চসিক নির্বাচন: করোনা আতঙ্কে প্রার্থীদের গণসংযোগ বন্ধ
১৯ মার্চ ২০২০ ২০:৪৭
চট্টগ্রাম ব্যুরো: করোনাভাইরাসের সংক্রমণ মোকাবিলায় নির্বাচন কমিশনের নিদের্শনা মেনে এলাকায় গিয়ে প্রচারণা স্থগিত করেছেন চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন (চসিক) নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থী এম রেজাউল করিম চৌধুরী। তবে চট্টগ্রাম নগরীর জামালখানে হ্যান্ড স্যানিটাইজার ও মাস্ক বিতরণ করেছেন বিএনপির মেয়র প্রার্থী শাহাদাত হোসেন।
বৃহস্পতিবার (১৯ মার্চ) রেজাউল ও শাহাদাত কেউই নির্বাচনি প্রচারণায় যাননি। এর বাইরে কার্যত কাউন্সিলর প্রার্থীদেরও তেমন প্রচারণা নেই। অধিকাংশই জমায়েত এড়িয়ে প্রচারণার পক্ষে অবস্থান নিয়েছেন।
বুধবার (১৮ মার্চ) নির্বাচন কমিশন প্রার্থীদের গণজমায়েত-সমাবেশ এড়িয়ে প্রচারণার চালানোর পরামর্শ দেয়। এরপর বৃহস্পতিবার বিকেল থেকে নগরীতে প্রার্থীদের গণসংযোগ তেমন চোখে পড়েনি।
আওয়ামী লীগের নির্বাচন পরিচালনা কমিটির চেয়ারম্যান ও দলটির প্রেসিডিয়াম সদস্য ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন বলেন, ‘আপাতত আমরা প্রচার-প্রচারণা থেকে বিরত থাকব। একেবারে বন্ধ নয়, একটু ভিন্ন আঙ্গিকে করব। গ্যাদারিং, র্যালি করব না।’
চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের সহসভাপতি খোরশেদ আলম সুজন সারাবাংলাকে বলেন, ‘আমাদের প্রার্থী আজ (বৃহস্পতিবার) প্রচারণায় যাননি। প্রার্থী গেলেই লোকজন জমে যায়, ভিড় বেশি হয়। যেহেতু নির্বাচন কমিশন জমায়েত এড়ানোর কথা বলছে, সেজন্য আমরা এলাকায় যাচ্ছি না। তবে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে, মোবাইলে অডিও-ভিডিও বার্তার মাধ্যমে কিংবা দুই-তিন জন করে টিম করে বাড়ি বাড়ি গিয়ে লিফলেট বিলি করে প্রচারণা চালাব।’
এর মাঝে বৃহস্পতিবার সকালে চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবে একটি অনুষ্ঠানে দেখা হয় রেজাউল ও শাহাদাতের। পেশায় চিকিৎসক শাহাদাত এসময় রেজাউলকে মাস্ক পরিয়ে দেন।
এদিকে, নগরীর জামালখান এলাকায় চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবের সামনে ডক্টরস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ড্যাব) মাস্ক ও হ্যান্ড স্যানিটাইজার বিতরণ করেছে। বিএনপির মেয়র প্রার্থী শাহাদাত হোসেন এ আয়োজনে প্রধান অতিথি ছিলেন।
এসময় নির্বাচন পেছানোর দাবি জানিয়ে শাহাদাত বলেন, ‘করোনাভাইরাসের প্রভাবে দেশের জনগণের মধ্যে আতঙ্ক বিরাজ করছে। এই পরিস্থিতিতে যদি ভোট হয়, মানুষ ভোটকেন্দ্রে যাবে না। একজন ডাক্তার হিসেবে প্রথমে চাইব মানুষের নিরাপত্তা। মানুষকে নিরাপত্তাহীনতায় রেখে যদি ভোট হয় এবং এর ফলে যদি অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ঘটে, এর দায়ভার সিইসিকে নিতে হবে। মানুষের মাঝে যে ভীতি আছে, সেটাকে বিবেচনায় নিয়ে তাদের নিরাপত্তার স্বার্থে নির্বাচনের তারিখ পরিবর্তন করা হোক।’
জমায়েত তৈরি করে প্রচারণা থেকে বিরত আছেন কাউন্সিলর প্রার্থীরাও। কেউ ঘরে ঘরে গিয়ে লিফলেট বিলি করেছেন। কেউ মাইকে অডিও বার্তার মাধ্যমে ভোট চেয়েছেন। আবার কোনো কোনো প্রার্থী স্যানিটাইজার ও মাস্ক বিতরণ করেছেন প্রচারণার অংশ হিসেবে।
নগরীর ৩২ নম্বর আন্দরকিল্লা ওয়ার্ডের আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্রার্থী জহরলাল হাজারী সারাবাংলাকে বলেন, ‘নির্বাচন কমিশনের নির্দেশনা মেনে আমরা প্রচার চালাচ্ছি। বেশি লোক নিয়ে কোথাও যাচ্ছি না। আমি লিফলেট ও মাস্ক-স্যানিটাইজার বিলি করে প্রচারণা করছি।’
জামালখান-বাগমনিরাম ও লালখান বাজার সংরক্ষিত ওয়ার্ডের বিএনপি সমর্থিত কাউন্সিলর প্রার্থী মনোয়ারা বেগম মণির পক্ষে মাইকে প্রচারণা শোনা গেছে। দক্ষিণ কাট্টলী-হালিশহর সংরক্ষিত ওয়ার্ডের বিএনপি সমর্থিত প্রার্থী জেসমিনা খানম সারাবাংলাকে বলেন, ‘ঘরোয়াভাবে প্রচারণা শুরু করেছি। বড় আকারে গণসংযোগ একপ্রকার বন্ধ করে দিয়েছি। এলাকায় যাচ্ছি, লোকজনের সঙ্গে দেখা হচ্ছে। কথাবার্তা হচ্ছে, এতটুকুই।’