য আমরা একটি পদ্ধতি আবিষ্কার করেছি। এটি কিট নয়।’

বিজ্ঞাপন

আপনারা যে কিট উদ্ভাবন করেছেন, সেটি সম্পর্কে একটু বলুন— প্রশ্ন শেষ হওয়ার আগেই ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেন, ‘তোমরা ভুল করছ। এটা কিট নয়। এটা একটা পদ্ধতি। অর্থাৎ করোনাভাইরাস সংক্রমণের ফলে কোভিড-১৯ নামে নতুন যে রোগে মানুষ আক্রান্ত হচ্ছে, সেটি নিরূপণ বা শনাক্ত করার জন্য আমারা একটা পদ্ধতি আবিষ্কার করেছি।’

‘ডা. বিজন কুমার শীলের নেতৃত্বে আরও চার জন ডাক্তার মিলে এই পদ্ধতি আবিষ্কার করেছেন। কিট তো অনেক বড় ব্যাপার। একটা কিটের খরচ ৯/১০ হাজার টাকা। আর আমরা যে পদ্ধতি আবিষ্কার করেছি, সেটার খরচ পড়বে ২০০ টাকা। যেকোনো প্যাথোলজিক্যাল ল্যাব বা হাসপাতালে এই পদ্ধতি ব্যবহার করে ৩০০ টাকা খরচে কোভিড-১৯ শনাক্ত করা যাবে,’— বলেন ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী।

কবে নাগাদ এই পদ্ধতি ব্যবহার করা সম্ভব হবে?— এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘গণস্বাস্থ্য কেন্দ্র উদ্ভাবিত এই পদ্ধতিতে কোভিড-১৯ শনাক্ত করার জন্য কিছু উপকরণ ব্যবহার করতে হবে। সেই উপকরণগুলো ব্যবহার করতে হলে ওষুধ প্রশাসনের অনুমোদন লাগবে। গত এক সপ্তাহ ধরে আমরা ওষুধ প্রশাসনের পেছনে ঘুরছি। জুতার তলা ক্ষয় করছি। তাদের জুতা পালিশ করছি। কিন্তু আমলাতান্ত্রিক জটিলতার জন্য অনুমোদন পাচ্ছি না। দেখা যাক, কবে নাগাদ তারা আমাদের অনুমোদন দেয়।’

বিজ্ঞাপন

‘আর অনুমোদন পেলেই তো হবে না। যে কেমিক্যালগুলো এই পদ্ধতির জন্য লাগবে, সেগুলো বাইরে থেকে আমদানি করতে হবে। সুইজারল্যান্ড থেকে একটা কেমিক্যাল আনতে হবে। এর জন্য আমরা আমাদের চাহিদাপত্র পাঠানোর পর তারা আমাদের কেমিক্যাল সরবরাহ করবে। কিন্তু আমরা ওষুধ প্রশাসনের অনুমোদনই তো পাচ্ছি না। কীভাবে কী হবে!,’— বিরক্তির সঙ্গে বলেন ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী।

তিনি বলেন, যে কিটের মাধ্যমে আইইডিসিআর কোভিড-১৯ শনাক্ত করছে, সেটি বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বা চীনের সরবরাহ করা কিট। এটি অত্যন্ত ব্যয়বহুল এবং তা দিয়ে পরীক্ষার জন্যও প্রয়োজন উন্নত ল্যাবরেটরি। কিন্তু আমাদের এই পদ্ধতি অত্যন্ত সুলভ ও সহজলভ্য। এই পদ্ধতিতে দেশের যেকোনো হাসপাতালে কোভিড-১৯ শনাক্ত করা যাবে। একটা জায়গায় ভিড় করতে হবে না। মানুষের মধ্যে যে আতঙ্ক তৈরি হয়েছে, সেটি দূর হবে।’

ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেন, ‘করোনাভাইরাস মোকাবিলার প্রথম চ্যালেঞ্জ হলো লাখ লাখ মানুষকে পরীক্ষার আওতায় আনা। হাতেগোনা কয়েকটি জায়গায় সেটি করা একেবারেই অসম্ভব। গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের আবিষ্কৃত পদ্ধতি ব্যবহার করে যেকোনো ডায়াগনস্টিক সেন্টার থেকে মাত্র ৩শ টাকায় কোভিড-১৯ শনাক্ত করা যাবে।’

তিনি বলেন, ‘ওষুধ প্রশাসন অধিদফতরের অনুমোদন মিললে আগামী ১৫ দিনের মধ্যে নতুন পদ্ধতিতে কোভিড-১৯ শনাক্ত করার কাজ শুরু করতে পারবে গণস্বাস্থ্য কেন্দ্র। আমাদের এই পদ্ধতি অন্যরাও ব্যবহার করতে পারবে। এতে কোনোভাবেই ৩শ টাকার বেশি খরচ পড়বে না। অবশ্য এ ব্যাপারে সরকারকে  কঠোর হতে হবে।’

এ বিষয়ে জানতে চাইলে স্বাস্থ্য অধিদফতরের রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (আইইডিসিআর) পরিচালক অধ্যাপক ডা. মীরজাদি সেব্রিনা ফ্লোরা সারাবাংলাকে বলেন, ‘গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের বিজন কুমার শীল যে পদ্ধতিটি উদ্ভাবন করছেন, সে বিষয়ে আমাদের সঙ্গে আলাপ হয়েছে। পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষে আমরা বিস্তারিত জানাব।’

করোনাভাইরাস করোনাভাইরাস শনাক্ত করোনাভাইরাস শনাক্তের কিট কোভিড-১৯ কোভিড-১৯ শনাক্ত কোভিড-১৯ শনাক্তের পদ্ধতি উদ্ভাবন গণস্বাস্থ্য কেন্দ্র ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী

বিজ্ঞাপন

নামেই শুধু চসিকের হাসপাতাল!
২২ নভেম্বর ২০২৪ ২২:০৬

আরো

সম্পর্কিত খবর