আত্রাই নদীতে প্রাণ ফেরাতে পুরনো ৩ প্রকল্প পুনর্বাসনের উদ্যোগ
১৯ মার্চ ২০২০ ০৭:৫৬
ঢাকা: নাব্য হারিয়েছে নওগাঁ জেলার একসময়কার প্রাণ আত্রাই নদী। একইসঙ্গে নদী ভাঙনের ফলে এলাকার মানুষকেও পোহাতে হচ্ছে দুর্ভোগ। এ পরিস্থিতিতে আত্রাই নদে নাব্য ফিরিয়ে নদীর তীর সংরক্ষণের মাধ্যমে পানি ধারণক্ষমতা বাড়াতে পুরনো তিন প্রকল্প পুনর্বাসনের উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। এর মধ্যে দুইটি প্রকল্প ২৫ বছর ও একটি ১৫ বছর আগে বাস্তবায়িত হয়েছে। প্রকল্প তিনটি পুনর্বাসনের পাশাপাশি নদীর তীর সংরক্ষণ ও ড্রেজিংও করা হবে। তাতে সব মিলিয়ে খরচ ধরা হয়েছে ১৭৯ কোটি ৪৭ লাখ টাকা।
‘নওগাঁ জেলার ধামুরাইহাট, পত্নীতলা ও মহাদেবপুর উপজেলার তিনটি প্রকল্পের পুনর্বাসন এবং আত্রাই নদীর ড্রেজিংসহ তীর সংরক্ষণ’ প্রকল্পটি হাতে নিতে যাচ্ছে পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, এই প্রকল্প বাস্তবায়িত হলে পুরনো প্রকল্পগুলো কার্যকারিতা ফিরে পাবে। এতে বন্যা নিয়ন্ত্রণ, নিষ্কাশন ও সেচ ব্যবস্থার উন্নয়ন হবে। একইসঙ্গে আত্রাই নদী ড্রেজিং, খাল পুনঃখনন ও নদী তীর সংরক্ষণের মাধ্যমে নদী খালে পানি ধারণক্ষমতা বাড়বে। ফলে বসতবাড়ি, রাস্তাঘাট, বাজার, কৃষি জমি, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও অন্যান্য সরকারি-বেসরকারি অবকাঠামো নদী ভাঙন থেকে রক্ষা পাবে।
পরিকল্পনা কমিশনের কৃষি, পানিসম্পদ ও পল্লী প্রতিষ্ঠান বিভাগের সদস্য জাকির হোসেন আকন্দ পরিকল্পনা কমিশনের মতামত দিতে গিয়ে বলেন, প্রকল্পটি বাস্তবায়নের মাধ্যমে প্রকল্প এলাকায় অবস্থিত কৃষি জমিসহ বাজার, রাস্তা-ঘাট এবং সরকারি-বেসরকারি বিভিন্ন স্থাপনা আত্রাই নদীর ভাঙন থেকে রক্ষা করা সম্ভব হবে।
পরিকল্পনা কমিশনের একাধিক কর্মকর্তা সারাবাংলাকে বলেন, প্রকল্পটি প্রস্তাব পাওয়ার পর ২০১৯ সালের ৭ আগস্ট প্রকল্প মূল্যায়ন কমিটির (পিইসি) সভা অনুষ্ঠিত হয়। ওই সভায় দেওয়া সুপারিশগুলো বাস্তবায়ন করে উন্নয়ন প্রকল্প প্রস্তাব (ডিপিপি) পুনর্গঠন করা হয়েছে। ফলে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) পরবর্তী সভায় প্রকল্পটি উপস্থাপনের জন্য প্রস্তুত হয়েছে। অনুমোদন পেলে ২০২২ সালের জুনের মধ্যে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করবে বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড (বাপাউবো)।
পানিসম্পদ মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, আত্রাই নদী ভারত থেকে উৎপত্তি হয়ে নওগাঁ জেলায় বাংলাদেশে ঢুকে সিরাজগঞ্জ জেলায় হুড়াসাগর নদীতে পড়েছে। নওগাঁ জেলায় এর আগে তিনটি প্রকল্পের মধ্যে দুইটি প্রকল্প ১৯৯১ থেকে ১৯৯৫ সালে এবং আরও একটি প্রকল্প ২০০১ থেকে ২০০৬ সালে বাস্তবায়িত হয়েছে। দীর্ঘদিন পুনর্বাসন না থাকায় প্রকল্প তিনটি কার্যকারিতা কমেছে। এছাড়া বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ তীর থেকে ২০-১৫০ মিটারের মধ্যে অবস্থিত। এলাকায় নদী ভাঙনও অব্যাহত থাকায় প্রকল্প এলাকার কৃষি, জমি, বসতবাড়ি, রাস্তাঘাট, বাজার ও সরকারি-বেসরকারি বিভিন্ন অবকাঠামো হুমকির মুখে পড়ে। এসব সমস্যা সমাধানের জন্যই প্রকল্পটির প্রস্তাব করা হয়েছে।
প্রকল্পের মূল কার্যক্রমের মধ্যে রয়েছে— ৪ কিলোমিটার নদী তীর প্রতিরক্ষা, ২৫ কিলোমিটার বাঁধ পুনরাকৃতিকরণ, ৬ কিলোমিটার খাল পুনঃখনন, পাঁচটি রেগুলেটর মেরামত এবং ২৭ কিলোমিটার নদী ড্রেজিং।